বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী জান, মাল এবং তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারা একজন ব্যক্তির মৌলিক অধিকারগুলোর মাঝে একটা। সংবিধানে অনুচ্ছেদ ৩৯ (২) (ক) এবং অনুচ্ছেদ ৪৩ এর মাধ্যমে নাগরিকের এই অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।
‘সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা, তথ্য সুরক্ষা ও অনলাইন নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন উপস্থাপন ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর আদাবর ডিএসকে মিলনায়তনে আজ সোমবার ৩০ অক্টোবর এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারি সংস্থা ভয়েসের আয়োজনে উক্ত সভায় সাংবাদিক, নারী ও মানবাধিকার কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীদের উপস্থিতিতে তথ্য সুরক্ষার অধিকার নিয়ে কথা বলার পাশাপাশি এবং তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর পৃথিবীতে তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার প্রতিবন্ধকতা নিয়েও আলোচনা করা হয়।
সভায় প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ভয়েসের প্রোগ্রাম অফিসার তানজিমা তৃষা। তিনি মানবাধিকারের আওতা ও পরিস্থিতি, ব্যক্তিগত তথ্যের ধারণা, ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তার ধারণা ও পরিস্থিতি, গোপনীয়তা লঙ্ঘনের কারণ, তথ্য সুরক্ষার কৌশল ও ফলাফল, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতের আলোকে ব্যক্তিগত তথ্য গোপনীয়তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, নারী ও শিশু সংবেদনশীলতা, ডিজিটাল পরিচ্ছন্নতা, অনলাইন নিরাপত্তা এবং জেন্ডার সহনশীল ব্যক্তিগত তথ্যের চর্চা ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরেন।
ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, উন্নয়ন এবং স্বল্পোন্নত উভয় দেশেই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে মানুষকে চিহ্নিত করতে, তাদের আন্দোলন রেকর্ড করতে যা শেষ পর্যন্ত তাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশে অংশ নেওয়ার অধিকারকে প্রভাবিত করে। এবং অনলাইন নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ফ্রন্ট লাই ডিফেন্ডার্স-এর মতে বাংলাদেশে মানবাধিকার কর্মীরা বিচারিক হয়রানি, গ্রেফতার, শারীরিক নির্যাতনসহ প্রতিকূল অবস্থায় বাস করে। এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনও তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করে যে সংবাদকর্মী ও মানবাধিকার কর্মীরা র্খুবই বিপজনক পরিস্থিতিতে দেশে বসবাস করে।
‘সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা, তথ্য সুরক্ষা ও অনলাইন নিরাপত্তা’ পরিস্থিতি পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়। উল্লেযোগ্যহারে নারী সাংবাদিকরা অনলাইন নিরাপত্তা হুমকিতে ভুগছে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়। সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের এক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে, সভায় জানানো হয় যে, ৮৬ শতাংশ মানবাধিকার বিভিন্ন ধরনের হুমকির শিকার হয়, ৬২ শতাংশ কাজের পরিবেশকে অনিরাপদ বলে উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী জান, মাল এবং তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারা একজন ব্যক্তির মৌলিক অধিকারগুলোর মাঝে একটা। সংবিধানে অনুচ্ছেদ ৩৯ (২) (ক) এবং অনুচ্ছেদ ৪৩ এর মাধ্যমে নাগরিকের এই অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।
সংবিধানের ৩৩ (২) (ক) অনুচ্ছেদে প্রতিটা নাগরিকের মত প্রকাশের অধিকার এবং ৪৩ নং অনুচ্ছেদে বাড়িঘর এবং যোগাযোগের গোপনীয়তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। শুধু মাত্র বাংলাদেশেই না, গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারা সারা বিশ্বেই একজন ব্যক্তির মৌলিক অধিকার গুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।