জয় দিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে যাত্রা শুরু করেছে সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল। শুক্রবার টুর্নামেন্টের অষ্টম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৪ উইকেটে হারায় বরিশাল।
এদিন মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৫ রান করে চট্টগ্রাম। জবাবে ৮ বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয় বরিশাল।
চট্টগ্রামের পক্ষে ব্যাট হাতে ইনিংসের উদ্বোধন করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেটরক্ষক কেনার লুইস ও ইংল্যান্ডের উইল জ্যাকস। ছক্কা মেরে ইনিংস শুরু করেন লুইস। প্রথম বলেই ছক্কা খেলেও তৃতীয় বলে লুইসকে প্যাভিলিয়নে পাঠান বরিশালের স্পিনার নাইম হাসান। ৩ বলে ৬ রান করে ফেরেন লুইস।
দ্বিতীয় উইকেটে ইনিংস মেরামতের কাজ শুরু করেছিলেন জ্যাকস ও তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে নামা আফিফ হোসেন। কিন্তু বেশি দূর এগোতে পারেননি তারা। আফিফকে মাত্র ৬ রানে থামান আলজারি জোসেফ। দ্বিতীয় উইকেটে স্কোরকার্ডে ১৬ রান যোগ করেন আফিফ-জ্যাকস জুটি।
দলীয় ২২ রানে আফিফের বিদায়ের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। ১৪ ওভার শেষে চট্টগ্রামের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ৬৩ রান। সাব্বির রহমান ৮, জ্যাকস ১৬, অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ৯ ও শামিম হোসেন ১৪ রান করে ফেরেন।
অল্পতেই গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়া চট্টগ্রামের দলীয় সংগ্রহ তিন অঙ্কের কাছাকাছি নিয়ে যান নাইম ইসলাম ও ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল। সপ্তম উইকেটে জুটিতে ৩২ রান যোগ করেন তারা। ইনিংসের ১৯তম ওভারের প্রথম বলে নাইমকে ১৫ রানে থামিয়ে জুটি ভাঙেন জোসেফ।
একই ওভারে পরের পাঁচ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৬ রান আদায় করে নেন হাওয়েল। আর তাতে চট্টগ্রামের দলীয় স্কোর তিন অংকে পা রাখে। শেষ ওভারে ব্রাভোর তৃতীয় ডেলিভারিতে আরও ১টি ছক্কা হাকান হাওয়েল। পঞ্চম বলে হাওয়েলকে শিকার করেন ব্রাভো। আর শেষ বলে বাউন্ডারি আসে মুকিদুল ইসলামের ব্যাটে। তাতে শেষ ৫ ওভারে ৫২ রান তুলে ১২৫ রানের সংগ্রহ পায় চট্টগ্রাম।
শেষ দিকের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ১২৫ রান করে চট্টগ্রাম। ৩টি করে চার-ছক্কায় ২০ বলে ৪১ রান করেন হাওয়েল।
বরিশালের হয়ে বল হাতে ৩২ রানে ৩ উইকেট নেন জোসেফ। এছাড়া নাইম ২টি, সাকিব-লিন্টট ও ব্রাভো ১টি করে উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ১২৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় বরিশাল। মেহেদি হাসান মিরাজের শিকার হয়ে ১ রান করে ফিরেন ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর দলের রানের চাকা সচল করেন আরেক ওপেনার সৈকত আলি ও অধিনায়ক সাকিব। জুটিতে ২৫ রান যোগ করে আউট হন সাকিব। সাকিবকে ১৩ রানে আউট করে চট্টগ্রামকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন মিরাজ।
সাকিবের বিদায়ের পর ৩৪ রানের জুটি গড়ে বরিশালকে লড়াইয়ে রাখেন সৈকত ও তৌহিদ হৃদয়।
মিডল-অর্ডারের দুই ব্যাটার হৃদয়-ইরফান শুক্কুর ১৬ রান করে করেন। ৩৫ বলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৯ রান করেন সৈকত। মিরাজের করা ১৫তম ওভারে ইরফান-সৈকত ও সালমান আউট হন। রানের খাতা খোলার আগেই রান আউট হন সালমান। এতে ৯২ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় বরিশাল।
এমন অবস্থায় শেষ ৫ ওভারে ৪ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৪ রান দরকার পড়ে বরিশালের। সপ্তম উইকেটে ২২ বল খেলে অবিচ্ছিন্ন ৩৪ রানের জুটি গড়ে বরিশালকে জয় এনে দেন ব্রাভো ও জিয়াউর রহমান।
১৭তম ওভারে ১৮ রান নেন ব্রাভো-জিয়াউর। ১৮তম ওভারে নেন ৯ রান। আর ১৯তম ওভারের প্রথম চার বলে ৩ রান নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন ব্রাভো-জিয়াউর।
ব্রাভো ১০ বলে অপরাজিত ১২ ও জিয়াউর ১২ বলে অপরাজিত ১৯ রান করেন। ব্রাভো ১টি চার এবং জিয়াউর ২টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন।
চট্টগ্রামের হয়ে বল ৪ ওভারে ১৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন মিরাজ। এছাড়া একটি উইকেট নেন মুকিদুল ইসলাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স : ১২৫/৮, ২০ ওভার (হাওয়েল ৪১, জ্যাকস ১৬, জোাসেফ ৩/৩২)
ফরচুন বরিশাল : ১২৬/৬, ১৮.৪ ওভার (সৈকত ৩৯, ইরফান ১৬, মিরাজ ৪/১৬)
ফলাফল: ফরচুন বরিশাল ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যাচ সেরা: মেহেদি হাসান মিরাজ (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স)
