প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

বন্যায় বিপর্যস্ত জনজীবন

সিলেটের জন্য অপেক্ষা করছে আরও বড় বিপর্যয়

সিলেট প্রতিনিধি
১৯ মে ২০২২ ১২:৩৪:৩৩ | আপডেট: ১ year আগে
সিলেটের জন্য অপেক্ষা করছে আরও বড় বিপর্যয়

অনেক আগে থেকেই সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞ আর পরিবেশবাদীরা। তারা বলে আসছেন, নির্বিচারে পাহাড়-টিলা কাটা, জলাশয় ভরাট আর বৃক্ষনিধনের মাধ্যমে প্রকৃতিকন্যা সিলেটকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটি জোনে পরিণত করা হয়েছে। গত বছর একদিনে সাত বার ভূমিকম্পের সাক্ষি হয়েছে ভূমিকম্পের প্রবল ঝুঁকির মধ্যে থাকা দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। এবার পড়েছে ভয়াবহ বন্যার মুখে।

মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত সিলেটে আকস্মিক পাহাড়ি ঢল নিয়মিত ঘটনা হলেও এবারের বন্যা জেঁকে বসেছে সিলেটে। টানা ভারি বৃষ্টি আর উজানি ঢলে বিপর্যস্ত পুরো সিলেট। জেলার প্রায় দশ লাখ মানুষ পানিবন্দি। পাঁচ দিন ধরে পানিবন্দি সিলেট নগরীরও কয়েক হাজার মানুষ। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। সাথে বিদ্যুৎ বিভ্রাট তৈরি হওয়ায় অনেকে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে ওঠেছেন।

বুধবার রাত পর্যন্ত পানি বেড়েছে। পাড়া মহল্লায় ঢুকে গেছে বন্যার পানি। অনেক সড়কে কোমর পর্যন্ত পানির ঢল। জেলায় দুই শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্রের সাথে নগরীতেও ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকটে পড়া পরিবারগুলো আশ্রয় নিয়েছে এসব কেন্দ্রে।

বুধবার দুপুরে সিলেট নগরীর চালিবন্দরে একটি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনে যান পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো এনামুর রহমান।
সেখানে ছিলেন সিলেটের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন।

সিলেটে এবারের বন্যা নিয়ে আলাপকালে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটে সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কীম বলেন, “ভারি বৃষ্টিপাত বা উজানি ঢলে সিলেট বিপর্যয়ে পড়বে এটা জানা কথা। নদীগুলোর দুরাবস্থার কথা তুলে তিনি বলেন, শুকনো মৌসুমে নদীতে বড় বড় চর জাগে। অসংখ্য নদী মরে গেছে। সিলেট নগরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ২৬টি ছোট-বড় পাহাড়ি ছড়া ও খাল দিয়ে দৈনিক অর্ধশত টন পলিথিন ও প্লাস্টিকযুক্ত বর্জ্য সুরমা নদীতে পড়ছে। এসব বর্জ্যে সুরমা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলের সাথে আসছে হাজার হাজার টন মাটি ও বালু। খুব স্বাভাবিকভাবেই তাই নদী উপচে পানি প্রবেশ করছে জনপদে। নাগরিক বর্জ্য, বিশেষ করে প্লাস্টিকজাত দ্রব্য সুরমা নদীর তলদেশে শক্তভাবে বসে আছে। তিনি বলেন, নদীরক্ষা বাঁধের চেয়ে প্রয়োজন নদীর নাব্যতা ফেরাতে খনন এবং নদী দূষণ ও ভরাট প্রতিহত করা।”

বৃহস্পতিবার থেকে সিলেটে পানি কমার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। বুধবার দুপুরে নিজেদের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানিয়েছে তারা।

বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে সুরমা নদীর জলস্তর বুধবার সকাল বেলার তুলনায় ০-২০ সেমি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাইয়িদ চৌধুরী জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। তাছাড়াও ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বৃষ্টিও কমছে না। তাই পাহাড়ি ঢল নামছে এবং আমাদের দেশেও পানি বাড়ছে।