প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় ময়মনসিংহের একই পরিবারের নিহত ৪

ইউএনবি নিউজ
২৫ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৪১:২৮ | আপডেট: ১ year আগে
ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় ময়মনসিংহের একই পরিবারের নিহত ৪

ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় ময়মনসিংহের নান্দাইলের বনাটি গ্রামের একই পরিবারের চারজন নিহতের ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

মঙ্গলবার সকালে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়েছে। যাদের অবহেলায় দুর্ঘটনা, তাদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

নিহতের পরিবারে আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।

গত শুক্র ও শনিবার ছোট ভাই রমজানের ছেলের বিয়েতে যোগ দিতেই পরিবারসহ ঢাকা থেকে বাড়ি আসেন সুজন মিয়া আর তার পরিবার। সারা বাড়িতে ছিলো বিয়ের উৎসব।

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সোমবার ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কিশোরগঞ্জ স্টেশনে এগারো সিন্দুর ট্রেনে উঠেছিলেন সুজন মিয়া। তবে এই যাত্রায় আর ঘরে ফেরা হলো না সুজন মিয়া তার পরিবারের কারোরই। ট্রেনটি ভৈরব রেলস্টেশন ছাড়ার পরপরই সব শেষ হয়ে যায়। দুই ট্রেনের সংঘর্ষে প্রাণ হারান পরিবারের সবাই।

তিনদিন আগেও যে পরিবারে ছিল আনন্দ উৎসবে ভরপুর তিন দিনপর সেই বাড়িতেই এখন শোকের মাতম।

একে একে তিনটি জানাজার নামাজ হয় বনাটি গ্রামের পুরাতন জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে। শোকে বিহবল এলাকাবাসী অংশ নেয় জানাজায়। কিন্তু এভাবে পিতা-মাতা সন্তানদের জানাজা একসঙ্গে পড়তে হবে এমনটি তাদের কল্পনাতেও ছিলনা কখনো।

এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় শোকে পাথর সুজনের মা-বাবা। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পরিবেশ। এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তারা। পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

সুজনের বাবা বলেন, সুজন ছিল আমার অনেক আদরের সন্তান। ঢাকার মোহাম্মদপুর তাজমহল রোড এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। সেখানে ভ্যান গাড়িতে ডাব বিক্রি করে সংসার চালাতেন। সময় সুযোগ পেলেই সপরিবারে বাড়িতে আসত। নিয়মিত সংসার খরচ পাঠাতো আমার কাছে। নাতি দুইজনও বাড়িতেহ আসলে দাদা-দাদু বলে সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখতো। এখন আমার সব শেষ হয়ে গেল।

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একই ট্রেনের অন্য বগিতে থাকায় বেঁচে যান সুজনের ছোট ভাই স্বপন মিয়া। কিন্তু একই ট্রেনে বড় ভাই আছেন সেটি তিনি জানতেন না। এক আত্নীয়র থেকে জানেন সুজন মিয়া আর তার পরিবার ও আছে এই ট্রেনে। পরে হাসপাতালের মর্গে খুঁজে পান ভাই, ভাবী ও দুই ভাতিজার লাশ।

ভাই স্বপন মিয়া বলেন ভাই-ভাবী ও ভাতিজাদের ছাড়া ঘরে যেতে মন চাচ্ছে না। আল্লাহ কেন এত বড় শাস্তি দিল আমাদের।

নান্দাইলের সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক চৌধুরী স্বপন বলেন, এক ঘরের চার জন মানুষের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমরা এঘটনার জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানাই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুন কৃষ্ণ পাল বলেন, নিহতের পরিবারে আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসনে উদ্যোগ নেওয়া হবে।