প্রচ্ছদ ›› রাজনীতি

মধ্যরাতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫

নিজস্ব প্রতিবেদক
১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১০:২৩:৩৭ | আপডেট: ২ years আগে
মধ্যরাতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১৫

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় হলের প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছে।

শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে শুরু হওয়া এ ঘটনায় দুই হলের মধ্যবর্তী স্থান রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুই হলের নেতাকর্মীরা হলের মধ্যবর্তী রাস্তায় বাঁশ, হলের সামনে থাকা গাছের ডাল, রড নিয়ে একে অপরের দিকে তেড়ে যায়। এ ছাড়া একে অপরকে উদ্দেশ্য করে ইট ছুঁড়ে মারে। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে।

ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম, শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট সাহেদুর রহমান, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাসির হোসেইন উপস্থিত হয়ে প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের শিক্ষার্থীদের ভেতরে নিয়ে হলের মূল ফটক আটকে দেন। এরপর কাজী নজরুল ইসলাম হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

এ ঘটনায় কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রশাসনের কাউকে দেখা যায়নি। তবে ঘটনার শেষ পর্যায়ে হলের হাউজ টিউটর মো. এনামুল হক এসে উপস্থিত হন।

এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এক শিক্ষার্থী বলেন, ‌‘আমরা এক প্রকার অভিভাবকহীন হয়ে আছি। এত বড় ঘটনা ঘটে গেল কিন্তু আমাদের হল প্রশাসনের কাউকে পাইনি। এটা দায়িত্ব অবহেলা ছাড়া আর কিছু না।’

এ ব্যাপারে কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট মিহির লাল ভৌমিককে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ঘটনাস্থলে থাকা নজরুল হলের হাউজ টিউটর মো. এনামুল হক বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরে দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। নজরুল হলের ছেলেদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গে সমন্বয় করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাৎ মো সায়েম, বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগ কর্মী ইকবাল হোসাইন, মবিনুল বারি রাকিব, অনুপ দাস, নজরুল হলের সাকিব হাসান দীপ, আশরাফুল রায়হানসহ দুপক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল বন্ধ থাকায় আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে তারা চিকিৎসা নিয়ে আবার হলে ফিরে এসেছেন।

এর আগে শুক্রবার দুপুরে জুম্মার নামাজে যাওয়ার পথে ‘সাইড’ চাওয়াকে কেন্দ্র করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও কাজী নজরুল ইসলাম হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল। সে সময় কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আশরাফুল রায়হান নামাজে যাওয়ার পথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল গেটের সামনে লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের একই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী সেলিম আহমেদকে সাইড দেওয়ার কথা বলে। এ সময় সেলিম আহমেদের কাঁধে ধাক্কা লাগে।

নামাজ শেষে এ নিয়ে সেলিম ও রায়হানের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। কথা বলার এক পর্যায়ে সেলিম, সেলিমের বন্ধু মাহবুব ও রায়হান একে অপরের প্রতি উত্তেজিত হয়ে উঠে। এ সময় দুই হলের শিক্ষার্থীদের মাঝে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ দুই হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি বেঁধে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল ইসলাম মাজেদ বলেন, ‘আমি ঘটনাটা দেখেছি। দুই হলের শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ হলে পাঠিয়েছি। যেহেতু দুই হলের শিক্ষার্থীরা ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে তার জন্য প্রেসিডেন্টসহ বসে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।’