যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের ২৫ অক্টোবর সুনাক দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম দুই নেতার বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।
শুক্রবার বিকেলে লন্ডনের পল মলে কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের মার্লবোরো হাউসে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
পরে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে ঋষি সুনাক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, আমি আপনাকে অনেক বছর ধরে অনুসরণ করছি। আপনি একজন সফল অর্থনৈতিক নেতা।’
সাইদা মুনা তাসনিম আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে তার দুই মেয়ে ও স্ত্রী শেখ হাসিনার ভক্ত। সুনাক চান তার মেয়েরা যেন শেখ হাসিনার মতো নেতা হন।
ঋষি সুনাক বলেন, ‘আপনি আমার দুই মেয়ের জন্য অনেক বড় অনুপ্রেরণা।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সমৃদ্ধির জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং ভূমিহীন ও গৃহহীনদের সরকারি খরচে বাড়ি দেওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে তার গৌরবময় ভূমিকারও প্রশংসা করেন।
কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী সময়ে ছয় শতাংশের বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার কথা উল্লেখ করে ঋষি সুনাক বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে অভিহিত করেন।
৩৫ মিনিট ধরে চলা বৈঠকে দুই নেতা দুই দেশের পারস্পরিক সুবিধা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। সুনাক বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চমৎকার। যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে মূল্য দেয়।’
বৈঠকের শুরুতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য ঋষি সুনাককে অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আপনি এত অল্প বয়সে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন! এমন তরুণদের নেতৃত্ব দেখে আমার ভালো লাগছে।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমর্থনের জন্য বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী এবং জনগণকে ধন্যবাদ দেন শেখ হাসিনা। রোহিঙ্গা বোঝা এখন অনেক বড় নিরাপত্তা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও জানান তিনি। এ সময় রোহিঙ্গাদের দেখতে ঋষি সুনাককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী জাপানে দ্বিপক্ষীয় সফর এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এরপর তিনি সফরের তৃতীয় ধাপে ৬ মে অনুষ্ঠিতব্য রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ৪ মে রাত ১১টা ৪৯ মিনিটে লন্ডনে পৌঁছান।