ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘দিন দিন সমাজ থেকে সবাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে। মানুষ নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। কেউ কারও বিপদ-আপদে এগিয়ে যায় না। এটি সমাজ হতে পারে না। সমাজ হতে হবে একতাবদ্ধ। সবাই সবার সুখে দুঃখে পাশে দাঁড়াবে। বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে সবাই একত্রিত হবে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় হবে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, মাদক, অপসংস্কৃতি তখনই দূর হবে যখন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চালাব।’
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশান-২ এ বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ পার্কে ‘সম্প্রীতির সংগ্রামে আমরা’ শিরোনামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ডিএনসিসি এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ।
মেয়র আতিক বলেন, ‘সুস্থ সংস্কৃতিচর্চা মানুষকে উদারতা শেখায়, সবার সঙ্গে মিশতে শেখায়, সৃজনশীলতা তৈরি করে শিক্ষার্থীদের আনন্দে মাতিয়ে রাখে এবং সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার মতো কাজে তাদের উজ্জীবিত করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার পাশাপাশি ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক চর্চায় সমান গুরুত্ব দিতে হবে।’
মেয়র বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন সকল ধর্মের, সকল বর্ণের মানুষ একসঙ্গে মিলেমিশে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ে তুলতে কাজ করে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কথা তুলে ধরে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যখন পদ্মাসেতু, মেট্রোরেলসহ মেগা প্রকল্পের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন তখন একদল লোক বলেছিল এগুলো সম্ভব না। এই স্বপ্ন কখনও বাস্তব হবে না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আজ পদ্মাসেতু হয়েছে, মেট্রোরেল হয়েছে। দ্রুতই সব মেগা প্রকল্প সম্পন্ন হবে। ২০৪১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সিটি করপোরেশন থেকে নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করছি। কিছুদিন আগেই গুলশানে পাড়া উৎসব হয়েছে। উত্তরায় বঙ্গবন্ধু মুক্তমঞ্চ নির্মাণ করেছি। সেখানে প্রতিনিয়ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। মিরপুরের জল্লাদখানাকে মেরামত করে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব ওয়ার্ডে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তুলবো।’
অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেলায়েত হোসেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির কাউন্সিলর মো. মফিজুর রহমান ও মো. জাকির হোসেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আহকাম উল্লাহ্ প্রমুখ।