বর্তমান সরকারের অধিনে নির্বাচনে না যাবার বিএনপির বক্তব্য প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘গাধা জল ঘোলা করে খায়। ২০১৮ সালেও গাধা জল ঘোলা করে খেয়েছিল, নির্বাচনের বহু আগে থেকে আমরা সরকারের অধিনে নির্বাচনে যাবো না বলে এসেছিলো। পরে গাধা জল ঘোলা করে খেয়েছে, নির্বাচনে গেছে।’
রোববার সচিবালয়ে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৭ উপলক্ষে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, “এবারও তারা বলছে যাবে না। বিএনপির অনেক নেতাকে আমি জানি, শুনি, তারা নির্বাচনে যেতে উদগ্রীব হয়ে আছেন। মির্জা আলমগীর যাই বলুন, বিএনপি নেতারা উদগ্রীব হয়েই বসে আছেন।”
এর আগে সকালে জাতীয় জাদুঘরে ‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে যোগ দেয়ার প্রসঙ্গ টেনে হাছান মাহমুদ বলেন, “আমি একটু আগে সেই প্রোগ্রাম থেকে এসেছি, যেখানে বিএনপি-জামাতের অগ্নিসন্ত্রাস, ‘নৈরাজ্যের শিকার, নিহতদের পরিবার এবং আহতদের আর্তনাদ পুরো মিলনায়তনকে কাঁদিয়েছে।
তিনি বলেন, “বিদেশি কূটনীতিকরা সেখানে ছিলেন, তারা কেঁদেছেন, আমি নিজে কাঁদতে বাধ্য হয়েছি, সাংবাদিকরা কেঁদেছে, প্রধানমন্ত্রী সেখানে তারও চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।”
১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমান ‘হাজার হাজার’ সেনাসদস্যকে বিনা বিচারে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, “জামাতকে সাথে নিয়ে যারা অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্য করেছিল বিএনপি সেই দল।
তথ্যমন্ত্রী জানান, “যারা মাঠে গিয়ে বোমা নিক্ষেপ করেছে শুধু তারা নয়, এগুলোর পেছনে অর্থায়ন আছে, হুকুমদাতা আছে, বিএনপির হুকুমদাতা আর অর্থদাতার বিচারের আওতায় আনতে হবে। এটি সময়ের দাবি এখন এবং যাদের আর্তনাদ শুনেছি তাদের দাবি।”
এবারও বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য হিসাবে মিশরে শুরু হওয়া কপ-২৭ সম্মেলনে যাচ্ছেন সাবেক পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অসহায় শিকার একটি দেশ। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আমাদের কোনো ভূমিকা নেই। আমাদের দেশে আজ থেকে ১২-১৩ বছর আগে জনপ্রতি প্রতিবছর গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ ছিলো ০.২ টন। সেটা একটু বেড়ে এখন ০.৬ টন।
তিনি আরও বলেন, “আর অন্যদিকে উন্নত দেশগুলোতে জনপ্রতি প্রতিবছর গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ ইউরোপে ১০ টনের বেশি, আমেরিকায় ১৫ টন বা আরও বেশি। এবং দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এখন এই মাত্রা ৪-৫ টনে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই তুলনায় আমাদের ক্ষতিকর ভূমিকা নেই, কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব আমাদের ওপর অন্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি পড়ছে।”
যুদ্ধ বন্ধ করে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ভূমিকা রাখার আহ্বান বাংলাদেশ এবারের সম্মেলনে জানাবে বলে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের পক্ষে এবারের মূল বক্তব্য থাকবে যে, ‘দয়া করে যুদ্ধটা বন্ধ করুন, একে অপরকে ধ্বংস করার পরিবর্তে সবাই মিলে পৃথিবীটাকে রক্ষা করুন’। দ্বিতীয়ত, আমরা যারা জলবায়ু পরিবর্তনের অসহায় শিকার, আমাদেরকে যেহেতু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, প্রতিশ্রুত সাহায্য করতে হবে। আজকে থেকে শুরু হওয়া এবারের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে এই বক্তব্যগুলোই তুলে ধরব।”
ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মাসুদ উল হক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।