ন্যূনতম ৩০০ টাকা মজুরি করার দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছে সিলেটের চা-শ্রমিকরা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে তারা সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ-মিছিল ও সমাবেশ করেন।
রোববার সকাল ১১টা থেকে সিলেট ভ্যালির চা-শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন এবং দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সিলেট বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দিতে থাকেন তারা। এসময় সড়কের দুইপাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয় যানজটের।
পরে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীর আশ্বাসে ২৪ ঘণ্টার জন্য সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করে লাক্কাতুরা চা বাগানের দুর্গা মণ্ডপের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের দাবি মানা না হলে আগামীকাল সোমবার থেকে ফের সড়ক অবরোধ করবেন বলে জানান তারা।
এদিকে আন্দোলন শুরুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন চা-শ্রমিকের সন্তান ও আন্দোলনকারী দেবাশীষ গোয়ালা। তিনি জানান, চা-বাগান মালিকরা আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করছেন। ১২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করে আমাদের দয়া দেখাচ্ছেন তারা। কিন্তু আমরা কারও দয়া চাই না। আমরা আমাদের ন্যায্য দাবি চাই। বর্তমান যুগে কোথাও এই মজুরি নাই। এছাড়া যেখানে শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়ন হয় নাই, সেখানে প্রত্যাহার নয় প্রত্যাখ্যান হওয়া জরুরি। তাই আমরা আমাদের দাবিতে অনড় অবস্থায় আবারও মাঠে নেমেছি।
এর আগে চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশ চা সংসদের বৈঠক হয়। সেখানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার প্রস্তাব দেন শ্রমিক নেতারা। কিন্তু মালিকপক্ষ ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩৪ টাকা মজুরির প্রস্তাব দেয়। যে কারণে শ্রমিক নেতারা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপর আরও এক মাস পার হয়ে যায়। মালিকপক্ষ কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।
এর প্রতিবাদে ৯-১২ আগস্ট পর্যন্ত টানা চার দিন প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ধর্মঘট পালন করেন চা-শ্রমিকরা। তারপরও মালিকপক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কথা না বলায় ১৩ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের সব চা-বাগানে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা।