দীর্ঘ পাঁচ মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল ছাড়লেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে তিনি হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসার উদ্দেশে রওনা দেন।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে আছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীসহ দলের নেতাকর্মীরা।
আর বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবনে গেছেন দলের স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম ও বেগম সেলিমা রহমান।
এর আগে গতকাল বুধবার খালেদা জিয়াকে মেডিকেল বোর্ড সাময়িকভাবে বাসায় যাওয়ার ছাড়পত্র দেন। তবে লিভার সিরোসিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বাসায় চলবে।
বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম গতকাল বলেন, ম্যাডামকে বিকেলে বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে সাময়িকভাবে তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বোর্ড এ-ও সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, গুলশানের বাসায় ম্যাডামের চিকিৎসা দেবেন মেডিকেল বোর্ড। সেখানে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনিসহ নানা রোগে ভুগছেন। এরপর করোনায় আক্রান্ত হওয়াসহ বেশ কয়েকবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি।
সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৯ আগস্ট তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে তার পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়, কিন্তু কয়েক দফা আবেদনের পর সরকারের তরফ থেকে অনুমতি মেলেনি।
অবশেষে গত ২৭ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনা হয়। পরদিন এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার যকৃতের রক্তনালিতে সফল অস্ত্রোপচার করেন তারা। এরপর লিভার সিরোসিসজনিত জটিলতা কিছুটা উপশম হলেও তাকে হাসপাতালেই সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হয়।
সর্বশেষ গত ৯ জানুয়ারি বিকেলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কেবিন থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ার পর সন্ধ্যায় তাকে ফের কেবিনে আনা হয়। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।