প্রচ্ছদ ›› রাজনীতি

সবার চোখ আজ নারায়ণগঞ্জে

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ জানুয়ারি ২০২২ ০৯:৩২:৩৯ | আপডেট: ৩ years আগে
সবার চোখ আজ নারায়ণগঞ্জে
ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী - তৈমুর আলম খন্দকার

নারায়ণগঞ্জে তৃতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে সিটি করপোরেশন নির্বাচন। রোববার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

মাঘ মাসের হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে নারী ভোটারের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। কাকডাকা ভোরে এসেই লাইনে দাঁড়িয়েছেন নারী-পুরুষ ভোটাররা। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন তারা।

জানা গেছে, সবগুলো কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে।

এবার নির্বাচনে মেয়র পদে সাত এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৮২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মোট ভোটার রয়েছেন পাঁচ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৭ জন। প্রচার-প্রচারণায় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও এ নির্বাচনকে ঘিরে এখন পর্যন্ত কোনো সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।

এই নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাত প্রার্থী। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার (হাতি), খেলাফত মজলিশের এ বি এম সিরাজুল মামুন (দেয়াল ঘড়ি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাও. মো. মাসুম বিল্লাহ (হাতপাখা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কামরুল ইসলাম (ঘোড়া), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ) ও বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস (হাত ঘড়ি)।

এছাড়া সিটির ২৭ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৮ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

জানা গেছে, মোট ভোটারের দুই লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৬ জন পুরুষ ও দুই লাখ ৫৭ হাজার ৫১১ জন নারী। এছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের চার জন ভোটার রয়েছেন। নগরীর ২৭ ওয়ার্ডের ১৯২ কেন্দ্রের এক হাজার ৩৩৩ কক্ষে ভোটগ্রহণ চলবে। এ জন্য নারায়ণগঞ্জে দুই হাজার ৯১২টি ইভিএম মেশিন আনা হয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ১৯২ কেন্দ্রের মধ্যে ৩০টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, সবগুলো কেন্দ্রকেই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনায় রেখে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন পরিচালনায় রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ ৯ জন।

তারা হলেন- জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ুর রহমান, রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান, বন্দর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল কাদির, সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আফরোজা খাতুন, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ইউসুফ উর রহমান, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের নির্বাচন কর্মকর্তা প্রতিভা বিশ্বাস, আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সুলতানা এলিন, কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ ও ডেমরা থানা নির্বাচন কর্মকর্তা আল-আমিন।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে ১৯২ কেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫ হাজারেরও বেশি সদস্য নিয়োজিত আছেন। প্রতি কেন্দ্রে আছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২৬ জন সদস্য। পুলিশের ২৭ ইউনিট স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে আছেন। এছাড়া পুলিশের ৬৪টি মোবাইল টিম; প্রতি টিমে একজন এসআইয়ের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্য আছেন। নির্বাচনি মাঠে র‌্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স ৩, চেকপোস্টে ছয়, টহলে সাত ও দুটি স্ট্যাটিক টিম আছে। এ ছাড়া এই নির্বাচনে আছে বিজিবির ২০ প্লাটুন সদস্য।

শুক্রবার রাত থেকে নির্বাচনি এলাকায় মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভোটের দিন নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন ছাড়া কোনও যান্ত্রিক বাহন চলাচলও নিষিদ্ধ। এছাড়া নির্বাচনি এলাকায় সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

প্রথম নাসিক নির্বাচনে ২০১১ সালে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ‘বিদ্রোহী প্রার্থী’ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী শামীম ওসমানকে এক লাখেরও বেশি ভোটে পরাজিত করেন।

২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে আইভী আবার জয়ী হন। দলের কেন্দ্রীয় কমান্ড আইভীকে মনোনয়ন দেয়।