বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিএনপিসহ বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় জনগণ দীর্ঘদিন ধরে যে দাবি জানিয়ে আসছিল মার্কিন এ ভিসানীতিতে তার সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটেছে।’
বৃহস্পতিবার রাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য পরিবর্তিত ভিসানীতি প্রণয়নের পরিপ্রেক্ষিতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক পরিবর্তিত ভিসানীতি’ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। যা মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে গত ৩ মে, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন কর্তৃত্ববাদী সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছিল। ওই ভিসানীতির মূল প্রতিপাদ্য বিষয়, বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্যভাবে আয়োজন করার সব প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য এবং একই সঙ্গে ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো, জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার স্বাধীনতা ও অধিকার চর্চাকে সহিংসভাবে দমনের যে কোনো নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরকার অবস্থান নিয়েছে। এটি বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিরই সুস্পষ্ট প্রতিধ্বনি। বিএনপি মনে করে, মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিএনপিসহ বাংলাদেশের গণতন্ত্রপ্রিয় জনগণ দীর্ঘদিন ধরে যে দাবি জানিয়ে আসছিল মার্কিন এ ভিসানীতিতে তার সুস্পষ্ট প্রতিফলন ঘটেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে, বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের অধীনে কোনোভাবেই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। কেবলমাত্র একটি নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকারের অধীনেই তা সম্ভব। আর সে কারণেই বিএনপি দেশের সব গণতান্ত্রিক দল ও শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার আদায়ের লক্ষ্যে নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে চলছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা অত্যন্ত গভীরভাবে লক্ষ্য করছি যে, এ পরিবর্তিত মার্কিন ভিসানীতিতে শুধুমাত্র পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেই আওতাভুক্ত করা হয়নি, সুনির্দিষ্টভাবে বিচার বিভাগ, প্রশাসন, নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সরকারি জনবল, সাবেক ও বর্তমান সরকারি কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ যে বা যারা, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ব্যাহত করতে চেষ্টা করবে তাদের এবং তাদের পরিবারবর্গকে আওতাভুক্ত করা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, আমরা আবারও দাবি করি, অনির্বাচিত এই ফ্যাসিবাদী সরকার দেশে এবং বিদেশে তার ‘প্রত্যাখ্যাত অবস্থাকে’ অনুধাবন করে অবিলম্বে পদত্যাগ করবে এবং ভোটারবিহীন জাতীয় সংসদ বাতিল ঘোষণা করবে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করাই দেশবাসী ও আন্তর্জাতিক সকল মহলের দাবি ও প্রত্যাশা। চলমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক তথা জাতীয় সংকট থেকে মুক্তিলাভের এটাই একমাত্র পথ।