প্রচ্ছদ ›› রাজনীতি

মতিঝিল, উত্তরায় বিএনপির মিছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:৩৩:৪২ | আপডেট: ২ years আগে
মতিঝিল, উত্তরায় বিএনপির মিছিল

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ দলের ১০ দফা দাবি আদায়ে পৃথক মৌন মিছিল করেছে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা।

শুক্রবার রাজধানীর মতিঝিল থেকে নয়া বাজার ও উত্তরার জসীম উদ্দিন থেকে পদযাত্রা শুরু করে বিএনপি।

আয়োজকরা জানান, বিদ্যুত-গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে দলের প্রতিবাদ, বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন এবং দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্যও এই পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করছে।

দলের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিকাল ৪টা ৫ মিনিটে মতিঝিল থেকে নয়াবাজার পর্যন্ত পদযাত্রা শুরু করে বিএনপি ঢাকা দক্ষিণ মহানগর।

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান অংশ নেন।

ফখরুল বলেন, মৌন পদযাত্রার মাধ্যমে তারা নগরবাসীকে বর্তমান সরকারের দুঃশাসন ও দমনমূলক কর্মকাণ্ড এবং দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে জেগে ওঠার ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার বার্তা দেবে।

বিএনপি নেতা বলেন, ‘সরকার দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তারা দেশ ও এর প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে তাদের সামিট ফর ডেমোক্রেসিতে আমন্ত্রণ জানায়নি। এটা লজ্জার বিষয়।’

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মূলত একটি 'সন্ত্রাসী দল' এবং সব সময় শক্তির জোরে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে চায়। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি ও দেশের মানুষ আর নির্বাচনে যাবে না।

ফখরুল বলেন, সাধারণ মানুষ ক্রমশ দরিদ্র হচ্ছে আর ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা দুর্নীতি ও লুটপাট করে ধনী হচ্ছে।

বিএনপি নেতা বলেন, সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে বেআইনিভাবে ক্ষমতায় বসেছে। ‘সরকারের নির্দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ‘তারা (সরকার) এখন পুলিশকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা ও দমন-পীড়ন করছে।’

তিনি আরও বলেন, বর্তমান জাতীয় দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দেশের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব না হওয়ায় সংবিধান সংশোধন করতে হবে।

এর আগে বেলা পৌনে তিনটার দিকে উত্তরা থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত মিছিল শুরু করেন ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা।

আবদুল মঈন খান ও আবদুল আউয়াল মিন্টুসহ দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

মিছিল বের করার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মোশাররফ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনের কারণে জনগণ কঠিন সময় পার করায় জনগণের দাবি আদায়ে এবং জনদুর্ভোগের প্রতিবাদে তাদের দল বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নেমেছে।

তিনি বলেন, তাদের কর্মসূচি ব্যাপক জনসমর্থন পাচ্ছে, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ক্ষমতাসীন দল পাল্টা কর্মসূচি পালন করছে। রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করছে।

বিএনপি নেতা বলেন, জনগণ ও বিদেশিরা এখন বুঝতে পারছে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। ‘এ কারণেই বিদেশি নেতা এবং রাষ্ট্রদূতরা সরকারকে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্পর্কে পরামর্শ দিচ্ছেন।’

মোশাররফ দলীয় নেতাকর্মীদের কোনো উসকানিতে সাড়া না দিয়ে অতীতের মতো শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।

ব্যানার, জাতীয় ও দলীয় পতাকা, ফেস্টুন ও দলের শীর্ষ নেতাদের ছবি নিয়ে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী পৃথক দু’টি কর্মসূচিতে যোগ দেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এবং যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

বিএনপি ছাড়াও এলপিডি, গণফোরাম, পিপলস পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ও পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোটও বর্তমান সরকারকে হটিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শুক্রবার ভিন্ন ভিন্ন সময়ে রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে।

শনিবার একই ধরনের কর্মসূচি পালন করবে বিএনপির অন্য সব মহানগর ইউনিট।