প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আঞ্চলিক সংযোগের সহায়ক হতে চায় বাংলাদেশ

ইউএনবি
১৭ নভেম্বর ২০২২ ০৯:২১:১২ | আপডেট: ২ years আগে
সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আঞ্চলিক সংযোগের সহায়ক হতে চায় বাংলাদেশ
সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য সম্পর্কের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী এস ইসওয়ারান ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম

সিঙ্গাপুরকে পরিষেবা বিতরণের পাশাপাশি বাণিজ্যের জন্য একটি ‘সংযোগের কেন্দ্র’ হিসেবে উল্লেখ করে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম দক্ষিণ এশিয়ার অঞ্চলের স্থলবেষ্টিত দেশগুলোর জন্য আঞ্চলিক সংযোগের সুবিধা প্রদানকারী দেশ হওয়ার বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরেন।

সমুদ্র বন্দর ও বিমান বন্দরসহ অবকাঠামো উন্নয়নে আরও বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি আঞ্চলিক সংযোগ ও উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়নকে সহজতর করতে আরও সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ কামনা করেন।

সিঙ্গাপুরের পরিবহন মন্ত্রী এবং বাণিজ্য সম্পর্কের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী এস ইসওয়ারান পরিশ্রমী বাংলাদেশী শ্রমিকদের এবং তাদের নির্মাণ ও অন্যান্য খাতে তাদের অবদানের প্রশংসা করেন।

সিঙ্গাপুরের মন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী আলম বলেন, সিঙ্গাপুর বাংলাদেশ থেকে বিশেষ করে স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সেবা খাতে আরও দক্ষ কর্মী নেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। কিভাবে উন্নত প্রযুক্তি এবং ডিজিটাইজেশন ব্যবহার করে জনসংখ্যাগত লভ্যাংশ কাটা যায়, সে বিষয়ে উভয় পক্ষ আলোচনা করেছেন।

প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশের উচ্চ কৃষি উৎপাদনশীলতা এবং দেশে কৃষিভিত্তিক শিল্পের সম্ভাবনারও গুরুত্ব তুলে ধরেন। মধ্যবিত্ত ভোক্তাদের জন্য ক্রমবর্ধমান উচ্চ ক্রয় ক্ষমতা উপভোগের ওপর বিশেষ জোর দেন তিনি।

সিঙ্গাপুরের মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করেন। দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর ও বাড়ানোর গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আরও উন্নতির জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন, জ্বালানি খাত, ডেটা মাইনিং এবং বিভিন্ন উচ্চ দক্ষ ক্ষেত্র যেমন- ডিজিটাল সংযোগ এবং পরিষেবা, প্রযুক্তি স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কাজ করার বিষয়ে সিঙ্গাপুরের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ আঞ্চলিক সংযোগের সহায়ক হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার জন্য সিঙ্গাপুরের সঙ্গে তার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে। সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের সঙ্গে তার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মধ্যে বিদ্যমান অনেক সম্ভাবনায় আগ্রহী। এটিকে পরবর্তী স্তরে উন্নীত করার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য উন্মুখ।

বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ইসওয়ারান বর্তমানে বাংলাদেশে দুই দিনের সরকারি সফর করছেন। বৈঠকের সময় দুই মন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে মতবিনিময় করেন যা উভয়ই শক্তিশালী এবং এসময় পরীক্ষিত বলে প্রশংসা করেন।

এ সময় উভয় মন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন তাদের অর্থনীতির গতি বজায় রাখতে নিজ নিজ সরকার গৃহীত ব্যবস্থা নিয়েও আলোচনা করেছেন। প্রতিমন্ত্রী মহামারির ঝুঁকিপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রতি ক্রমাগত সহায়তার জন্য সিঙ্গাপুর সরকারকে ধন্যবাদ জানান।

এর আগে সিঙ্গাপুরের মন্ত্রী বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর সঙ্গে বৈঠক করেন। বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে আরও জোরদার করতে সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেন। তারা নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করে নতুন বিমানবন্দর এবং বেসামরিক বিমান চলাচলের অবকাঠামোর সম্ভাব্য ‘সবুজকরণ’ বিষয়ে মতবিনিময় করেন।

পরের দিন এস ইসওয়ারান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করেন। আরও বেশি সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে বর্ধিত এবং উন্নত সহযোগিতা ও সহযোগিতার জন্য আরও সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে সম্মত হন।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং সিঙ্গাপুরের পরিবহন ও বাণিজ্য সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী এস ইসওয়ারান বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনার সুবিধার্থে দুই দেশ একটি সহযোগিতা স্মারক (এমওসি)সই করেছেন।

এফটিএ-র দিকে এমওসিকে সইটিকে গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করে মন্ত্রীরা বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের উপযুক্ত অংশ হিসেবে স্বাগত জানান।