ম্যাচের শুরু থেকেই গতিময় ফুটবল খেলেছে দুই দল। দুই দলের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ আর বল দখলের লড়াই পুরো ৯০ মিনিট বুঁদ রাখে ফুটবলপ্রেমীদের। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের খেলায় ১-১ গোলে ড্র হয় ইংল্যান্ড ও ইতালির মধ্যকার ম্যাচ। এরপর খেলা গড়াই অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও নিষ্পত্তি হয়নি ম্যাচের ফলাফল। শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। আর টাইব্রেকার রোমাঞ্চে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে হারিয়ে শেষ হাসি হেসেছে ইতালি।
গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে দীর্ঘ ৫৩ বছর পর ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে রবের্তো মানচিনির শিষ্যরা। একইসাথে টুর্নামেন্টের এবারের আসরে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে তারা। এ নিয়ে কোচ রবের্তো মানচিনির কোচিংয়ে টানা ৩৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকলো ইতালি।
রোববার রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে টাইব্রেকারে ইংল্যান্ডকে ৩-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা তুলে ধরলো আজ্জুরিরা। এর আগে ১৯৬৮ সালে সর্বশেষ ইউরো জিতেছিল ইতালি। এরপর ২০০০ ও ২০১২ সালে ইউরোর ফাইনাল খেললেও খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল আজ্জুরিদের।
এদিন টাইব্রেকারে ইতালির হয়ে গোল করেন ডোমেনিকো বেরার্দি, লিওনার্দো বোনুচ্চি ও ফেদেরিকো। আর আন্দ্রে বেলোত্তি ও জর্জিনহোর নেওয়া শট ফিরিয়ে দেন ইংলিশ গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। এদিকে ইংল্যান্ডের পক্ষে গোল করেন অধিনায়ক হ্যারি কেইন ও হ্যারি মাগুইরে। মার্কাস রাশফোর্ডের শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে। জ্যাডন সানচো ও বুকাইয়ো সাকার শট ফিরিয়ে দেন দোন্নারুম্মা।
এর আগে ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই এগিয়ে যায় স্বাগতিক ইংল্যান্ড। মাঝ মাঠ থেকে লম্বা পাসে পাওয়া বলটি নিয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে এগিয়ে গিয়ে দারুণ এক ক্রস করেন কাইরান ট্রিপিয়ার। উড়ে আসা বলটি অসাধারণ শটে বল জালে জড়ান লুক শ। ইউরোর ইতিহাসে ফাইনালে এটাই সবচেয়ে দ্রুততম গোল।
এগিয়ে গিয়ে ইতালির উপর চাপ সৃষ্টি করে ইংলিশরা। ওদিকে ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে খেলার গতি বাড়ায় ইতালি। বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে থাকা ইতালি গোল পরিশোধে মরিয়া হয়ে উঠলেও ইংলিশদের রক্ষণভাগ ও গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডের কাছে সুবিধা করতে পারেনি। বরং পাল্টা আক্রমণে ইতালিকে দুর্বল করে রাখে হ্যারি কেইনরা।
দ্বিতীয়ার্ধে এসে ফরমেশনে পরিবর্তন আনে ইতালি। তাতেই বদলে যায় খেলার ধরণ। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ইংল্যান্ডের রক্ষণভাগ কাঁপিয়ে তোলে তারা। ৬৭ মিনিটে ইতালিকে সমতায় ফেরান বোনুচ্চি। এসময় কর্নার কিকে মার্কো ভেরাত্তির নেওয়া হেড পিকফোর্ড ফিরিয়ে দিলেও দলকে বিপদমুক্ত করতে পারেননি তিনি। পাশ থেকে বাঁ পায়ের শটে বল জালে জড়ান বোনুচ্চি।
এরপর একের পর এক আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ জমিয়ে তোলের দুই দলের ফুটবলাররা। কিন্তু কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি কোনো দলই।