আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের কাজ আগামী জুন মাসেই শেষ হবে। এরপর ট্রায়াল রান শেষে আগামী সেপ্টেম্বরেই রেলপথটি খুলে দেওয়া হবে। ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রেলপথটি উদ্বোধন করবেন। প্রথমে রেলপথ দিয়ে পণ্যবাহী ট্রেন চলবে। দুদেশের মানুষই এ রেলপথের সুবিধা পাবেন বলে জানিয়েছেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার শিবনগর এলাকায় আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রেলপথমন্ত্রী। এর আগে মন্ত্রী ট্রেনে করে চট্টগ্রাম থেকে আখাউড়ায় আসেন। এখান থেকে সড়ক পথে আখাউড়া মনিয়ন্দ এলাকার শিবনগর সীমান্ত পর্যন্ত রেলরুট ঘুরে দেখেন।
মন্ত্রী বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে এই (আখাউড়া-আগরতলা) রেলপথটি উদ্বোধন করা হবে। সেই লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে রেলপথটির ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। কয়েক কিলোমিটার রুটে রেললাইন বসানো বাকি আছে। রক্ষণাবেক্ষন শেষে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নিয়মিত ট্রেন চলাচল শুরু করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, উদ্বোধনের পর শুরুতে মিটার গেজে ট্রেন চলাচল করবে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলরুটে ডাবল রেললাইন বসানোর কাজ প্রায় শেষের দিকে। তবে আখাউড়া থেকে টঙ্গী পর্যন্ত মিটার গেজ রেললাইন। এই রেলরুটে শিগগিরই ডুয়েল গেজ রেল বসানো হবে। তখন মিটার এবং ব্রডগেজ ট্রেন চলাচল করতে পারবে। আর তখনই আগরতলা-কলকাতা সরাসরি ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
রেলের উন্নয়নের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, রেলের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আরও ৪-৫টি নতুন ট্রেন দেওয়া হবে। আমরা আশা করছি আগামী জুনের মধ্যে আখাউড়া-লাকসাম ডাবল লাইন নির্মাণ কাজ শেষ হবে। অর্থাৎ ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ডাবল লাইন হয়ে যাচ্ছে। ডাবল লাইন হয়ে গেলে নতুন যে মিটারগেজ কোচ এসেছে, সেগুলো সংযুক্ত করে বেশ কয়েকটি নতুন ট্রেন আমরা দেব।
ভারতের নয়াদিল্লির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের বাংলাদেশ পরিচালক শরৎ শর্মা বলেছেন, ৮০ ভাগ কাজ শেষে হয়েছে। সব উপকরণই এসে গেছে। এখন রাত-দিন কাজ চলছে। জুনের মধ্যেই ট্রায়াল রান করা হবে।
তিনি বলেন, ছয় দশমিক শূন্য নয় কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ হচ্ছে। এরই মধ্যে তিন দশমিক শূন্য দুই কিলোমিটার রেলপথ বসানো হয়ে গেছে। এই প্রকল্পে দুইশো চল্লিশ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। পাঁচ বছরে নির্মাণ উপকরণের দাম বাড়লেও প্রকল্প ব্যয় বাড়ানো হয়নি।
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক আবু জাফর মিয়া ও প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি হেড শরৎ শর্মা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রায় সাড়ে ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ প্রকল্পটির কাজ ২০১৮ সালের জুলাইয়ে শুরু হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রেললাইন প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন। ১৮ মাস মেয়াদী প্রকল্পটি প্রায় পাঁচ বছর পর শেষ হতে চলেছে। ভারতের নয়াদিল্লির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এ প্রকল্পের কাজ করছে।
