প্রচ্ছদ ›› খেলা

ইংলিশে ফেল বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক
২৭ অক্টোবর ২০২১ ১৯:০৬:৪৪ | আপডেট: ৩ years আগে
ইংলিশে ফেল বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এ ম্যাচে ব্যাটে-বলে রীতিমতো বাংলাদেশি ক্রিকেটাদের পরীক্ষা নিয়েছে ইংলিশরা। আর প্রথম পরীক্ষায়ই ‘ডাব্বা’ মেরেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।

বুধবার আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশি বোলারদের রীতিমতো পরীক্ষা নেন ইংলিশ বোলাররা। তাতে সুবিধা করতে পারেননি কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান।

শেষদিকে ৯ বলে নাসুম আহমেদের ১৯ রানের ঝড়ো ইনিংসের ভরা করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৪ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।

এরপর ১২৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে করতে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের পরীক্ষা নেন ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। সে পরীক্ষাতেও ফেল করেছেন বাংলাদেশি বোলাররা। ব্যাট হাতে ব্যর্থ হওয়ার পর বল হাতেও কোনোরকম প্রতিরোধ গড়তে পারেননি সাকিব-মুস্তাফিজরা। আর তাতে ৩৫ বল হাতে রেখেই ৮ উইকেটে বড় জয় তুলে নিয়েছে ইয়ন মরগানের দল।

ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দেখেশুনেই শুরু করেছিলেন দুই ওপেনার জেসন রয় ও জস বাটলার। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বাটলারকে ফিরিয়ে ইংলিশদের ৩৯ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন নাসুম। লং-অফে নাঈমের তালুবন্দী হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ১৮ বলে ১৮ রান করেন এই ইলিংশ ওপেনার।

বাটলার ফিরলেও ডেভিন মালানকে নিয়ে দারুণ ব্যাটিং করে যান জেসন রয়। পাওয়ার প্লেতেই দলীয় অর্ধশতক তুলে নেয় ইংল্যান্ড। এরপর দলীয় শতকের সময় নাসুমকে ছয় মেরে ব্যক্তিগত অর্ধশতকও তুলে নেন রয়। পাঁচ চার ও দুই ছক্কায় ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি।

জয়ের খুব কাছাকাছি এসে শরিফুলের শিকারে পরিণত হন রয়। ৩৮ বলে ৬১ রান করে থার্ডম্যানে নাসুমের তালুবন্দি হন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। তখন জয় থেকে মাত্র ১৩ রান দূরে ছিল ইংল্যান্ড। আউট হওয়ার আগে দ্বিতীয় উইকেটে মালানকে সঙ্গে নিয়ে ৪৮ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন তিনি।

শেষদিকে জনি বেয়ারস্টের ৮ ও মালানের অপরাজিত ২৮ রানে ভর করে ৮ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড।

এদিন বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন নাসুম ও শরিফুল।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বেশ ইতিবাচকই দেখা যাচ্ছিল দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও মোহাম্মদ নাঈমকে। প্রথম ওভারেই মঈন আলীর শেষ দুই বলে দুটি বাউন্ডারি হাঁকান লিটন। কিন্তু মঈনের দ্বিতীয় ওভারেই জায়গা বানিয়ে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে টপ-এজড হন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। স্কয়ার লেগে ক্যাচ নিতে ভুল হয়নি লিয়াম লিভিংস্টোনের। আর তাতে ৮ বলে দুই চারে ৯ রান করে সাজঘরে ফিরে যান লিটন। ১৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

পরের বলে আরেক ওপেনার নাঈম শেখকেও ফেরান মঈন আলী। মিড-অনে ক্রিস ওকসের হাতে ধরা পড়েন নাঈম। আউট হওয়ার আগে ৭ বল খেলে ৫ রান করেন আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করা এই ওপেনার।

শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছিলেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। কিন্তু তাতে বাধা হয়ে দাড়ান ক্রিস ওকস। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে সাকিবকে সাজঘরে পাঠান এই ইংলিশ পেসার। তাতে ২৬ রানেই তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে আদিল রশিদের ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ৭ বলে ৪ রান। পাওয়ার প্লে শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ২৭ রান।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পাওয়ার প্লেতে যৌথভাবে সর্বনিম্ন স্কোর এটি। এর আগে ২০১০ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া এবং ২০১৪ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে পাওয়ার প্লে শেষে ২৭ রানই তুলেছিল বাংলাদেশ।

১২ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারানোর ধাক্কা কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক। কিন্তু সেই চেষ্টাও সফল হয়নি। ড্রিংকস বিরতির পরই মুশফিককে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন লিয়াম লিভিংস্টোন। ১১তম ওভারের চতুর্থ বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ব্যর্থ হন মুশফিক। বল গিয়ে আঘাত হানে মুশফিকের প্যাডে। তবে শুরুতে অবশ্য ইংল্যান্ডের এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার নিতিন মেনন অবশ্য। রিভিউ নিয়ে সফল হয় ইংল্যান্ড।

৩০ বলে তিন চারে ২৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন মুশফিকও। ৬৩ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ। দশ রানের ব্যবধানে রিয়াদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটের ফাঁদে পড়ে ক্রিজ ছাড়েন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ইনিংসের ১৩তম ওভারের চতুর্থ বলে আন আউট হওয়ার আগে ৬ বলে ৫ রান করেন আফিফ।

ব্যাটিং ব্যার্থতার দিনে হাসেনি ইনিংসের শুরু থেকে ধুঁকতে থাকা মাহমুদউল্লাহর ব্যাটও। ১৫তম ওভারে লিভিংস্টোনের পঞ্চম বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেওয়ার আগে ২৪ বলে ১ চারে ১৯ রান করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ৮৩ রান।

১০ বলে ১১ রান করে থামেন শেখ মাহেদি হাসান। এরপর ১৯তম ওভারে আদিল রশিদের ওপর চড়াও হন নাসুম আহমেদ। এই ওভার থেকে ১৭ রান পায় বাংলাদেশ। এর মধ্যে ২ ছয় ও এক চারে ১৬ রানই আদায় করেন নাসুম।

শেষ পর্যন্ত ৯ বলে এক চার ও দুই ছক্কায় ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। এছাড়া ইনিংসের শেষ ওভারের পঞ্চম বলে আউট হওয়ার আগে ১৮ বলে ১৬ রান করেন নুরুল হাসান সোহান। তবে পুরো ইনিংসজুড়ে কোনো বাউন্ডারির দেখা পাননি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।