ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়েই সুপার টুয়েলভে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে টস ভাগ্যও সহায় হয়েছিল বাংলাদেশ দলের। কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা। তাতে ইংলিশদের বিপক্ষে ১২৪ রানের সংগ্রহ পেয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
বুধবার আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যান। শেষদিকে ৯ বলে নাসুম আহমেদের ১৯ রানের ঝড়ো ইনিংসের ভরা করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৪ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
এদিন বেশ ইতিবাচকই দেখা যাচ্ছিল দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও মোহাম্মদ নাঈমকে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই মঈন আলীর শেষ দুই বলে দুটি বাউন্ডারি হাঁকান লিটন। কিন্তু মঈনের দ্বিতীয় ওভারেই জায়গা বানিয়ে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে টপ-এজড হন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। স্কয়ার লেগে ক্যাচ নিতে ভুল হয়নি লিয়াম লিভিংস্টোনের। আর তাতে ৮ বলে দুই চারে ৯ রান করে সাজঘরে ফিরে যান লিটন। ১৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
পরের বলে আরেক ওপেনার নাঈম শেখকেও ফেরান মঈন আলী। মিড-অনে ক্রিস ওকসের হাতে ধরা পড়েন নাঈম। আউট হওয়ার আগে ৭ বল খেলে ৫ রান করেন আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করা এই ওপেনার।
শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছিলেন সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। কিন্তু তাতে বাধা হয়ে দাড়ান ক্রিস ওকস। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে সাকিবকে সাজঘরে পাঠান এই ইংলিশ পেসার। তাতে ২৬ রানেই তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
ষষ্ঠ ওভারের দ্বিতীয় বলে আদিল রশিদের ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে সাকিবের ব্যাট থেকে আসে ৭ বলে ৪ রান। পাওয়ার প্লে শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ২৭ রান।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পাওয়ার প্লেতে যৌথভাবে সর্বনিম্ন স্কোর এটি। এর আগে ২০১০ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া এবং ২০১৪ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে পাওয়ার প্লে শেষে ২৭ রানই তুলেছিল বাংলাদেশ।
১২ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারানোর ধাক্কা কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক। কিন্তু সেই চেষ্টাও সফল হয়নি। ড্রিংকস বিরতির পরই মুশফিককে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন লিয়াম লিভিংস্টোন। ১১তম ওভারের চতুর্থ বলে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ব্যর্থ হন মুশফিক। বল গিয়ে আঘাত হানে মুশফিকের প্যাডে। তবে শুরুতে অবশ্য ইংল্যান্ডের এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার নিতিন মেনন অবশ্য। রিভিউ নিয়ে সফল হয় ইংল্যান্ড।
৩০ বলে তিন চারে ২৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন মুশফিকও। ৬৩ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ। দশ রানের ব্যবধানে রিয়াদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটের ফাঁদে পড়ে ক্রিজ ছাড়েন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ইনিংসের ১৩তম ওভারের চতুর্থ বলে আন আউট হওয়ার আগে ৬ বলে ৫ রান করেন আফিফ।
ব্যাটিং ব্যার্থতার দিনে হাসেনি ইনিংসের শুরু থেকে ধুঁকতে থাকা মাহমুদউল্লাহর ব্যাটও। ১৫তম ওভারে লিভিংস্টোনের পঞ্চম বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দেওয়ার আগে ২৪ বলে ১ চারে ১৯ রান করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ১৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ৮৩ রান।
১০ বলে ১১ রান করে থামেন শেখ মাহেদি হাসান। এরপর ১৯তম ওভারে আদিল রশিদের ওপর চড়াও হন নাসুম আহমেদ। এই ওভার থেকে ১৭ রান পায় বাংলাদেশ। এর মধ্যে ২ ছয় ও এক চারে ১৬ রানই আদায় করেন নাসুম।
শেষ পর্যন্ত ৯ বলে এক চার ও দুই ছক্কায় ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। এছাড়া ইনিংসের শেষ ওভারের পঞ্চম বলে আউট হওয়ার আগে ১৮ বলে ১৬ রান করেন নুরুল হাসান সোহান। তবে পুরো ইনিংসজুড়ে কোনো বাউন্ডারির দেখা পাননি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান।