সমাজের অনেকেই নির্মম হন পশুপাখি এবং প্রকৃতির বিরুদ্ধে। আবার অনেকের থাকে পশু-পাখির জন্য মমত্ববোধ। সাংবাদিক হৃদয় দেবনাথের জন্য দ্বিতীয় বাক্যটি প্রযোজ্য। পেশায় তিনি সংবাদকর্মী। ২০০৮ সাল থেকে জাতীয় ‘দৈনিক যায়যায় দিন’ পত্রিকা দিয়ে সাংবাদিকতা শুরু তার। বিভিন্ন আঞ্চলিক ও জাতীয় দৈনিকে কাজ শেষে বর্তমানে তিনি কাজ করছেন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে জি-টিভিতে।
এছাড়াও দৈনিক কালবেলা’র সিলেট বিভাগীয় সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বিডিমর্নিং ডট কম-এ কাজ করছেন।
এর আগেও তিনি জাতীয় দৈনিক যায়যায় দিন, দৈনিক সময়ের আলো, ইংরেজি ডেইলি বাংলাদেশ টুডে, অনলাইন নিউজ পোর্টাল সারাবাংলা ডট নেটসহ বিভিন্ন স্থানীয় ও আঞ্চলিক দৈনিকে মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে সুনাম, সততা ও সফলতার সাথে কাজ করেছেন।
পাশাপাশি বন্যপ্রাণী, পাখি সংরক্ষণ এবং প্রাণীর অধিকার আদায়েও সরব তিনি। প্রাণীর অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তিনি কষ্ট পান। পরিবেশ বিপর্যয়ে যখন বাস্তুসংস্থান নষ্ট হচ্ছে, নগরায়ন কিংবা বন উজারের ফলে যখন বন্যপ্রাণি আশ্রয় হারাচ্ছে, মানব সৃষ্ট দুর্যোগে যখন পাখি নীড় হারাচ্ছে তখন প্রকৃতির যোদ্ধা হয়ে এগিয়ে এসেছেন সাংবাদিক হৃদয়। তার একান্ত চাওয়া সবুজ প্রাণ প্রকৃতি সুরক্ষিত থাকুক। সেই প্রেক্ষিতে সমমনা কয়েকজনকে সাথে নিয়ে ২০১৬ সালে গড়ে তুলেছেন জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী পরিবেশবাদী সংগঠন।
ইতোমধ্যে সংগঠনের উদ্যোগে হাইল ও হাওর অঞ্চল থেকে বিভিন্ন কৌশলে শিকারিদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিপন্ন ও বিলুপ্ত প্রজাতির দুই শতাধিক পাখি এবং লজ্জাবতী বানরসহ বিভিন্ন ধরণের বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে খুদে শিক্ষার্থীদের হাত দিয়ে অবমুক্ত করে যাচ্ছেন।
সংগঠনটির উদ্যোগে ধারাবাহিক বৃক্ষরোপন, শিকারিদের কাছ থেকে পাখি উদ্ধার, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ, উঠান বৈঠক করে আসছেন। মানব সভ্যতার জন্য প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণীর প্রয়োজনীয়তা ও সংরক্ষণে দীর্ঘদিন ধরে ‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের’ উদ্যোগে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাংবাদিক হৃদয়ের নেতৃত্বে ধারাবাহিক গণসচেতনতা তৈরি করে যাচ্ছেন।
হৃদয় দেবনাথ পেশায় একজন সাংবাদিক হলেও পরিবেশ এবং প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন অনেকটা নিভৃতে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সংগঠনের সকলকে নিয়ে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করার মাধ্যমে পাহাড় কাটা, বৃক্ষ উজাড়,পাখি শিকার বন্ধে সাংবাদিক হৃদয়ের নেতৃত্বে ভিন্ন ভিন্ন কৌশলে কাজ করে যাচ্ছেন সংগঠনের প্রত্যেকটা সদস্য।
গণমাধ্যমে প্রতিবেদন তুলে ধরার পাশাপাশি সংগঠনের উদ্যোগে পাখি ও বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে চিকিৎসা শেষে অবমুক্ত করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। পরিবেশ রক্ষায় সোচ্চার তিনি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন টিম। কিন্তু যত সময় গড়াচ্ছে বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিপক্ষের হুংকার। প্রতিপক্ষের ক্ষমতা তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। কারণ তার প্রতিপক্ষ মানে বিপন্ন পরিবেশ। যেখানে তার সন্তানদের বসবাস। সন্তানের বসবাসের জায়গা যদি বিপন্ন হয় পিতা হিসেবে এর চেয়ে আর কষ্টের কি হতে পারে।
এ অবস্থায়ই প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় প্রতিনিয়ত চলছে তার যুদ্ধ। হৃদয় দেবনাথ’র এ সংগ্রাম আমাদের চারপাশের পরিবেশ, বিপন্ন বন ও প্রাণ প্রকৃতি নিয়ে। লোকালয়ে আটকে যাওয়া বিভিন্ন বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে সেগুলোর যত্ন শেষে বনে অবমুক্ত করেন। কালের পরিক্রমায় বর্তমানে উজাড় হওয়া বনের বিপন্ন প্রাণীগুলো লোকালয়ে এসে যখন মৃত্যু ঝুঁকিতে পরে তখন সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে আটকেপড়া স্থান থেকে বন্যপ্রাণীদের উদ্ধার করে তার আপন ঠিকানায় অবমুক্ত করে দিচ্ছেন।
গণমাধ্যমে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র নিয়ে কাজ করেন হৃদয়। টিভি এবং প্রিন্ট মিডিয়াসহ অনলাইন পোর্টালে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র নিয়ে তার প্রতিবেদনের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৭ হাজারেরও বেশি। প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় গণমাধ্যমে অসংখ্য প্রতিবেদন তুলে ধরে তিনি প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছ থেকে লাভ করেছেন ব্যাপক জনপ্রিয়তা।
পাখি, সাপ রক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন তিনি। ব্যাঙ, তক্ষক, টিকটিকি, হাতি, বানর, বানরের বেঁচে থাকার নিয়মে ব্যাত্যয় ঘটলে এড়িয়ে যায় না তার চোখ। প্রতিবেদনের মাধ্যমে তিনি সেগুলো তুলে আনেন। তার ক্যামেরায় উঠে আসে প্রাণ প্রকৃতি রক্ষার নানা দিক। তিনি তুলে ধরেন পরিবেশের সঙ্গে মানুষের বেঁচে থাকার সম্পর্কের কথা। পাশাপাশি তুলে আনেন বন খেকোদের বন উজার, পাহাড়ের বুক থেকে পাথর উত্তোলনকারীদের দস্যিপনার খবর।
একাধিকবার নানা পরিবেশ ইস্যুতে তার প্রতিবেদনে চাকরি হারিয়েছেন খোদ বন বিভাগের শীর্ষস্থানীয় অনেক কর্মকর্তার। এক কথায় পরিবেশ বিষয়ক কোন ইস্যুতে কোন ছাড় নেই তার কাছে। মূলত তার নেতৃত্বে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ধারাবাহিক কাজগুলোর জন্যই টনক নড়ে প্রশাসন ও পরিবেশবিদদের।
হৃদয় দেবনাথ’র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক আইডি লক্ষ্য করলে যে কেউ বুঝবেন- সর্বদা প্রাণ ও প্রকৃতি বাঁচানোর জন্য তিনি কি কি করছেন। এজন্য জীবনের ঝুঁকি নিতেও ভয় পান না তিনি।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান অর্জন করে বৃক্ষরোপণ ও সংরক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০১৮ সম্মানেও ভূষিত হন সাংবাদিক হৃদয়। একই বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে দেশের হাজারও আবেদনকারীদের পেছনে ফেলে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পদক-২০১৯ সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি। জীববৈচিত্র্য ও পাখি সংরক্ষণে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সম্মাননা কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ লাভ করেন তিনি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা সমিতির আয়োজনে আরণ্যক ফাউন্ডেশন, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ বন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ বার্ড ক্লাব, জাবির ওয়াইল্ডলাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিট, এর সৌজন্যে ১৯৯৮ সাল থেকে পাখি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রিন্ট মিডিয়া অনলাইন মিডিয়া ও টেলিভিশন সাংবাদিক সহ তিনজনকে এ সম্মাননা দেয়া হয়।
পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধিতেও তার অবদান রয়েছে। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক হৃদয়ের নেতৃত্বে করোনা মহামারিতে অসহায় প্রায় তিন’শ পরিবারকে চাউল, ডাল, তেল আলু পিঁয়াজসহ প্রায় ২০ দিনের খাবার পৌঁছে দিয়েছেন।
এসব পরিবারের মধ্যে প্রায় শতাধিক পরিবারই জীবিকার তাগিদে পাখি শিকার কাজে জড়িত ছিল। তাই করোনাকালীন সময়ে কৌশলে ‘ছেড়ে দিলে পাখি শিকার মিলবে পনেরো দিনের খাবার’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে পাখি শিকার ও পাহাড় প্রকৃতি ধ্বংস করবে না মর্মে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সামনে লিখিতভাবে মুচলেকানামায় স্বাক্ষর করেছেন শিকারিরা। পাখি শিকার ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের কারণ হবে না মর্মে কথা দেয়ায় মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাইল-হাওর এলাকায় বসবাসরত মৎসজীবি প্রায় ১০০ পরিবারকে ত্রাণ নগদ অর্থ ও সাথে একটি ঔষধি বৃক্ষের চারা রোপনের জন্য দেয়া হয়।
