প্রচ্ছদ ›› রাজনীতি

তারেক-জোবায়দার মামলায় আরও ৫ জনের সাক্ষ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৪ জুন ২০২৩ ১৯:৪৬:৫৮ | আপডেট: ২ years আগে
তারেক-জোবায়দার মামলায় আরও ৫ জনের সাক্ষ্য
(ফাইল ছবি)

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে আরও পাঁচজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

তারা হলেন সোনালী ব্যাংক নৌ সদর দপ্তর শাখার ম্যানেজার খন্দকার শহিদুর রহমান, ইন্টারন‍্যাশনাল ট্রাভেল কর্পোরেশনের চেয়ারম‍্যান সেলিম ভূঁইয়া, ইন্টারন‍্যাশনাল ট্রাভেল কর্পোরেশনের ম‍্যানেজার (একাউন্টস অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) শহীদুল ইসলাম, ইন্টারন‍্যাশনাল ট্রাভেল কর্পোরেশের সেলস ম‍্যানেজার এ কে এম হামিদুর রহমান ও ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রকাশনা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার।

রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন। তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আদালত আগামীকাল সোমবার দিন ধার্য করেছেন। দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বিষয়টি জানিয়েছেন। মামলাটিতে চার্জশিটভুক্ত ৫৬ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।

এদিকে আজও আদালতে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। এ মামলার প্রতিনিয়ত সাক্ষ্য গ্রহণের প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। আদালতে সাক্ষ্য চলাকালে বিকেল ৩টায় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা মিছিল নিয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণ পর তারা সেখান থেকে নেমে গিয়ে আদালতের সিঁড়িতে অবস্থান নেন। সেখানে দাঁড়িয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতারা।

এর আগে গত ২১ মে মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক জহিরুল হুদার সাক্ষ্যের মাধ্যমে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

এর আগে গত ৩০ ও ৩১ মে সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ রাখায় বিএনপি দলীয় আইনজীবীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ দলীয় আইনজীবীদের আদালত কক্ষে এবং সামনে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতের নাজির কোতোয়ালি থানায় একটি জিডিও করেছেন। সেখানে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহম্মেদ তালুকদারসহ ২৮ আইনজীবীর নাম উল্লেখ করে এবং বিএনপিপন্থি ১০০ থেকে ১৫০ অজ্ঞানতামা আইনজীবীর কথা উল্লেখ রয়েছে।

মামলায় গত ২১ মে একই আদালত মামলার বাদী দুদকের উপপরিচালক ড. মোহাম্মদ জহুরুল হুদার সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। এর আগে গত ১৩ এপ্রিল এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন।

চলতি বছরের ২৬ জুন হাইকোর্ট তারেক ও জোবায়দাকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করে ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকার দুর্নীতি মামলা দায়ের ও তার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে করা পৃথক রিট আবেদন খারিজ করে দেন।

রিট খারিজ করে দেওয়া রায়ে হাইকোর্ট একইসঙ্গে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দায়ের করা এ মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতকে যত দ্রুত সম্ভব বিচার কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দেন। এছাড়া ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে এ রায় পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে মামলার রেকর্ড ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠাতে বলা হয়।

ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তার মা অর্থাৎ তারেক রহমানের শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়।

২০০৮ সালে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এরপরই মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন জোবায়দা। ওই বছরই এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন।

চিকিৎসক জোবাইদা বর্তমানে স্বামী তারেকের সঙ্গে ১৩ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। জোবায়দার বিরুদ্ধে দদুক মামলাটি করেছিল সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে। তবে উচ্চ আদালতের নির্দেশে ২০০৮ সালে এর কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। এখন সেই বাধা কাটল।

নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান মাহবুব আলী খানের মেয়ে জোবায়দা ১৯৯৫ সালে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়েছিলেন। তার দুই বছর আগে তারেকের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক ২০০৮ সালে কারামুক্তির পর স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। ছুটি নিয়ে যাওয়ার পর আর কর্মস্থলে না ফেরায় ২০১৪ সালে জোবায়দাকে বরখাস্ত করে সরকার।