প্রচ্ছদ ›› খেলা

'সেরা হওয়ার জন্য, সেরাদের হারাতে হবে'

২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১২:৪০:০৯ | আপডেট: ২ years আগে
'সেরা হওয়ার জন্য, সেরাদের হারাতে হবে'
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ

সামীউর রহমান

সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ওমানে অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এতে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নেতৃত্ব দেবেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

দ্য বিজনেস পোস্টে'র সামীউর রহমানের সাথে আলাপচারিতায়, আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি এবং প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছেন টাইগার অধিনায়ক।

দ্য বিজনেস পোস্ট: আপনি প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাপী টুর্নামেন্টে টাইগারদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। দল থেকে আপনার প্রত্যাশা কি? এই দলের নেতা হিসেবে কোন ধরনের ফলাফল আপনাকে সন্তুষ্ট করবে?

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ: প্রথমত, এটি একটি বড় সম্মান। ইনশাআল্লাহ, আমি যদি ফিট থাকি এবং বিশ্বকাপে খেলি, অধিনায়ক হিসেবে আমার দেশের প্রতিনিধিত্ব করা আমার জন্য একটি বড় সম্মান হবে। দ্বিতীয়ত, প্রত্যাশা সবসময় আছে। আমরা আশা করি এই বিশ্বকাপে সত্যিই ভালো করব। কারণ বিশেষ করে আমরা গত কয়েক মাসে কিছু ভালো ক্রিকেট খেলেছি।

আমরা তিনটি ব্যাক টু ব্যাক সিরিজ জিতেছি, যা আমাদের এই বিশ্বকাপে বিজয়ী হতে আত্মবিশ্বাস যোগাবে। আমরা সেখানে কিছু আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করব এবং ম্যাচ জেতার চেষ্টা করব। সুতরাং টি -টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে প্রত্যাশা আছে। কিন্তু তা এখনি মিডিয়া বা অন্য কোথাও প্রকাশ করতে চাই না। এটি আমাদের দলের মধ্যে ড্রেসিংরুমে রাখা হবে। যদি আমরা তা অর্জন করতে পারি, তাহলে সবাই জানতে পারবে।

দ্য বিজনেস পোস্ট: আপনার মতে, আপনার দলের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক কোনটি? এবং আপনি কোন জায়গায় আপনার দলের ঘাটতি দেখতে পান, যেটা কাজে লাগাতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ: আমি মনে করি, আমাদের বোলিং ইউনিট অসাধারণ রয়েছে। বোলিংয়ে যে ধরণের বৈচিত্র্য, গভীরতা এবং অভিজ্ঞতা রয়েছে তা আমাদের বোলিং ইউনিট হিসাবে আমাদের এগিয়ে রাখবে। আমি বলবো, আমি আমার বোলারদের উপর খুব আত্মবিশ্বাসী, এবং তারা সত্যিই ভাল খেলছে এবং যেকোনো পরিস্থিতিতে চাপের মধ্যে খুব ভাল পারফর্ম করছে। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তারা খুবই ভালো করেছে।

অন্যদিকে, এই বিশ্বকাপে আমাদের ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমাদের আরও ভাল খেলতে হবে। কারণ এমন কিছু সময় আসবে যখন আমাদের বড় দলের বিপক্ষে ১৭০-১৮০ এর মতো স্কোর তাড়া করতে হবে। সেখানকার সেরা দল হতে হলে আমাদের আক্রমণাত্মক খেলতে হবে। আর এই ফরম্যাটে ব্যর্থতার কোনো ভয় থাকতে পারে না বলে মনে করি। সেরা দল হতে হলে সেরা দলগুলোকে হারাতে হবে, এটাই আমি বিশ্বাস করি। সুতরাং, আমাদের সেইরকম চিন্তা করে সেভাবে মাঠে প্রমাণ করে দেখাতে হবে। আমাদের ব্যাটসম্যানদের আরো দায়িত্ব নিতে হবে। এটাই সেখানে আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করি।

দ্য বিজনেস পোস্ট: ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ থেকে সাকিব আল হাসান এবং মুস্তাফিজুর রহমান বিশ্বকাপের ভেন্যুতে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরবেন। কৌশল নির্ধারণের সময় আপনি এদের কাছ থেকে কোন সহযোগিতা পাবেন বলে মনে হয়?

