শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে তৃতীয় ও শেষটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। আগের দুই ম্যাচ সমতা থাকায় এ ম্যাচ অলিখিত ফাইনালে পরিণত হয়েছে। যেখানে প্রথমে ব্যাট করা লংকানরা নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান করেছে।
আজ শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলতে নামে দুদল। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় ম্যাচটি শুরু হয়। আগের দুই ম্যাচের মতোই মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে টস জিতেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সিদ্ধান্তও এসেছে আগের মতোই, ফিল্ডিং।
ব্যাটিংয়ে নামা শ্রীলংকার প্রথম উইকেট বাংলাদেশ তুলে নেয় ৩.১ ওভারে। দলীয় ১৮ রানে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে ব্যক্তিগত ৮ রানে ফেরান তাসকিন আহমেদ। সৌম্য সরকার ক্যাচ ধরেন। এরপর জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও তা ভেঙে দেন রিশাদ হোসেন। এই লেগস্পিনারের বল তুলে মারতে গিয়ে ব্যক্তিগত ১২ রানে আউট হন কামিন্দু মেন্ডিস। শরিফুল ইসলাম দারুণ ক্যাচটি লুফে নেন।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে কুশল মেন্ডিস ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ৩১ বলে ৫৯ রানে জুটি গড়েন। অবশেষে এই জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। ব্যক্তিগত ১৫ রানে শরিফুল ইসলামের ক্যাচে লংকান অধিনায়ক হাসারাঙ্গাকে বিদায় করেন কাটার মাস্টার। এরপর চরিথ আসালাঙ্কাকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি শরিফুল। এবার মোস্তাফিজের ক্যাচে আসালাঙ্কাকে (৩) মাঠ ছাড়া করান শরিফুল।
তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট করা কুশল মেন্ডিসকে অবশেষে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান তাসকিন। ১৭তম ওভারের পঞ্চম বলে ডানহাতি এই তারকা বোলারকে তুলে মারতে গেলে সৌম্য সরকারের ক্যাচে পরিণত হন কুশল। এই ওপেনার ৫৫ বলে ৬টি চার ও সমান ছক্কায় ৮৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। এরপর ঝড় তোলার চেষ্টা করা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে ১০ রানে ফেরান ব্যক্তিগত ১০ রানে বিদায় করেন রিশাদ। শেষ ওভারের শেষ বলে দৌড়ে দুই রান নিতে যাওয়া দাসুন শানাকাকে দারুণভাবে রান আউট করেন উইকেটকিপার লিটন দাস। শানাকা ৯ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ১৯ রান করেছেন।
এই ম্যাচে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। তবে শ্রীলংকার একাদশে এসেছে তিনটি পরিবর্তন। ইনজুরিতে আক্রান্ত মাথিশা পাথিরানার পরিবর্তে এসেছেন নুয়ান থুশারা। আর ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে জায়গা দিতে বাদ দেওয়া হয়েছে দিলশান মাদুশঙ্কাকে।অফফর্মে থাকা আবিষ্কা ফার্নান্দোকে বাদ দিয়ে ঢোকানো হয়েছে ধনাঞ্জায়া ডি সিলভাকে।
সিরিজের প্রথমটিতে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণ জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। তৃতীয় টি-টোয়েন্টি তাই পরিণত হয়েছে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে। সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাত্র ৩ রানে হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। শ্রীলংকার দেওয়া পাহাড়সম লক্ষ্যেও টাইগাররা জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও জাকের আলির বীরোচিত ব্যাটিংয়ে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে তো লংকানদের রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। ১১ বল হাতে রেখে পেয়েছে ৮ উইকেটের সহজ জয়। দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন অধিনায়ক শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়।
বাংলাদেশের জন্য এই ম্যাচটি ইতিহাস গড়ারও একটি বড় সুযোগ। এর আগে কখনো শ্রীলংকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতেনি টাইগাররা। সর্বোচ্চ সাফল্য ছিল ২০১৭ সালে সিরিজ ড্র।
দুই দলের একাদশ
বাংলাদেশ: লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, তৌহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শেখ মেহেদী হাসান, জাকের আলী, তাসকিন আহমেদ, রিশাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, ও শরিফুল ইসলাম।
শ্রীলংকা: ধনাঞ্জায়া ডি সিলভা,কুশল মেন্ডিস (উইকেটরক্ষক), কামিন্দু মেন্ডিস, সাদিরা সামারাউইক্রমা, চারিথ আসালাঙ্কা, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, দাসুন শানাকা, ওয়ানিন্দু হাসরাঙ্গা (অধিনায়ক), মহেশ থিকশানা, বিনুরা ফার্নান্দো ও নুয়ান থুশারা।