পাশাপাশি করোনা মহামারী ঠেকাতে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম, মাস্ক পরিধান করা, জনসচেতনতামূলক প্রতিবেদন তার কর্মরত টেলিভিশন জিটিভি এবং প্রিন্ট ও অনলাইনপোর্টালে ধারাবাহিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন সাংবাদিক হৃদয়। এসব কার্যক্রমের জন্যই ব্যাপক প্রশংসিত হন সাংবাদিক হৃদয় ও তার প্রতিষ্ঠা করা সংগঠন ‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন’ টিমের প্রত্যেক সদস্য। সেই সাথে প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় তাদের এই ভিন্নধর্মী কৌশলের কারণে জাতীয় গণমাধ্যমে ধারাবাহিক শিরোনামও হচ্ছেন সাংবাদিক হৃদয় এবং তার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমগুলো।
হৃদয় দেবনাথ বলেন, প্রতিটি প্রাণী আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থানের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। প্রাণ ও প্রকৃতি আঁকড়ে টিকে আছে আমাদের মানব সভ্যতা। তাই এগুলো রক্ষা করা মানে আমাদের নিজ সভ্যতা রক্ষা করা। কিন্তু বুঝে, না বুঝে প্রাণী হত্যা বন উজাড় তথাকথিত উন্নয়নের নামে পাহাড় কাটা, ফসলি জমির মাটি দেদারসে বিক্রি করার মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত হত্যা করে চলেছি আমাদের ভবিষ্যৎ। প্রাণি ও প্রকৃতি রক্ষায় একটু হলেও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের এই প্রচেষ্টা। এখন পর্যন্ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসংখ্য বিপন্ন বিলুপ্ত প্রায় পাখি বা বন্যপ্রাণী শিকারিদের হাত থেকে উদ্ধার করে মুক্ত করে দিয়েছেন সাংবাদিক হৃদয় ও তার টিম।
তিনি বলেন, প্রাণী ও মানুষের মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে মানুষ কথা বলতে পারে। অন্য প্রাণিরা পারে না। তাই প্রাণিকূলে মানুষের খেয়ালখুশির কাছে ওরা অসহায়। ফলে মানুষের চরম নির্মমতায় কিংবা পরিবেশের চরম বিপর্যয়েও একটি প্রাণী কোন প্রতিবাদ করতে পারে না। কিন্তু প্রাণীর না বলতে পারা সব কষ্ট ও কথাগুলো অনুধাবন করা মানুষের দায়িত্ব। অসহায় প্রাণকে সাহায্য করার কথা প্রতিটি ধর্মেও উল্লেখ আছে। ইতোমধ্যে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন প্রায় ৮৫টি সফল উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে অদ্যাবদি প্রায় ২১৬টি বিভিন্ন প্রজাতির বিপন্ন পাখি ও বন্যপ্রাণী শিকারিদের কাছ থেকে সফলভাবে উদ্ধার করে হাইল হাওর ও লাউয়াছড়ায় মুক্ত করেছেন।
এছাড়া ভিন্ন ভিন্ন স্থান থেকে মেছো বাঘের ৬টি বাচ্চা ও বিভিন্নভাবে লজ্জাবতী বানরসহ আহত বিভিন্ন প্রজাতির ১০টি আহত বানর এবং আহত একাধিক কুকুরকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের চিকিৎসকদের সহযোগিতায় সুস্থ করে বনে অবমুক্ত করেছেন। সংবাদ মাধ্যমে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য নিয়ে প্রতিবেদন তুলে ধরার পাশাপাশি ব্যাক্তিগত উদ্যোগে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন হাইল হাওর অঞ্চলে বসবাসরত মানুষদের মাঝে পাখি শিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি, পাখি শিকার, অবাধে বৃক্ষ বন ও পাহাড় উজাড় এবং বন্যপ্রাণী হত্যা আইন ও শাস্তির বিষয়ে সাধারণ মানুষের কাছে বিভিন্নভাবে বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন হৃদয় ও তার দল। তাছাড়াও অতিথি পাখি ও জীববৈচিত্র্য পরিবেশের জন্য কতটা উপকারী সে সম্পর্কেও সংগঠনের লোকদের নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন তরুণ এ সাংবাদিক ও তার দল।
পরিবেশ ও বিলুপ্তপ্রায় প্রাণি রক্ষায় করণীয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষায় জনসচেতনতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই। আর জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে সংবাদ মাধ্যমগুলো হতে পারে অন্যতম শক্তিশালী হাতিয়ার।
পাশাপাশি জেলা থেকে উপজেলা এমনকি গ্রাম পর্যায়ে শিক্ষিত যুব সমাজকে সাথে নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
