বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বাস, লঞ্চ বন্ধের পর এবার খুলনা নগরীর অন্যতম প্রবেশদ্বার রূপসা ঘাট ও জেলখানা ঘাটে যাত্রী পারাপার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য যাত্রী পারাপার বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হলেও শুক্রবার রাত ৯টা থেকেই তা বন্ধ করে দেয় ঘাটমাঝি সংঘ। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
খুলনায় বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে ‘রাজনৈতিক চাপেই’ রূপসা ও জেলখানা ঘাটে যাত্রী পারাপার বন্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ দলের নেতাকর্মীদের। তবে মাঝি সমিতি বলছে, ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে এ ধর্মঘট করছেন তারা।
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের মিডিয়া উপ-কমিটির আহ্বায়ক এহতেশামুল হক শা্ওন বলেন, ‘সমাবেশে যাতে লোক কম হয়, সে জন্য আগে বাস, লঞ্চ বন্ধ করা হয়েছে। এবার দুই খেয়াঘাট বন্ধ করা হলো। তবে আমাদের নেতাকর্মীরা হেঁটে সমাবেশে চলে আসছেন। দরকার হলে সাঁতার কেটে আসবেন।’
অভিযোগ অস্বীকার করে খুলনা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা বলেন, ‘বিএনপি পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ আহ্বান করেছে। এটা প্রতিহত করতে হবে বা বাধা দিতে হবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না।’
তিনি বলেন, ‘বাস-লঞ্চ বন্ধ করেছে মালিক সমিতি। খেয়াঘাট বন্ধ করেছে মাঝি সমিতি। এটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। বাস, লঞ্চ বা খেয়াঘাট বন্ধ করার জন্য আওয়ামী লীগ কাউকে চাপ দেয়নি।’
মাঝিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রূপসা ঘাট দিয়ে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ হাজার মানুষ পারাপার হয়। আর জেলখানা ঘাট দিয়ে রূপসা ছাড়াও তেরখাদা উপজেলাসহ নড়াইলের দুটি ও বাগেরহাটের একটি উপজেলার মানুষ যাওয়া যাতায়াত করে।
জানতে চাইলে রূপসা ঘাট মাঝি সংঘের সভাপতি মো. রেজা ব্যাপারী বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনপ্রতি ভাড়া বাড়ানোর দাবি করা হয়েছে। ওই দাবি মেনে না নেওয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যায় তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে এর আগে সিটি করপোরেশনের মেয়র, খুলনা জেলা প্রশাসক, রূপসা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদন করেও কোনো সাড়া মেলেনি। তাই আমরা যাত্রী প্রতি এক টাকা ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে ২২ অক্টোবর ২৪ ঘণ্টার জন্য ঘাট পারাপার বন্ধের ঘোষণা দিয়েছি।’
এদিকে, হঠাৎ ঘাট পারাপার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে রোগী নিয়ে পারাপারে আসা লোকজন বেশি বিপাকে পড়েছেন। রূপসা ও জেলখানা খেয়াঘাটে ইঞ্জিনচালিত নৌকা দিয়ে পারাপার করা হয়; দুটি খেয়াঘাটই রূপসা উপজেলার সঙ্গে যুক্ত।