বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের জিরো পয়েন্টের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া মর্টার শেল বিস্ফোরণে ১৭ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা কিশোর নিহত ও পাঁচ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে ৩৫ নম্বর পিলারের কাছে স্থলমাইন বিস্ফোরণে এক কিশোরের পা উড়ে গেছে। ফলে ওই এলাকায় রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছে।
নিহত কিশোর মো. ইকবাল জিরো পয়েন্টের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মনির আহমেদের ছেলে। আহতরা হলেন- নবী হোসেন (২২), ভুলু (৪৪) সাজিয়া জান্নাত (১০), আনাচ (১২) ও সাবেকুন্নাহার।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন তিবরিজির মতে, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরপর ৪টি মর্টার শেল পড়ে। একটি বিস্ফোরণে ইকবাল ঘটনাস্থলেই নিহত এবং অন্য পাঁচ জন আহত হন। আহতদের উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
এ ঘটনার পর জিরো পয়েন্ট ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের ভূখণ্ডে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং বিজিবি সদস্যরা এলাকায় টহল দিচ্ছে।
জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভীন জানান, নাইক্ষংছড়ি উপজেলার ধুনধুম এলাকায় একটি এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র রয়েছে। কেন্দ্রটি পরিবর্তন করে উখিয়ার কতুপালং কেন্দ্রে নেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার দুপুরে বান্দরবানের নাইক্ষংছড়ি উপজেলায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে এক ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর যুবক গুরুতর আহত হন। সীমান্তের ৩৫ নম্বর পিলারের কাছে স্থলমাইন বিস্ফোরণে এক কিশোরের পা উড়ে গেছে। আহত উনুসাই তঞ্চঙ্গ্যা (২২) উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, জিরো লাইনে গরু আনতে গেলে তুমব্রু হেডম্যান পাড়ার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পুতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে যুবক উনুসাই গুরুতর আহত হন।
ঘুনধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, বিস্ফোরণে উনুসাই তঞ্চঙ্গ্যা তার বাম পা হারিয়েছেন। এ ঘটনার পর পরই তাকে দ্রুত কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিএমসিএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এই পর্যন্ত ১২টি মর্টার শেল নিক্ষেপ করেছে। এ ঘটনায় মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে, গত এক মাস ধরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু ঘুনধুম রেজু আমতলিসহ ৩৯ নম্বর পিলার থেকে শুরু করে ৪০ নম্বর পিলার পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মির সাথে দেশটির সেনাবাহিনী ও সীমান্তরক্ষী বিজিপির মধ্যে ব্যাপক সংঘটিত চলছে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ ভূখণ্ডে মায়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া এ পর্যন্ত ১২টি মর্টার সেল এসে পড়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ঘটনার জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছে।