প্রচ্ছদ ›› বিনোদন

ছোটবেলায় না খেয়ে স্কুলে যেতাম, ঘরে খাবার থাকতো না: বর্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৮ জুন ২০২১ ১৩:৩১:১৭ | আপডেট: ২ years আগে
ছোটবেলায় না খেয়ে স্কুলে যেতাম, ঘরে খাবার থাকতো না: বর্ষা

প্রত্যেক সফল জীবনের পেছনে এমন অনেক সংগ্রামের গল্প লুকানো থাকে যা সবসময় দেখা যায় না। সফল মানুষদের বেশিরভাগই জীবনে অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে সুখের দেখা পান।

সকল সংগ্রামকে ইতিবাচক দিকে রূপান্তর করার নামই জীবন। যারা তাদের চলার পথের সব ধরণের সংগ্রামকে ইতিবাচক দিকে রূপান্তর করতে পারে আমাদের সমাজ তাদেরকেই সফল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

দেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা ও শিল্পপতি-অভিনেতা অনন্ত জলিলের স্ত্রী আফিয়া নুসরাত বর্ষা তাদেরই একজন। তিনি সিরাজগঞ্জের একটি সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছেন।

বর্ষার শৈশব ও কৈশোর ছিলো নানা প্রতিবন্ধকতায় ভরপুর। প্রায়ই তার ঘরে খাবার থাকতো না। সকালের নাস্তা না খেয়েই তাকে স্কুলে যেতে হয়েছে দিনের পর দিন। সেই কঠিন সময় এখনো ভুলে যাননি এই তারকা।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের এক অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে নিজের জীবনের জানা অজানা অনেক গল্পই শোনান বর্ষা। সেখানে তার অতীত নিয়েও কথা বলেন তিনি।

বর্ষা বলেন, ‘সমাজে একটি সম্মানজনক অবস্থানে পৌঁছানোর পর মানুষ প্রায়ই তাদের অতীত ভুলে যায়। এটা ঠিক নয়।’

অতীত নিয়ে কথা বলতে গিয়ে জীবনে ফেলে আসা দিনগুলোর করুণ এক গল্প শোনান বর্ষা।

তিনি জানান: গ্রামের ব্র্যাক স্কুলের ক্লাশ থ্রিতে পড়ার সময় একবার তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। বাসায় কোনো খাবার না থাকায় তখন সকালের নাস্তা না করেই তাকে স্কুলে যেতে হয়েছিল।

এই ঘটনা জানার পর স্কুলের শিক্ষিকা বর্ষাকে তার বাড়িতে নিয়ে যান এবং ডিম দিয়ে খিচুড়ি খাওয়ান। এরপর আবার বর্ষা ক্লাশে আসেন। 

কথাগুলো বলতে বলতে আবেগী হয়ে পড়েন বর্ষা, কয়েক সেকেন্ডের জন্য থেমে যান এবং তার চোখের কোণায় পানি জমে যায়।

ছোটবেলা থেকেই সিনেমার প্রতি আগ্রহ ছিল বর্ষার। মায়ের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও শুক্রবার সিনেমা দেখতে অন্যের বাড়িতে চলে যেতেন তিনি।

বর্ষা বলেন, ছোটবেলা থেকেই তিনি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন, বিশেষ করে শিক্ষকদের। হাইস্কুলে ভর্তি হওয়ার পর স্কুলের বার্ষিক প্রতিযোগিতায় শিক্ষকরা প্রায়ই তাকে ছেলেদের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য বলতেন।

সিরাজগঞ্জে বেড়ে ওঠা বর্ষা কি ছোটবেলায় ফিরে যেতে চান? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে কী, আমি আসলে ছোটবেলায় ফিরে যেতে চাই না। কারণ অনেক কষ্টে বড় হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ‘ধানমন্ডি লেকে গিয়ে বান্ধবীদের সঙ্গে চটপটি-ফুসকা খাওয়া খুব মিস করি। চাইলেই এগুলো করতে পারি না এখন।’

মানুষের অতীত ভুলে যাওয়া উচিত নয় উল্লেখ করে জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী বলেন, ‘মানুষের তার অতীত ভুলে যাওয়া উচিত নয়। কিন্তু আমাদের অনেকেই এটা করেন। আমি মনে করি, দীর্ঘ সংগ্রাম ও কঠোর পরিশ্রমের পর আমার আজকের অবস্থান অন্যের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে।’

এ সময় অনন্ত জলিলের সঙ্গে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পথচলা শুরু, বিয়ে এবং আরও অনেক গল্প শোনান বর্ষা। তার স্বামী অনন্ত জলিলও এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মিডিয়া অঙ্গণে বর্ষার ক্যারিয়ার শুরু হয় ম্যাগাজিনের মডেল হিসেবে। এরপর ইফতেখার চৌধুরী পরিচালিত ‘খোঁজ-দ্য সার্চ’ সিনেমায় চিত্রনায়ক অনন্ত জলিলের বিপরীতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন তিনি। এরপর বেশ কয়েকটি সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করেছেন অনন্ত-বর্ষা। এরপর তারা একে অন্যের প্রেমে পড়েন। ২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর বিয়ে করেন অনন্ত-বর্ষা। বর্তমানে দুই সন্তান নিয়ে তারা সুখী দম্পতি।

বর্তমানে ‘নেত্রী-দ্য লিডার’ সিনেমার কাজ নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন বর্ষা। তুরস্কের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হচ্ছে এ ছবিটি।

এছাড়া তার আরেকটি সিনেমা ‘দিন-দ্য ডে’ মুক্তির অপেক্ষায় আছে। ইরানের সঙ্গে বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে এটি।