প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট জটিলতায় বাড়ছে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ মার্চ ২০২৩ ০৯:২৯:৩৪ | আপডেট: ২ years আগে
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট জটিলতায় বাড়ছে ভোগান্তি

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন ও নবায়নের জন্য অনলাইনভিত্তিক কার্যক্রম চালু করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। প্রতিদিন শত শত হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ব্লাড ব্যাংকের মালিক এই প্রক্রিয়ায় সেবা নিয়ে থাকেন। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়বেসাইটের জটিলতায় সেই কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে। এতে করে চরম ভোগান্তি আর হয়রানির মুখে পড়ছেন সেবাপ্রত্যাশীরা। তবে ভোগান্তি নিরসনে কোনো উদ্যোগের কথা জানেন না সংশ্লিষ্টরা।

নিবন্ধন পাওয়ার পরও নানা ঘাটতি থাকায় গত বছরের শেষের দিকে খুলনার বেসরকারি একটি হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়া হয়। শর্ত পূরণ করায় আবারও নিবন্ধন পেতে আবেদন করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু চার দিন ধরে অনলাইনে চেষ্টার পরও আবেদন করতে পারেননি প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. আল আমিন। সমস্যার সমাধান পেতে গতকাল রোববার অধিদপ্তরের আসেন তিনি।

এ সময় আল আমিন বলেন, ‘অনলাইনে এখন সব আবেদন করা যায়। কিন্তু ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারছিলাম না। তাই সরাসরি এসেছি। এখানে এসেও কোনো লাভ হচ্ছে না। কারণ কী সমস্যা কেউই বলতে পারছে না। কবে সমাধান হবে তাও জানি না।’

একই কারণে অধিপ্তরের এক মাথা থেকে আরেক মাথায় দৌড়াচ্ছিলেন মো. ইলিয়াস হোসেন। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এই মালিক বলেন, ‘আবেদন করেছি, কিন্তু কী অবস্থায় আছে জানতে পারছি না। তাই অধিদপ্তরে এসেছি। কিন্তু সমাধান পাচ্ছি না। দু-একদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে বলে আশ্বস্ত করেছেন কর্মকর্তারা।’

জানা গেছে, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নতুন আবেদন ও নবায়নের পাশাপাশি আবেদন কার্যকর হয়েছে কিনা, কোন প্রক্রিয়ায় গিয়ে আটকে আছে সেবাপ্রত্যাশীরা তা জানতে পারেন। এমনকি দেশে বৈধ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কত সেটিও জানতে পারেন সাধারণ মানুষ।

তবে সাইটে জটিলতা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তাই। মহাপরিচালক ও অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক এ ব্যাপারে সবকিছু জানেন বলে দাবি তাদের। তারা বলছেন, পরিচালক ও মহাপরিচালক ছাড়া এ ব্যাপারে কারও কাছে কোনো তথ্য নেই।

অভিযোগ রয়েছে, অধিদপ্তরের হাসপাতাল শাখার নতুন পরিচালক যোগদান করার পর থেকে সাধারণ মানুষ বৈধ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দেখতে পারছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ওয়েবসাইট হ্যাং হয়েছে নাকি সংস্কার চলছে ঊর্ধ্বতন কর্তারা আমাদের কিছুই জানায়নি। কবে ঠিক হবে স্বয়ং আমরাই জানি না, মানুষকে কী তথ্য দেব। বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে কিনা সে ব্যাপারেও আমাদের কিছু জানানো হয়নি। তাই ভোগান্তির শিকার হলেও আমাদের করার কিছু থাকছে না।’

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ প্রতিবেদন লেখার সময়ে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির পথে ছিলেন অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. শেখ দাউদ আদনান। ফোনে না পাওয়ায় হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তা দেখেও জবাব দেননি তিনি।

পরে অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (এমআইএস) পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহাদাত হোসেনও কিছু জানেন না বলে জানান। অধিদপ্তরের উপপরিচালক (হাসপাতাল) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। জেনে আগামীকাল (আজ) জানাতে পারব।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, নানা প্রয়োজনে প্রতিদিন অন্তত ৩শ মানুষ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন। কিন্তু বন্ধের পর থেকে যাদের কাছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নম্বর আছে তারা যোগাযোগ করতে পারছেন, আর যাদের কাছে নেই তারা সরাসরি অধিদপ্তরে চলে আসছেন।

এ ব্যাপারে জানতে ফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে পাওয়া সম্ভব হয়নি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে জটিলতা সম্পর্কে জানতে চেয়ে খুদে বার্তা পাঠালে, তিনি শুধু বলেন, ‘বিষয়টি দেখছি।’