দ্রুতই পরিবেশ প্রকৃতি নিয়ে তৃণমূল পর্যায় থেকেই প্রতিরোধ গড়ে ওঠবে বলে বিশ্বাস হৃদয়ের। তিনি বলেন, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশনের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে প্রাণ প্রকৃতির সুরক্ষা নিশ্চিত করা। প্রতিটি সংবাদ মাধ্যমেরও উচিৎ প্রাণ ও প্রকৃতিকে প্রাধান্য দেয়া। পাশাপাশি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোরও আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।
সাংবাদিক হৃদয়ের কাজগুলোর প্রশংসা করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনিরুল হাসান খান বলেন, এভাবেই প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় সাংবাদিক হৃদয়ের মতো সকলের সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসা উচিত।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বলেন, দেশের প্রতিটা জায়গায় পাখি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সাংবাদিক হৃদয়ের মতো সকল তরুণ ও যুবদের এগিয়ে আসতে হবে। তবেই প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষিত থাকবে। প্রাণ প্রকৃতি রক্ষা করতে হলে জনসচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।
বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগের প্রধান প্রখ্যাত বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ আ ন ম আমিনুর রহমান বলেন, পাখি জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গণমাধ্যমের বদৌলতে দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে সাংবাদিক হৃদয় যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। গণমাধ্যম ছাড়াও তার প্রতিষ্ঠা করা সংগঠন জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফাউন্ডেশন টিমের সদস্যদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাইল হাওর অঞ্চল থেকে ধারাবাহিকভাবে একের পর এক বিপন্ন পাখি উদ্ধার করে আসছেন।
তিনি হৃদয় ও তার টিমের এই কাজগুলোর প্রশংসা করে বলেন, সাংবাদিক হৃদয় ও তার টিমের মতো দেশের প্রতিটা স্থানেই তরুণরা এগিয়ে আসলে প্রাণ প্রকৃতি অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবে।
প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, হৃদয়ের কাজগুলো অব্যাহত থাকুক। তাদের দেখেই প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় তরুণরা এগিয়ে আসবে। তরুণ ও যুবসমাজ এগিয়ে আসলেই রক্ষা পাবে প্রাণ প্রকৃতি। দেশের যেকোনো স্থানে পরিত্যাক্ত ভূমি থাকলেই ফেলে না রেখে বনায়ন করা উচিত। সেই সাথে স্কুল পর্যায়ে খুদে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রাণ প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা দেয়া উচিত। বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ, বিপন্ন পাখি ও বন্যপ্রাণী সম্পর্কে ধারণা দিয়ে বড় করতে হবে।
বন্যপ্রাণী ব্যাবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ কর্মকর্তা এসিএফ শ্যামল মিত্র জানান, সাংবাদিক হৃদয় এবং তার টিম হাইল ও হাওর অঞ্চল থেকে পাখি উদ্ধার এবং হাওর অঞ্চলের মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টির কাজগুলো দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছেন। এজন্য আমরা ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে তাদের ধন্যবাদ জানাই। আশা করি প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় তাদের এ কাজগুলো অব্যাহত থাকবে।
এদিকে পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, সাংবাদিক হৃদয়ের কাজগুলো প্রশংসার দাবি রাখে। প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় নিরলসভাবে সাংবাদিক হৃদয় ও তার টিম যেভাবে পাখি বন্যপ্রাণী উদ্ধার করে যাচ্ছেন এ জন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, পাহাড় বন্যপ্রাণীর মৃত্যু,পাখি শিকার, হাইল ও হাওর দখল থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক বন উজাড়সহ প্রাণ-প্রকৃতি বিষয়ক ব্যাপারগুলো হৃদয়ের চোখ এড়িয়ে যায়না। প্রাণ প্রকৃতির সমস্যা সম্ভাবনার প্রতিটি বিষয় গুরুত্বের সাথে গণমাধ্যমে একের পর এক প্রতিবেদন আকারে তোলে ধরছেন হৃদয়, যা প্রাণ প্রকৃতি রক্ষায় এক অসাধারণ কাজ।