কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় শুরু হয়েছে বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁই’র ১৩২তম তিরোধান উৎসব।
সোমবার থেকে শুরু হয়ে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান চলবে। এদিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রধান অতিথি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ উৎসবের উদ্বোধন করবেন।
তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্যে থাকছে লালনের কর্মময় জীবন ও দর্শন নিয়ে আলোচনা সভা ও সঙ্গীতানুষ্ঠান। লালন একাডেমির শিল্পীবৃন্দসহ কলকাতার লালন শিল্পীরাও অনুষ্ঠান সঙ্গীত পরিবেশন করবেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানকে ঘিরে তিন দিনের গ্রামীণ মেলা চলবে।
তবে এরই মধ্যে এ আয়োজনকে ঘিরে দেশের দুর-দুরান্ত থেকে বাউল ভক্ত ও সাধুরা এসে ভিড় জমিয়েছেন লালনের আখড়া বাড়িতে।
অনুষ্ঠানের নিরাপত্তাসহ সার্বিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম জানান, অনুষ্ঠানকে ঘিরে নিরাপত্তার চাদরে মোড়া থাকবে লালনের আখড়া বাড়ি ও এর আশেপাশের স্থান। দর্শনার্থীসহ অনুষ্ঠানে আগত বাউল ভক্ত সাধুদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
লালন একাডেমির সভাপতি কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম জানান, অনুষ্ঠানকে ঘিরে এরই মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমনকি দেশের বাইরে থেকেও বহু লালন ভক্ত ও সাধু এসে জড় হয়েছেন সাঁইজীর আখড়ায়। অনুষ্ঠানকে সাফল্য মণ্ডিত করার জন্য সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
লালন অ্যাকাডেমির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ফকির লালন সাঁইজী তার জীবদ্দশায় প্রতি বছরই দোল পূর্ণিমা তিথিতে গুরু-শিষ্যের মধ্যে ভাবের আদান প্রদানের জন্য সাধু-বাউল ফকিরদের সঙ্গে নিয়ে উৎসবের আয়োজন করতেন। সেই থেকে প্রায় দুইশ’ বছর ধরে এই রেওয়াজ চালু রয়েছে।
তিনি বলেন, একইভাবে প্রায় ১৩২ বছর ধরে তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠান পালন করা হচ্ছে। সেই থেকে কোন দাওয়াত-পত্র ছাড়াই সাঁইজীর আখড়া বাড়িতে বাউল ভক্ত ও সাধুরা মনের টানে এই দুটি দিবসকে ঘিরে এখানে ছুটে আসেন।
কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনামুল হক মঞ্জু জানান,এবারের তিরোধান দিবস উপলক্ষে রেকর্ড সংখ্যক দর্শনার্থী ও লালন ভক্ত বাউলদের আগমন ঘটবে আখড়া বাড়িতে। এরই মধ্যে মূল মাজার প্রাঙ্গন ও সামনের মরা কালী নদী যেখানে মঞ্চ রয়েছে সেই স্থানে অসংখ্য বাউল ভক্তরা আসন পেতেছেন।