প্রচ্ছদ ›› শিক্ষা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৫ অক্টোবর ২০২১ ১০:০৬:৩৬ | আপডেট: ২ years আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস আজ
সংগৃহীত ছবি

আজ ১৫ অক্টোবর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল ট্রাডেজির ৩৬ বছর পূর্ণ হলো। ১৯৮৫ সালের এই দিনে হলের তৎকালীন অনুদ্বৈপায়ন ভবনের টেলিভিশন কক্ষের ছাদ ধসের ঘটনায় মারা যান ৪০ জন। আহত হন অনেকে।

শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ে নানান কর্মসূচির মাধ্যমে শোক দিবস পালন করা হবে। শোক দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নেয়া কর্মসূচি জনসংযোগ অধিদপ্তর একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকাল ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ভবন, হল, হোস্টেল সহ প্রধান প্রধান ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। ভবনগুলোতে পতাকা অর্ধনির্মিত রাখা ও কালোব্যাজ পরিধান করে সকাল সাড়ে ৭টায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে জগন্নাথ হল স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও নীরবতা পালন করা হয়।

এরপর জগন্নাথ হল কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় সকাল ৮টায় সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভিসি ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান।

এরপর সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত জগন্নাথ হলের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় প্রার্থনাশালায় প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। বাদ আছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ‘মসজিদুল জামিআ’ সহ সব হলের মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।

১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর বিভীষিকাময় রাত প্রত্যক্ষ করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তখন চিত্তবিনোদনের জন্য ছিল দেশের একমাত্র চ্যানেল বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। প্রতি মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় প্রচারিত হতো মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক ‘শুকতারা’। এটি দেখতে সেদিন প্রায় ৪০০ ছাত্র-কর্মচারী-অতিথিতে ভরে ওঠে জগন্নাথ হলের তৎকালীন অনুদ্বৈপায়ন ভবনের টিভি রুম। ভবনটির সংস্কার কাজ চলছিল।

সেদিন বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে ঢাকার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বয়ে যায়। রাত পৌনে ৯টার দিকে হঠাৎ ভবনটির ছাদ ধসে পড়ে। যারা ভেতরে জায়গা না পেয়ে দরজা বা জানালার ধারে বসে নাটক দেখছিলেন, তারা বের হতে পারলেও অধিকাংশ ছাত্র সেদিন চাপা পড়ে। তাদের আর্তচিৎকারে জগন্নাথ হলে হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উদ্ধার কাজে এগিয়ে আসেন অন্যান্য ভবনের ছাত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ। উদ্ধারকৃতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঘটনাস্থলেই জগন্নাথ হলের ৩৮ জন ছাত্র-কর্মচারী-অতিথির মৃত্যু হয়। তাদের উদ্ধার ও সেবা করতে গিয়ে আরও দুইজন মারা যান। তাদের মধ্যে ছিলেন ২৬ জন ছাত্র, ১৩ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ও অতিথি। আহত হন শতাধিক। তাদের অনেকেই পঙ্গু হয়ে যান চিরতরে।

সেই থেকে প্রতিবছর এই দিনটিকে 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শোক দিবস' হিসেবে পালন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।