প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

সব শিল্পকারখানা চালু রাখতে চায় এফবিসিসিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৬ জুলাই ২০২১ ১৮:১৯:৪৯ | আপডেট: ২ years আগে
সব শিল্পকারখানা চালু রাখতে চায় এফবিসিসিআই

ঈদের পর দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধে সব ধরনের শিল্পকারখানা চালু রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান তিনি।

মো. জসিম উদ্দিন বলেন, কোভিডজনিত বিধিনিষেধের আওতায় সকল প্রকার শিল্প-কারখানা বন্ধ রাখা হলে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রাণশক্তি উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ থাকবে এবং সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বিঘ্নিত হবে। এতে উৎপাদন থেকে ভোক্তা পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে খাদ্য-সামগ্রী, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, বোতলজাত পানীয়, নিত্য-প্রয়োজনীয় পণ্য ইত্যাদি উৎপাদন বন্ধ থাকলে ভোক্তা সাধারণ সমস্যার সম্মুখীন হবেন।

তিনি বলেন, পণ্য-সামগ্রী সঠিকভাবে সরবরাহ ও বাজারজাত না হলে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে। এতে স্বল্প আয়ের ক্রেতারা ভোগান্তির শিকার হবেন।

তিনি আরও বলেন, রপ্তানি খাতের উৎপাদন ব্যবস্থা বন্ধ থাকলে সময়মতো পরবর্তী রপ্তানি অর্ডার অনুযায়ী সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। এতে রপ্তানি অর্ডার বাতিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ঈদের ছুটিসহ প্রায় ১৮ থেকে ২০ দিন কারখানা বন্ধ থাকলে এক অনিশ্চয়তার মাঝে লেইট সামার, ক্রিসমাস ও বড়দিন এবং আগামী শীতের কার্যাদেশসমূহ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এক মাসের রপ্তানি শিডিউল বিঘ্নিত হলে পরবর্তী ছয় মাসের রপ্তানি শিডিউলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সেইসঙ্গে উৎপাদন বন্ধ থাকলে আমদানিকৃত কাঁচামাল অব্যবহৃত হয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে আমদানিকারক ও উৎপাদক উভয়ই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ক্ষুদ্র ও ছোট কারখানাসমূহ বন্ধ রাখা হলে উদ্যোক্তাগণ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এবং কারখানাসমূহ পুনরায় চালু রাখা অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ অবস্থায় ইতোমধ্যে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিটিএমএ, প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ টেরি-টাওয়েল ম্যানু: অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ রপ্তানি ও উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট এসোসিয়েশনসমূহ ও চেম্বারসমূহ শিল্প-কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এফবিসিসিআই-এর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।

তিনি বলেন, কোভিড বিস্তার রোধে জারিকৃত বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত সার্কুলারে ঔষধ কারখানা বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা নেই। যদি ঔষধ কারাখানা বন্ধ রাখা হয় তবে জীবন রক্ষাকারী ঔষধ সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে। অপরদিকে ট্যানারি কারখানা বন্ধ রাখা হলে কোরবানি ঈদে সংগৃহীত চামড়া সংরক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হবে।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিতে জীবন রক্ষাকে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে। কিন্তু উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হলে খাদ্য-পণ্যসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য থেকে সকলেই বঞ্চিত হবেন।

প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দিক-নির্দেশনায় বিদ্যমান বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রয়েছে এবং জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৬.১% অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মো. জসিম উদ্দিন।

তিনি বলেন, যদি উৎপাদন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয় তাহলে অর্থনীতির চলমান গতিধারা ব্যাহত হবে। জীবন ও জীবিকার মধ্যে সমন্বয়ের বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক কার্যক্রমকেও সচল রাখতে উৎপাদন ব্যবস্থাকে চলমান রাখা জরুরি।