প্রথম ইনিংসে বড় ধরনের ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু চট্টগ্রাম টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৫১৩ রান। ওপেনারদের দারুণ প্রতিরোধের পরেও বড় ব্যবধানেই হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
রোববার ব্যাট হাতে দিন শুরু করেছিলেন অপরাজিত থেকে চতুর্থ দিন শেষ করা সাকিব, মিরাজ। ব্যক্তিগত ১৩ রানে মোহাম্মদ সিরাজের বলে কাভার ড্রাইভ খেলতে গিয়ে মিরাজ আউট হলেও পরের ওভারেই সাকিব আল হাসান তুলে নেন ক্যারিয়ারের ৩০ তম ফিফটি। সাকিবের ব্যাটিংয়ে জয়ের আশা জাগলেও ৮৪ রানে আউট হয়ে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলে বিদায় নেন তিনি।
চতুর্থ দিনের শুরুটা বেশ ভালো করেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয় সেশন থেকে শেষ সেশন পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে গেছে টাইগাররা। এদিন সাকিব ৪০ এবং মিরাজ ৯ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন।
সাগরিকার টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৪০৪ রান করেছিল ভারত। জবাবে বাংলাদেশ সংগ্রহ করেছিল প্রথম ইনিংসে মোটে ১৫০ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশকে ফলো অনে না ফেলে আবারও ব্যাট হাতে নামে ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে লোকেশ রাহুলের দল সংগ্রহ করে ২৫৮ রান। ফলে সাগরিকা টেস্ট জিততে বাংলাদেশের লক্ষ্য মাত্রা গিয়ে দাঁড়ায় ৫১৩।
চট্টগ্রাম টেস্টে শেষদিনে ম্যাচ জিততে বাংলাদেশের দরকার ছিল ২৪১ রান, হাতে ৪ উইকেট। এমন দিনের শুরুতেই মিরাজের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত ১৩ রান করে মোহাম্মদ সিরাজের বলে কাভার ড্রাইভ খেলতে গিয়ে আউট হন এই অলরাউন্ডার। কিছুক্ষণ লড়াই করে ফেরেন সাকিবও।
ইনিংসের ১১১তম ওভারে এসে সাকিব ফিরেছেন বোল্ড আউট হয়ে। কুলদীপ যাদবের বলে আউট হওয়ার আগে টাইগার এই অধিনায়ক করেন ৮৪ রান। সাকিব-মিরাজের বিদায়ের পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ৩২৪ রানে থামে টাইগারদের ইনিংস।
এর আগে গতকাল চতুর্থ বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক টেস্টেই সেঞ্চুরির রেকর্ড স্পর্শ করেন জাকির হাসান। গতকাল ১৭ রানে অপরাজিত থেকে দিন পার করার পর আজ ৮৩ রান যোগ করে প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পেলেন বাঁহাতি এই ওপেনার।
ওপেনার হিসেবে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক টেস্টে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটাও নিজের করে নিয়েছেন তিনি। ২১৯ বলে ১৩ চার ও ১ ছয়ে সেঞ্চুরি উদযাপন করেন জাকির।
এর আগে অভিষেক টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সেঞ্চুরি করেছেন আরও তিন ক্রিকেটার। অভিষেক টেস্টে আমিনুল ইসলাম বুলবুল, এরপর মোহাম্মদ আশরাফুল। সবশেষ এই ক্লাবে যুক্ত হয়েছিল পেসার আবুল হাসান রাজুর নাম। এবার চতুর্থ ক্রিকেটার হিসেবে এই তালিকায় ঢুকলেন জাকির।
সেঞ্চুরি করে জাকিরের ফেরার পরই ব্যাটিংয়ে ধস নামে টাইগার শিবিরে। মুশফিকুর রহিমের পর ফিরে যান নুরুল হাসান সোহানও। দলীয় ২৩৫ রানের মাথায় অক্ষর প্যাটেলের বলে বোল্ড হয়ে ২৩ রান করে ফিরে যান মুশফিক। একই ওভারে ফিরে যান নুরুল হাসান সোহানও। উইকেটকিপার এই ব্যাটার করেন মোটে ৩ রান।
দুই উইকেট হারানোর পর লিটন দাস এবং জাকির হাসানের জুটিতে বড় পার্টনারশিপের আশা দেখছিল বাংলাদেশ। তবে চা বিরতির মিনিট দশেক আগেই ঘটে বিপত্তি। কুলদীপ যাদবের বলে ব্যক্তিগত ১৯ রানে লং অনের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তারকা এই ব্যাটার। ভেঙে যায় ৪২ রানের জুটি।
চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে জাকির-শান্তর জুটিতে বেশ ভালোই এগিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে দলীয় ১২৪ রানের মাথায় উমেশ যাদবের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান শান্ত। করেন ৬৭ রান।