স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নতির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সকল মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রাম থেকে শহরে সর্বত্র বর্জ্য উৎপাদন বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, এ বর্ধিত বর্জ্য নিষ্পত্তি করতে না পারলে দেশের সার্বিক পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দিবে। সেজন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের নেতৃত্বে গৃহস্থলীর বর্জ্য হতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের বর্জ্য নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে যা বাংলাদেশের জন্য এক যুগান্তকারী অর্জন।
তিনি বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার বিভাগের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমিনবাজার ল্যান্ডফিলের ‘বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্লান্ট’ -এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি গ্রহণ বিষয়ক এক সভায় সভাপতিত্বকালে এ কথা বলেন।
সভার আরও উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহম্মদ ইবরাহিম এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলে, ইনসিনারেশন ব্যবস্থা অনুসরণে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে বর্জ্য নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে যাতে পরিবেশ সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন থাকে। ঢাকার আমিনবাজার ল্যান্ডফিলে এই বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্লান্ট নির্মাণ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ৪২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রতিদিন তিন হাজার টন মিক্সড বর্জ্য থেকে উৎপাদন করা হবে।
স্পন্সর হিসেবে চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন বিদ্যুৎ উৎপাদনের এ ইনসিনারেশন প্লান্টে যুক্ত থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ প্রকল্প আগামী ২৪ মাসের মধ্যে বাস্তবায়িত হলে উৎপাদিত বিদ্যুৎ বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ২৫ বছর পর্যন্ত ক্রয় করবে।
মন্ত্রী জানান, এ প্রকল্পের সর্বমোট ধরা হয়েছে তিনশত মিলিয়ন ইউএস ডলার।
বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ বাংলাদেশের জন্য সম্পূর্ণ নতুন ধারণা ও অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে তিনি জানান, টেকসই উন্নয়নের জন্য এ ধরনের প্রকল্পের কোনো বিকল্প নেই। এ প্রকল্পের মাধ্যমে যেমন আমাদের বর্জ্য নিষ্পত্তি হবে তেমনি বিদ্যুতের মত অতি প্রয়োজনীয় শক্তিও আমরা উৎপাদন করতে পারব যা আমাদের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদার কিছুটা সংকুলান হবে।
এ সময় স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানান, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাস থেকে এ প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নজরুল হামিদ বলেন, সম্পূর্ণ বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ায় তা আমাদের বিদ্যুৎ খাতকে আরও শক্তিশালী করবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এ সময় স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে সব ধরনের সহযোগিতা করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন তার নাগরিকদের আরও উন্নত সেবা প্রদান করতে পারবে।