প্রচ্ছদ ›› জাতীয়

বিপৎসীমার উপরে পানি, দুই জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ অক্টোবর ২০২১ ১১:৫৪:১২ | আপডেট: ২ years আগে
বিপৎসীমার উপরে পানি, দুই জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
খুলে দেয়া হয় তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট, ফ্লাট বাইপাস সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বন্ধ (ডানে)

প্রবল বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল আর ভারতের গজলডোবার সব কয়টি গেট খুলে দেয়ায় তিস্তার পানি দোয়ানি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পানির প্রবল স্রোতে এরই মধ্যে ভেঙে গেছে তিস্তা ব্যারাজের সড়কের ‌‘ফ্লাট বাইপাস’। এতে লালমনিরহাটের সঙ্গে নীলফামারী জেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

বুধবার সকাল ৯টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫৩ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী (পাউবো) আব্দুল্লাহ আল মামুন।

স্থানীয়রা জানান, ভোর থেকে পানি বাড়তে শুরু করলে তিস্তা ব্যারাজের কয়েকটি গেট বন্ধ করে দেয়। পরে তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাট বাইপাস সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকলে সেটি ভেঙে যায়। তিস্তার পানিবৃদ্ধির ফলে হাটখোলা সড়কের পাশে পানি আসা শুরু করেছে। এ ছাড়া হাতীবান্ধা থেকে বড়খাতার বাইপাস সড়কের তালেব মোড় এলাকার সড়কটিতে পানি ছুঁইছুঁই করছে। এ ভাঙনের ফলে এরই মধ্যে ওই এলাকার ২০০টি ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

বন্যার পানি হাতীবান্ধা শহরসহ লোকালয়ে প্রবেশ করায় জেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিস্তা পাড়ের লোকজন নিজ নিজ অবস্থান থেকে বালুর বস্তা দিয়ে পানি আটকে রাখার চেষ্টা করলেও বস্তার সংকটে তা সম্ভব হয়ে উঠছে না।

এরই মধ্যে জেলার ৫টি উপজেলার ভোটমারী, তুষভান্ডারের আমিনগঞ্জ, কাকিনা, পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা, ইউনিয়নের তিস্তাতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেকের ফসলের ক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। ফসলহানির শঙ্কায় এখন চিন্তিত কৃষকরা। পরিবারগুলো শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদি পশুপাখি নিয়ে পড়েছে চরম বিপাকে।

তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী (পাউবো) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পানি বৃদ্ধি হওয়ার কারণে ভারত থেকে পানি ছেড়ে দিয়েছে। ফলে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বেড়ে যায়। এদিকে পানি বাড়ার কারণে তিস্তা ব্যারাজ এলাকা ও ফ্লাট বাইপাসটি ভেঙে গেছে। মাইকিং করে স্থানীয়দের সরে যেতে বলা হচ্ছে।

এ বিষযে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ফেরদৌস আলম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তাদের তালিকা করে ত্রাণ দেওয়া হবে বলেও তিনি জানান। তবে এবার ত্রাণ দিতে কোনো সমস্যা হবে না।