টানা বৃষ্টিতে ফের জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে সিলেট নগরে। নগরের বেশিরভাগ সড়কেই এখন জলবদ্ধতা। এছাড়া কিছু এলাকার বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে।
রোববার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় সিলেটে বৃষ্টি হয়েছে ১৩০ মিলিমিটার। এ বর্ষণ আরও অন্তত পাঁচ দিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে নদ-নদীর পানি। যদিও এখন পর্যন্ত সিলেটের কোথাও নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।
ভারী বৃষ্টিতে নগরের জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা এলাকার সড়ক থেকে শুরু করে মদিনা মার্কেট, আখালিয়া, সুবিদবাজার, জালালাবাদ, হযরত শাহজালাল (র.) মাজার এলাকার পায়রা ও রাজারগল্লি, বারুতখানা, হাওয়াপাড়া, দাড়িয়াপাড়া, যতরপুর, উপশহর, ছড়ারপাড়, তালতলাসহ বেশ কিছু নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
উপশহর, তেররতন, শাহী ঈদগাহ, জামতলা, মনিপুরী রাজবাড়ি, কানিশাইল, ঘাসিটুলাসহ অনেক এলাকার বাসাবাড়ি ও দোকানপাটেও পানি ঢুকে যায়।
এদিকে ঈদের ছুটি শেষে রোববারই প্রথম খুলেছে অফিস-আদালত। আর অফিস খোলার প্রথমদিনই বৃষ্টি-জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে। এতে নগরের যান চলাচলও ছিল অপেক্ষাকৃত কম।
এর আগে, জুনের মাঝামাঝিতে বৃষ্টিতেও জলাবদ্ধতা দেখা দেয় সিলেট নগরে। ভারী বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ সিলেট নগরে দীর্ঘদিনের।
নগরের তালতলা এলাকার ব্যবসায়ী হাসান আহমদ বলেন, ‘জলবদ্ধতার কষ্ট তো আছেই, কিন্তু যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে বন্যা হয় যায় কী না এই আতংকে আছি। গত বছরের বন্যার ক্ষতিই এখন পর্যন্ত কাটিয়ে উঠতে পারিনি।’
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন জানান, শনিবার সকাল ৬ থেকে রোববার সকাল ৬ পর্যন্ত সিলেটে ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২২ মিলিমিটার ও দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। আগামী ৫ দিন সিলেটে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টি ও ঢলের কারণে সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারাসহ প্রধান নদীগুলোর পানি বাড়ছে। তবে পানি এখন পর্যন্ত বিপৎসীমার নিচে রয়েছে।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, হাসপাতালের পিছনের নালা উপচে পানি ঢুকে মেডিকেল কলেজের নিচতলা ডুবেছে। গত বছর বন্যার সময় পানি ঢুকতে দেখে সিটি করপোরেশন বা সংশ্লিষ্টরা যদি কার্যকর পদক্ষেপ নিতেন তবে এবার এমন পরিস্থিতি হতো না। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে সকল ভবনে পানি আরও বাড়বে। তখন হয়তো বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক নাও থাকতে পারে।