সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয়েছে মিয়া ভাই’খ্যাত অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মরদেহ।
মঙ্গলবার বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে এই নায়কের মরদেহ সেখানে নেয়া হয়। সর্বস্তরের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য দুপুর ১টা পর্যন্ত তার মরদেহ রাখা হবে শহীদ মিনারে।
সেখানে থেকে ফারুকের নিথরদেহ যাবে তার প্রিয় কর্মস্থল এফডিসিতে। প্রিয় শিল্পীকে শেষ বিদায় জানাতে সর্বস্তরের মানুষ সকাল থেকেই ছুটে আসেন শহীদ মিনারে। এর আগে, সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে তার মরদেহ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরার বাসায়।
বাদ জোহর প্রয়াত তারকার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল বিএফডিসিতে নিয়ে প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এফডিসির শ্রদ্ধা নিবেদন হবে আনুমানিক সাড়ে ৩টায়।
এরপর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে চ্যানেল আই। সেখান থেকে বিকাল ৫ টায় গুলশান আজাদ মসজিদে বাদ আছর জানাজা নামাজ শেষে কালীগঞ্জে নিয়ে যাওয়া হবে এবং পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
তার ভগ্নিপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কে.বি.এম মফিজুর রহমান খান জানান, গাজীপুরের কালীগঞ্জে বাবা আজগর হোসেন পাঠানের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন চিত্রনায়ক ফারুক।
উল্লেখ্য, অভিনেতা ফারুক দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আট বছর ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এই অভিনয়শিল্পী ও রাজনীতিবিদ। সর্বশেষ ২০২১ সালে মার্চ মাসের প্রথম দিকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য সিঙ্গাপুরে যান তিনি। পরীক্ষায় তার রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করছিলেন তিনি।
এদিকে, দাপুটে এই অভিনেতার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এমপি, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি প্রমুখ।
১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ফারুক। এ নায়কের শৈশব-কৈশোর ও যৌবনকাল কেটেছে পুরান ঢাকায়। পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট।
১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তার। প্রায় পাঁচ দশক ঢালিউডে অবদান রাখার পর অভিনয় থেকে অবসর নেওয়ার পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঢাকা-১৭ আসনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।