প্রচ্ছদ ›› মতামত-বিশ্লেষণ

গ্রাহকদের নিরাপত্তার জন্য নিরাপদ প্যাকেজিং ইংক

যতীন টাক্কার
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:০৬:২৬ | আপডেট: ১ year আগে
গ্রাহকদের নিরাপত্তার জন্য নিরাপদ প্যাকেজিং ইংক
ছবি- ফুড সেফটি

প্রতিযোগিতামূলক বাজারে নিজেদের পণ্যকে আলাদা করে তুলে ধরার ক্ষেত্রে প্যাকেজিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি প্যাকেজিং পণ্যকে শারীরিক, রাসায়নিক ও অণুজীবঘটিত ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। তবে অনেকেই জানেন না যে, এই প্যাকেজিং উপাদানের ফলে রাসায়নিক দূষণেরও সৃষ্টি হতে পারে। যার কারণে খাদ্যের মানের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তার ওপরও প্রভাব পড়ে।

প্যাকেজিং উপাদানগুলোর মধ্যে পণ্য ও গ্রাহকের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলতে পারে এমন একটি উপাদান হলো প্যাকেজিং ইংক।

বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদানের মিশ্রণে প্রতিটি প্যাকেজিং ইংক তৈরি হয়। এদের মধ্যে কিছু কিছু রাসায়নিক ক্ষতিকর হতে পারে এবং খাদ্যের সংস্পর্শে আসলে তা খাদ্যের সাথে মিশে যাওয়ারও ঝুঁকি থাকে। এই রাসায়নিকগুলো বিষাক্ত, কারসিনোজেনিক, মিউটাজেনিক, রিপ্রো-টক্সিক এমনকি এন্ড্রোক্রাইন ডিজরাপটরও হতে পারে। মাইগ্রেশন নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্যাকেজিং ইংকের রাসায়নিক দূষকগুলো খাদ্যের সাথে মিশে যেতে পারে।

নিরাপদ, নীতিমালা পালনকারী ও মাইগ্রেশন-অপটিমাইজড কালি

প্যাকেজিং নিরাপত্তা বিষয়ক নীতিমালা তৈরির ক্ষেত্রে এই তিনটি স্তম্ভ গুরুত্বপূর্ণ:

•আইনি শর্ত
•ব্র্যান্ড মালিকদের শর্ত
•স্ব-প্রতিশ্রুতি

কালি প্রস্তুতকারক, অ্যাডহেসিভ প্রস্তুতকারক ও সাবস্ট্রেট প্রস্তুতকারকসহ প্রতিটি সাপ্লাই চেইন পার্টনারকে তাদের প্যাকেজিং কাঠামোর উপাদানগুলোর জন্য একটি নির্দিষ্ট এলাকায় প্রযোজ্য আইনি শর্তগুলো সম্বন্ধে সচেতন হতে হবে। পণ্যের মান বজায় রেখে নিরাপদ পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া তৈরি করতে হবে। প্যাকেজিং উপাদান রপ্তানির ক্ষেত্রে আমদানিকারী দেশের আইনি শর্তগুলোকেও বিবেচনা করতে হবে।

বৈশ্বিক উপস্থিতি আছে এমন ব্র্যান্ড মালিকদের অনেক সময় দেশের আইনি শর্তের বাইরে গিয়েও প্যাকেজিং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নিজস্ব কিছু শর্ত থাকে। ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে এটি বিশেষভাবে প্রযোজ্য। সাপ্লাই চেইন পার্টনারদের এসব শর্তের বিষয়ে সচেতন হতে হবে এবং এসব শর্তের সাথে সামঞ্জস্য রেখে নিজেদের পণ্যের মান উন্নত করতে হবে। সব এলাকায় গ্রাহকদের একই মানের নিরাপত্তা প্রদান করার জন্য এটি জরুরি।

প্রতিটি সাপ্লাই চেইন পার্টনার নিজেদের পণ্য ও এর গঠনের জন্য দায়ী। সুতরাং, শুধু নিরাপদ রাসায়নিক দিয়ে তৈরি নিরাপদ পণ্য সরবরাহ করা সাপ্লাই চেইন পার্টনারদের নৈতিক দায়িত্ব। পাশাপাশি, সমাজের উপকারের জন্য এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ ও ব্র্যান্ড মালিকদেরও নিয়মিত অবহিত করা উচিত।

প্রতিটি প্যাকেজিং কাঠামো সাবস্ট্রেট, কালি ও বার্নিশসহ বিভিন্ন উপাদানের মিশ্রণে তৈরি, তাই বিচ্ছিন্ন কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে নীতিমালা মেনে চলার বিষয়টি অর্জন কখনো সম্ভব হয় না। অতএব, শর্ত এবং প্যাকেজিং কাঠামোর পৃথক উপাদানগুলোর ঝুঁকি মূল্যায়ন বিষয়ে সাপ্লাই চেইনজুড়ে উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ যোগাযোগ থাকা উচিত।

বাংলাদেশের বাজারকে প্যাকেজিং নিরাপত্তা সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখতে হবে। একইসঙ্গে প্যাকেজিং নিরাপত্তা ও প্যাকেজিং ইংক বিষয়ে নীতিমালা তৈরি করা খুব জরুরি। রাসায়নিক দূষকের মধ্যে এমন সব রাসায়নিক থাকতে পারে যা কারসিনোজেনিক, মিউটাজেনিক, রিপ্রোটক্সিক এবং এন্ড্রোক্রাইন ডিজরাপটর। নিরাপদ প্যাকেজিং সরবরাহ করে এসব দূষক থেকে গ্রাহকদের মুক্ত রাখার জন্য সাপ্লাই চেইনকে ধাপে ধাপে একত্রে কাজ করতে হবে।

লেখক: যতীন টাক্কার, হেড-প্রোডাক্ট সেফটি অ্যান্ড রেগুলেটরি, সেগওয়ার্ক ভারত