প্রচ্ছদ ›› বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কল ড্রপ ভোগান্তিতে খোদ বিটিআরসি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক
০৯ ডিসেম্বর ২০২১ ২২:১০:০৯ | আপডেট: ৩ years আগে
কল ড্রপ ভোগান্তিতে খোদ বিটিআরসি চেয়ারম্যান

‘কল ড্রপ’ তখনই ঘটে যখন কোনো মোবাইল ফোন অপারেটরের সিগন্যাল দুর্বল থাকে। বর্তমানে কল ড্রপ দেশের মুঠোফোন ব্যবহারকারীদের জন্য বাজে এক অভিজ্ঞতার নাম। কিন্তু বিষয়টি যারা দেখভাল করেন সেই বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান নিজেও শিকার এই কল ড্রপের! কথা বলার মধ্যে এমন বিড়ম্বনা তৈরি হওয়ায় একজন ভোক্তা হিসেবে তিনিও বিরক্ত বলে জানিয়েছেন।

বিটিআরসি চেয়ারম্যানশ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, ‘ভোক্তা হিসেবে আমি এই (কল ড্রপ) ভোগান্তিতে আছি এবং এটা নিয়ে আমার ভোগান্তিটা একটু বাড়তি, সেটা দায়িত্বের কারণে।’

বৃহস্পতিবার বিটিআরসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি। রাজধানীর রমনায় বিটিআরসি কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, ‘কল ড্রপ সারা দেশের মুঠোফোন ব্যবহারকারীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জিপিকে (গ্রামীণফোন) দোষারোপ করতে হবে। কারণ জিপির কলড্রপটা সবচেয়ে বেশি ছিল। তবে অতিসম্প্রতি একটু কমেছে আমাদের চাপের কারণে।’

বিটিআরসি প্রতিনিয়ত কল ড্রপের পরীক্ষা করছে। ২২৭টি উপজেলার ১২ হাজার ৮০০ কিলোমিটার এলাকায় ইতিমধ্যে পরীক্ষা হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, পরীক্ষার ফলাফল কোথায় কেমন এ-সংক্রান্ত উপাত্তসহ চিঠি দেওয়া হচ্ছে মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে। কোথায় পদক্ষেপ নিতে হবে তা বলে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে আদালতে মামলাও হয়েছে।

অনেকে মুঠোফোনে ভালো সেবা না পেলে বিটিআরসির বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ নিয়ে শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, মামলা করা উচিত সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। বিটিআরসি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান না, নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদুল আলম বলেন, একটি পরিবারে বেশি পরিমাণ ইলেকট্রনিকস ডিভাইসের ব্যবহার করলে তখন তরঙ্গে সমস্যা হয়। সিগন্যাল ঠিকমতো পায় না। কল ড্রপ হয়। এ ছাড়া ঢাকায় গা ঘেঁষা ভবন ও টাওয়ারের সক্ষমতার তুলনায় মুঠোফোনের সংখ্যা বেশি হওয়ায়ও কল ড্রপ হচ্ছে।

মতবিনিময় সভায় উত্থাপিত তথ্যমতে, দেশে শেষ ১ বছরে মুঠোফোন গ্রাহকের সংখ্যা বেড়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ। আর নভেম্বর পর্যন্ত গ্রাহকসংখ্যা ১৮ কোটি ১৩ লাখ। আর চলতি অর্থবছরে দেশে উৎপাদিত মুঠোফোনের সংখ্যা ২ কোটি ৬১ লাখ। গত অর্থবছরে ছিল ১ কোটি ৪৯ লাখ। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে আমদানি হয়েছে ১ কোটি ৫২ লাখ মুঠোফোন। গত অর্থবছরে তা ছিল ১ কোটি ৪৫ লাখ।

এ ছাড়া দেশে গত এক বছরে ফোর-জি গ্রাহক বৃদ্ধি পেয়েছে ২ কোটি ৩৪ লাখ। নভেম্বর পর্যন্ত মোট গ্রাহকসংখ্যা ৬ কোটি ৯১ লাখ। এর মধ্যেই ১২ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে টেলিটক সিমের মাধ্যমে ফাইভ–জি চালু হচ্ছে।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘সারা দেশে থ্রি–জি সেবা পৌঁছাতে পারিনি, কিন্তু ফোর-জি চালু করেছি। এখন ফোর-জি সেবা ছড়িয়ে দিতে পারিনি, কিন্তু ফাইভ-জি চালু করছি। আমাদের করতে হবে।’