সদ্য পদত্যাগকারী তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসানকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার জেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভা শেষে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তিনি জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।
সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ।
তিনি বলেন, বিকেল ৪টায় জেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জামালপুরের বকুলতলায় দলীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাতে এ সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগকে জানানো হবে, কেন্দ্র চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দলীয় ভাবমূর্তি বিনষ্ট, অগঠনতান্ত্রিক ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ডা. মো. মুরাদ হাসানকে অব্যাহতির এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দলীয় গঠনতন্ত্রের ৪৭(৯) ধারা মোতাবেক ডা. মুরাদকে অব্যাহতি প্রদান করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট চিঠি পাঠাবে জেলা আওয়ামী লীগ।
অবশ্য বিকেলে সচিবালয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগ থেকে ডা. মুরাদকে অব্যাহতি দেয়া হবে।
এর আগে দুপুরে চট্টগ্রাম থেকে ই-মেইলের মাধ্যমে সচিবালয়ে পদত্যাগপত্র পাঠান মুরাদ হাসান।
সম্প্রতি ফেসবুক লাইভে এক অনুষ্ঠানে এসে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমান ও নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন মুরাদ। সেই ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।
এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেত্রীদের নিয়েও আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের অভিযোগ ওঠে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে মুরাদের পদত্যাগ দাবি করেন ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন বর্তমান এবং সাবেক নেত্রী।
এরই মধ্যে রোববার মধ্যরাতে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে মুরাদ হাসানের আপত্তিকর ফোনালাপ ফাঁস হয়। মুহূর্তের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ভাইরাল হয়ে যায় রেকর্ডটি। ভাইরাল হওয়া সেই অডিওর সত্যতা নিশ্চিত করেন চিত্রনায়ক ইমন। তিনি জানান, ঘটনাটি দুই বছর আগের।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন।
মুরাদ হাসান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালেও তিনি একই আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে সরকার গঠনের সময় মুরাদ হাসানকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে ৫ মাসের মাথায় ওই বছরের ১৯ মে তার দপ্তর পরিবর্তন করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়।