ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় কারাগারে আটক থাকা প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে ২০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে তার আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার আদালতে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার বিষয়টি জানিয়েছেন।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সিএমএম আদালতে আনা হয় শামসুজ্জামানকে। পরে রমনা থানা-পুলিশ তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে। সাংবাদিক শামসুজ্জামানের জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তার আইনজীবী। ওই দিন উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
শামসুজ্জামানকে ওই দিন আদালত থেকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। পরদিন শুক্রবার সেখান থেকে তাকে গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়। এর পরদিন শনিবার আবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।
এর আগে, গত বুধবার ভোর চারটার দিকে সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের আমবাগান এলাকায় কয়েকজন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্য পরিচয়ে শামসুজ্জামানের থাকার কক্ষ তল্লাশি করেন। এসময় একটি ল্যাপটপ, দুটি মুঠোফোন ও একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্কসহ শামসুজ্জামানকে নিয়ে যান তারা।
বাসা থেকে তুলে নেয়ার ২০ ঘণ্টার বেশি সময় পর গত শুক্রবার দিবাগত রাতে শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানকে এই মামলার প্রধান আসামি করা হয়। তিনি রোবাবর এই মামলায় ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন। এই মামলার বাদী আইনজীবী আবদুল মালেক (মশিউর মালেক)। তিনি নিজেকে হাইকোর্টের আইনজীবী পরিচয় দিয়েছেন।
২৬ মার্চ প্রথম আলো অনলাইনের একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে প্রকাশের সময় দিনমজুর জাকির হোসেনের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি ‘কার্ড’ তৈরি করা হয়। সেখানে উদ্ধৃতিদাতা হিসেবে দিনমজুর জাকির হোসেনের নাম থাকলেও ছবি দেয়া হয় একটি শিশুর। পোস্ট দেয়ার পর অসংগতি নজরে আসে এবং দ্রুত তা প্রত্যাহার করা হয়। পাশাপাশি প্রতিবেদন সংশোধন করে সংশোধনীর বিষয়টি উল্লেখসহ পরে আবার অনলাইনে প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনের কোথাও বলা হয়নি যে উক্তিটি ওই শিশুর; বরং স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছে, উক্তিটি দিনমজুর জাকির হোসেনের।
এ ঘটনার জেরে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ১৫ মিনিটে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, থানায় নথিভুক্ত হওয়া এজাহার অনুযায়ী মামলাটি হয়েছে। বাদীর পরিচয় লেখা হয়েছে, তিনি ঢাকার কল্যাণপুরের বাসিন্দা। তার ফেসবুক পেজের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, তিনি যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক। তিনি আগে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।