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ: সাকিব এবং মুস্তাফিজ এই মুহূর্তে আইপিএলে খেলছেন এটা খুবই ভালো বিষয়। আমি আশা করি তারা সত্যিই ভাল করবে, যা আমাদের একটু হলেও বেশি আত্মবিশ্বাস করবে। কারণ যদি সাকিব এবং মুস্তাফিজ সেখানে সত্যিই ভাল খেলে, তাহলে এটি আমাদেরও সাহায্য করবে। আইপিএলের পর যখন তারা আমাদের সাথে যোগ দেবে, তখন সেখানে উইকেট কেমন, কি কৌশল অবলম্বন করবে এসব ব্যপারে আমাদের অনেক মূল্যবান পরামর্শ দেবে। অবশ্যই তাদের মেধা এবং অভিজ্ঞতা আমাদের সেখানে আরও ভাল খেলতে সহযোগিতা করবে।

দ্য বিজনেস পোস্ট: সাম্প্রতিক সময়ে দুই নতুন কোচিং স্টাফ অ্যাশওয়েল প্রিন্স এবং রঙ্গনা হেরাথ দলে যোগ দিয়েছেন। তারা কীভাবে ইনপুট দিচ্ছে এবং নতুন আলাদা কী যোগ করছে বলে মনে হয়? তারা কী ইতিবাচক পরিবর্তন আনছে?

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ: সম্প্রতি দলে যোগ দিয়েছেন অ্যাশওয়েল এবং রঙ্গনা। অ্যাশওয়েল ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে বেশ পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি একজন দায়িত্ববাদ ব্যক্তি। আমি মনে করি তিনি একজন খুব ভালো ব্যাটিং কোচ। তার কাজের নীতি এবং ধরণ ব্যাটসম্যানদের জন্য বেশ সুবিধাজনক। তিনি প্রতি পয়েন্ট ধরিয়ে দেন ব্যাটম্যানদের। যদি কেউ কোন ভুল করে বা কারও একটু সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তিনি সেখানে সহযোগিতা করেন।

রঙ্গনাও খুব ভালো। তার অভিজ্ঞতা সব স্পিনারকে সাহায্য করবে। আমাদের সবার সাথে তার খুব ভালো যোগাযোগ রয়েছে। আমি মনে করি উভয়ের মধ্যে খুব ভাল সমন্বয় আছে যা আগামী দিনগুলো আমাদের ভালো কাটবে।

দ্য বিজনেস পোস্ট: বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটার তাদের প্রথম বড় বৈশ্বিক আসরে খেলতে যাচ্ছে। একজন অধিনায়ক হিসেবে তাদের কাছ থেকে আপনার প্রত্যাশা কী এবং তাদের প্রতি আপনার বার্তা কী?

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ: হ্যাঁ, শামীম (হোসেন), শরিফুল (ইসলাম), আফিফ (হোসেন) এর মতো নতুন খেলোয়াড় আছে; তারা সবাই খুব মেধাবী। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাদের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমি মনে করি যদি আমরা তাদের সেই স্বাধীনতা এবং নিজেদের প্রকাশ করতে দেয়া যায়। আর সেই সুযোগটি টিম ম্যানেজমেন্টের কাছ থেকে তাদের পাওয়া দরকার। এই ফরম্যাটে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলা খেলতে হবে। আমি মনে করি আফিফ এই ফরম্যাটে খুব ভালো ব্যাটিং করছে। সোহান (নুরুল হাসান) আছেন, নাসুম (আহমেদ )ও খুব ভালো বোলিং করেছেন। আমরা তাদের মুক্ত এবং ইচ্ছা খেলতে দিতে চাই। তবে হ্যাঁ, খেলার মাঠে বিভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হবে যেখানে তাদেরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সেটাই তাদের পরিপক্কতা প্রমাণ করবে। আমি মনে করি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের হয়ে খেললে প্রত্যাশা সবসময় থাকবে, কিন্তু আমাদের শুধু তাদের নিয়ে আলাদা করে ভাবা প্রয়োজন এবং তাদের স্বাধীনভাবে খেলতে সুযোগ দিতে হবে।