প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

বর্ষাকালে শিশুদের পানিতে ডুবে যাওয়া রোধ সংক্রান্ত সাকিবের ভিডিও ভাইরাল

টিবিপি ডেস্ক
২৫ জুলাই ২০২৩ ১৩:৩৫:০৪ | আপডেট: ১ year আগে
বর্ষাকালে শিশুদের পানিতে ডুবে যাওয়া রোধ সংক্রান্ত সাকিবের ভিডিও ভাইরাল

বাংলাদেশে প্রতিদিন মর্মান্তিকভাবে ৪০ জন শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। প্রতিদিনের মৌসুমি বৃষ্টিতে সারাদেশে পুকুর ও নদীগুলো ভরাট হয়ে উঠেছে, আর তাই জাতীয় ক্রিকেট আইকন সাকিব আল হাসান বাবা-মায়েদের সহায়তা করছেন তাদের সন্তানদের ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা করতে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ২ কোটি ২০ লাখেরও বেশিবার দেখা হয়েছে এমন একটি ভাইরাল ভিডিওতে,
ইউনিসেফের জাতীয় দূত সাকিব আল হাসান কীভাবে শিশুদের ডুবে যাওয়া থেকে নিরাপদ রাখা যায় সে
সম্পর্কে বাবা-মায়েদের পরামর্শ দিয়েছেন।

সাকিব আল হাসান বলেন, জলাশয়ের কাছাকাছি গেলে শিশুরা যে ঝুঁকির সম্মুখীন হয়ে থাকে সে সম্পর্কে
বাবা-মা ও কমিউনিটির লোকজন যদি আরও সচেতন হয় এবং তাদের সাঁতার শেখায়, তাহলে প্রতি বছর
অনেক অকাল-মৃত্যু এড়ানো যেতে পারে। এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে সবাইকে আমি আমার সঙ্গে যোগ
দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি, যাতে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিত করতে
পারি।’

বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো পানিতে ডোবা; প্রতি বছর
এদেশে ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যু হয় পানিতে ডুবে । তাই, ‘বিশ্ব পানিতে ডোবা প্রতিরোধ দিবস’ উপলক্ষে এই
অকাল মৃত্যু প্রতিরোধে সকল বাবা-মা ও কমিউনিটিকে সতর্ক হবার আহ্বান জানান সাকিব আল
হাসান।

ভিডিও টিউটোরিয়ালে সাকিব কিছু সহজ পদক্ষেপের কথা বলেছেন যা বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের
ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নিতে পারেন। যেমন, ছোট শিশুদের নজরে রাখা বিশেষ করে যখন
তারা পানির আশেপাশে থাকে, উন্মুক্ত জলাশয়ের চারপাশে বেড়া দেওয়া এবং পানির যেকোন বড় পাত্র ঢেকে
রাখা। পাশাপাশি সন্তানের বয়স ৬ বছর হলেই তাকে সাঁতার শেখানোর জন্য বাবা-মায়েদের প্রতি
পরামর্শও দিয়েছেন সাকিব।

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, “এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে এত শিশু কেবল পানিতে ডোবার মতো দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে যা কিনা সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। বাবা-মা ও
কমিউনিটির সদস্য হিসেবে আমাদের সকলের দায়িত্ব এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।”

বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিনিধি ড. বারদান জাং রানা বলেন, ‘এমন একটি
বিশ্বে যেখানে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি যে কাউকে গ্রাস করতে পারে, সেখানে আমাদের প্রত্যেকের জন্য পানি
সংক্রান্ত দুর্ঘটনা হতে সুরক্ষার দায়িত্ব নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসুন আমরা হাত মেলাই, একে অপরকে ক্ষমতায়ন করি এবং এমন একটি বিশ্ব গড়ার চেষ্টা করি যেখানে প্রতিটি জীবন এই প্রতিরোধযোগ্য দুর্ঘটনা থেকে সুরক্ষিত থাকবে।’

ডব্লিউএইচওর ‘গ্লোবাল রিপোর্ট অন ড্রাউনিং: প্রিভেনটিং এ লিডিং কিলার’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উঠে
এসেছে যে, এই অঞ্চলে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার এখনও বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে অনেক বেশি, পুরুষ ও নারী
উভয় ক্ষেত্রে এবং বয়সভিত্তিক প্রতিটি গ্রুপের ক্ষেত্রেও। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে পানিতে ডুবে
যাওয়াকে ১০-১৪ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ, ৫-৯ বছর বয়সী শিশুদের জন্য
তৃতীয়, ১৫-২৪ বছর বয়সীদের জন্য ষষ্ঠ এবং ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য সপ্তম সর্বোচ্চ কারণ
হিসেবে পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশে সচেতনতার অভাব ও দুর্বল সাঁতারের দক্ষতা শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়,
বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় যেখানে খোলা জলাশয়ের সংখ্যা বেশি। পরিবার ও কমিউনিটিগুলোর জন্য সহজ
নির্দেশিকা, শিশুরা কীভাবে নিজেদের সুরক্ষা করতে পারবে তা শেখানো, সাঁতার শেখানো এবং যেসকল
শিশুদের এখনও স্কুলে যাবার বয়স হয়নি তাদের জন্য শিশুযত্ন কেন্দ্রের সুবিধাগুলোর মতো স্বল্প খরচের
সমাধান শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধ করতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।