প্রচ্ছদ ›› বাণিজ্য

উধাও চামড়া কেনার মৌসুমি ব্যবসায়ী

২১ জুলাই ২০২১ ২০:৪৯:১৫ | আপডেট: ২ years আগে
উধাও চামড়া কেনার মৌসুমি ব্যবসায়ী

ইব্রাহিম হোসেন অভি, আরিফুর রহমান তুহিন

প্রতিবছর পবিত্র ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে জমে ওঠে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের কেনা-বেঁচা। তবে এবার রাজধানীজুড়ে দেখা দেখা গেছে উল্টো চিত্র। চামড়া কেনার জন্য মৌসুমি ব্যবসায়ীদের না পেয়ে সাধারণ মানুষ তাদের কোরবানির পশুর চামড়া ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দান করেছেন।

এ বছর খুব কম সংখ্যক ব্যবসায়ী গবাদি পশুর চামড়া কিনেছেন। এর মধ্যে যারা চামড়া কিনেছেন, তারাও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত দামের তুলনায় কম দামে কিনেছেন।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এবং সাধারণ জনগণের সাথে ফোনে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া যায়।

মিরপুরের পল্লবীর বাসিন্দা আহমেদ দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, “দু'বছর আগে আমি যখন আজিমপুরে থাকতাম তখন মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছে ৫০০ টাকায় একটি গরুর চামড়া বিক্রি করতাম।”

এ বছর আমি কোনও ব্যবসায়ীকে খুঁজে না পেয়ে আমার গরুর চামড়া একটি মাদ্রাসায় দান করে দিয়েছি।

আহমেদের মতো উত্তরা, মিরপুর, ফার্মগেট, মালিবাগ ও বাড্ডাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা এ বছর একই কাজ করেছেন।

তাদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক রয়েছেন যারা তাদের কোরবানির পশুর চামড়াগুলো বিক্রি করতে পেরেছেন। তবে দাম মনমতো না পাওয়ায় হতাশ হয়েছেন তারা।

রাজধানীর কাঠালবাগানের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম দ্য বিজনেস পোস্টকে বলেন, “আমি আমার কোরবানির গরুর চামড়াটি মাত্র ২০০ টাকায় বিক্রি করেছি। অথচ এই গরুটি আমি ১ লাখ টাকার বেশি দামে কিনেছি এবং চামড়াটি প্রায় ৩০ বর্গফুট।

তবে শুধু কম মূল্যেই নয় ক্রেতা পাওয়ার জন্য তাকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১৫ জুলাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোরবানির পশুর চামড়ার দাম বর্গফুট প্রতি ২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ টাকা করে।

একটি গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট লবণ মিশিয়ে দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং রাজধানীর বাইরে ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়, যা গত বছর যথাক্রমে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং ২৮ থেকে ৩২ টাকা ছিল।

ছাগলের চামড়ার দাম সারা দেশে প্রতি বর্গফুট ১৫ থেকে ১৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যেখানে পাঠীর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা। যা গত বছর ছিলো যথাক্রমে ১৩ থেকে ১৫ টাকা এবং ১০ থেকে ১২ টাকা।

কিছু ক্ষেত্রে মাদ্রাসার মতো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিও কম দামের কারণে অনুদান হিসাবে চামড়া গ্রহণ করতে খুব একটা আগ্রহ দেখায়নি ।

এ বিষয়ে ঢাকার দক্ষিণখান এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন: চামড়াগুলি সংগ্রহ বাবদ কিছু ব্যয় হয়। তবে ক্রেতারা এবার খুব কম দাম দিয়েছেন। যার কারণে আমাদের লাভের পরিমাণ প্রায় নেই বললেই চলে। কোনো কোনে ক্ষেত্রে আমরা চামড়া সংগ্রহ বাবদ যে টাকা ব্যয় করেছি সেই টাকাও ওঠেনি।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মতে, এ বছর প্রায় কোরবানি উপলক্ষে ১ কোটি ১৯ লাখ গবাদি পশু বিক্রয় হয়েছে। যার মধ্যে কোরবানি দেওয়া হবে ১ কোটি পশু।

গত ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য ৯৫ লাখ গবাদি পশু বিক্রি হয়েছে।