ইতিহাস থেকে আর মাত্র এক ধাপ দূরে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমবারের কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জয়ের সুযোগ হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশকে।
শুক্রবার সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। এদিন বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে
পাঁচ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে জয় পেলেই পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে প্রথমবারের কোনো সিরিজ জয়ের স্বাদ পাবে স্বাগতিকরা।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলমান সিরিজের আগে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে অজিদের বিপক্ষে একটা জয় পাওয়াই ছিল বাংলাদেশের জন্য পরম আকাঙ্খিত বিষয়। অথচ সেই ফরম্যাটেই মিচেল স্টার্ক-ম্যাথু ওয়েডদের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ।
গত ৩ আগস্ট অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নাসুম আহমেদের স্পিন জাদুতে ২৩ রানের জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। ১৩২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০৮ রানে গুটিয়ে যায় অজিদের ইনিংস।
টি-টোয়েন্টিতে অজিদের বিপক্ষে এটা ছিল বাংলাদেশের প্রথম জয়। এই ম্যাচের আগের চারটি ম্যাচের সবকটিতেই বাংলাদেশের সঙ্গী হয়েছিল পরাজয়।
ওই ম্যাচের মধ্য দিয়ে সব ফরম্যাটেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় স্বাদ পায় বাংলাদেশ। ২০০৫ সালে কার্ডিফে মোহাম্মদ আশরাফুলের সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে জেতে বাংলাদেশ।
ওয়ানডে জয়ের এক যুগ পর ২০১৭ সালে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অজিদের বিপক্ষে সাদা পোশাকে জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। চার বছর পর একই ভেন্যুতেই টি-টোয়েন্টিতেও জয়ের দেখা পেয়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এ নিয়ে তিন ফরম্যাটে অজিদের বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় ম্যাচেও অজি ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা নেন বাংলাদেশি বোলাররা। এদিন শেষ ৪ ওভারে মাত্র ২২ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হন অজি ব্যাটসম্যানরা। এর মধ্যে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১২১ রানে থামে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।
জবাবে আফিফ হোসেন ধ্রুব ও নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ৫ উইকেট ও ৮ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
ম্যাচ শেষে অজি অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত আমরা দ্বিতীয় ম্যাচে শেষ চার ওভারে আমাদের ব্যাটিং হতাশাজনক ছিল। আমরা ১৩০-১৪০ রান পাবার পথে ভাল অবস্থায় ছিলাম, একটি ভাল স্কোর পাবার ট্রাকে ছিলাম।’
অস্ট্রেলিয়ার এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান আরও বলেন, ‘তাদের (বাংলাদেশি) পেসাররা বেশ ভালো করেছে এবং আমরা সেখানে আরও ভাল করার চেষ্টা করবো। দুই দলের বোলাররা অসাধারণ করছে। তারা যেভাবে যাচ্ছে, তাতে আমরা খুশি। আগার আবারও ভালো করেছে। আমাদের বোলিং অবশ্য সমস্যা নয়। প্রথম ম্যাচটিতে আমাদের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা ভালো করতে করতে পারেনি। আর দ্বিতীয় ম্যাচে লোয়ার অর্ডার ভালো করেনি।’
এদিকে নিজেদের কন্ডিশনে প্রথম দুই ম্যাচে ব্যাটে-বলে সমানতালে পারফরম্যান্স করে দারুণ ফর্মে রয়েছেন বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা। প্রথম দুই ম্যাচের এমন পারফরম্যান্স ও হোম কন্ডিশনের সুবিধাই অজিদের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের জন্য বাংলাদেশ দলকে আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে।
এর মধ্যে প্রথম ম্যাচে ১৩১ রানের পুঁজি নিয়ে অজিদের বিপক্ষে চোখে চোখ রেখে বোলারদের লড়াই কিংবা দ্বিতীয় ম্যাচে ১২২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পরও আফিফ-সোহানদের সোহানদের ব্যাটিং দৃঢ়তা বাংলাদেশ দলে নিঃসন্দেহে বাড়তি আত্মবিশ্বাস সঞ্চার করবে।
টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত ১০৪ ম্যাচে খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে মাত্র ৩৬ ম্যাচে জয়ের দেখা পেয়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ৩৬ জয়ের বিপরীতে ৬৬ ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। বাকি দুই ম্যাচের ফল হয়নি।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: মোহাম্মদ নাঈম, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান, মাহেদী হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, শামীম হোসেন, নুরুল হাসান, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম।
অস্ট্রেলিয়ার সম্ভাব্য একাদশ: অ্যালেক্স ক্যারি/ বেন ম্যাকডারমট, জস ফিলিপ, মিচের মার্শ, ময়েস হেনরিকস, ম্যাথু ওয়েড, অ্যাশটন টার্নার, অ্যাশন আগার, মিচের স্টার্ক, অ্যান্ড্রু টাই, অ্যাডাম জাম্পা ও জশ হ্যাজেলউড।