নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য সার্চ কমিটিতে নাম না দিয়ে বিএনপি ভুল করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক। তবে সার্চ কমিটিতে নাম না দিলেও বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মঙ্গলবার সিলেট সার্কিট হাউসে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘সার্চ কমিটিতে বিএনপি নাম দেয়নি, তাতে কিছু যায় আসে না। তারা না দিলেও অনেকেই নাম দিয়েছে। এসব নাম থেকে যাচাই-বাছাই করে একটি ভাল নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। তবে বিএনপি সার্চ কমিটিতে নাম না দিলেও তারা নির্বাচনে আসার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। নির্বাচনে না এসে সন্ত্রাস করে তারা কোন দিনও সরকারের পতন ঘটাতে পারবে না। তারা ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছিল। দেশের গণতন্ত্র চরমভাবে অনিশ্চয়তায় পড়েছিল। জঙ্গিবাদের উত্থানে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছিল। তারা কাকে নিয়ে আন্দোলন করবে। আন্দোলন করতে হলে তো জনসমর্থন লাগে। এখন তাদের সেই জনসমর্থনও নেই। আগামী নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপিকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়া উচিত। নির্বাচনে জিতে আসতে পারলে আমরা তাদেরকে অভিনন্দন জানাবো।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রেসিডিয়ামের সঙ্গে মতবিনিময় করে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর জন্য সার্চ কমিটিতে নাম দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ একটি বড় রাজনৈতিক দল। সার্চ কমিটিতে আওয়ামী লীগের দেয়া নামগুলো বিশেষভাবে বিবেচনা করা হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও পেশাজীবী সংগঠন নাম দিয়েছে। তারাও হয়তো আওয়ামী লীগের দেয়া নামের চেয়ে অনেক যোগ্য ও নিরপেক্ষ মানুষের নাম দিয়েছে। এর মধ্য থেকে যোগ্য ও ভালো ব্যক্তিদের দিয়েই নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। যার মাধ্যমে এমন একটি নির্বাচন কমিশন পাবো যারা জাতির প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিবে।’
পৃথিবীতে সমস্যা যত বড়ই হোক না কেন, সমাধানে আলোচনার বিকল্প নেই উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘সমস্যা যত বড় হোক, যতই শত্রুতা থাক। সমাধানের জন্য আলোচনায় বসতে হবে। উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতেও পুতিন ও বাইডেন টেলিফোনে কথা বলছেন। কাজেই বিএনপি যে ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে তা অরাজনৈতিক ও অগঠনমূলক।’
সার্চ কমিটিতে নাম না দেয়া প্রসঙ্গে আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিএনপি এর আগেও অনেক ভুল করেছে। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচনে অংশ না নিয়ে সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছিল। তারা জাতির অনেক ক্ষতি করেছে। তারা রেললাইন তুলেছে, গাড়িতে আগুন দিয়েছে, মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। এসব করে তাদের কোন লাভ হয়নি, অনেক ক্ষতি হয়েছে। ২০১৫ সালে একই পন্থায় তারা সরকারের পতন চেয়েছিল। তারা সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছিল। তাদের দেয়া আগুনে পুড়ে অনেকেই মারা গেছেন। এখনও দগ্ধ অনেকে কষ্টকর জীবন যাপন করছেন।’