প্রথমবারের মতো যুব এশিয়া কাপের শিরোপা জিতে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশের যুবারা। অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে আরব আমিরাতকে তাদের মাঠেই ১৯৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো যুব এশিয়া কাপের শিরোপা জিতলো বাংলাদেশ। ফাইনালে বাংলাদেশের দেওয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলারদের বোলিং তোপের মাত্র ৮৭ রানেই অলআউট হয়েছে আরব আমিরাত। যার ফলে ১৯৫ রানের বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
রবিবার (১৭ ডিসেম্বর)দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমি মাঠে ফাইনালে টস জিতে টাইগার যুবাদের ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আমিরাত অধিনায়ক আফজাল খান। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের।তবে এরপরেই আশিকুর রহমান শিবলীর ১২৯ রান ও চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আরিফুল ইসলামের জোড়া অর্ধশতকে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রান তুলেছে বাংলাদেশ।বাংলাদেশের দেওয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে টাইগারদের বোলারদের বোলিং তোপে ৮৭ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় আরব আমিরাত। মাত্র ১২ রানেই ওপেনিং জুটি ভাঙে তাদের।মারুফ মৃধার বলে শেখ পারভেজ জীবনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান আরইয়ান শর্মা। আউট হওয়ার আগে করেন ১৭ বলে ৯ রান।
আরইয়ান শর্মার পর আকসাত রাইকেও ফেরান মারুফ মৃধা। তার জোড়া আঘাতে ২৮ রানেই ২ উইকেট হারায় আরব আমিরাত। মারুফের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে যান আকসাত রাই। ২২ বলে মাত্র ১১ রান করে সাজঘরের পথ ধরেন তিনি।
মারুফের পর আরব আমিরাত শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন রোহানাত দৌলা বর্ষণ। বর্ষণের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তানিশ সুরি। ৭ বলে মাত্র ৬ করেন তিনি।তানিশ সুরির পর ইতহান ডিসুজাকেও ফেরান বর্ষণ। বর্ষণের বলে শেখ পারভেজ জীবনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে যান ইতহান ডিসুজা। আউট হওয়ার আগে করেন ৪ বলে মাত্র ৪ রান।
ইতহান ডিসুজার পর আয়ান আফজাল খানকে ফেরান বর্ষণ। ১২ বলে ৫ রান করা আফজাল খান বর্ষণের বলে আশিকুর রহমান শিবলীর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে পথ ধরেন প্যাভিলিযনের। তার বিদায়ে ৪৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে আরব আমিরাত।
দলের বিপদ আরও বাড়িয়ে দলীয় ৬১ রানে সাজঘরে ফিরে যান ইয়ায়িন রাই। ইকবাল হোসাইন ইমন বলে বোল্ড হয়ে ৯ বলে ৬ রান করে সাজঘরে ফিরে যান তিনি।
ইয়ায়িন রাইয়ের বিদায়ের পরেই বলেই আম্মার বাদামিকে ফেরান ইমন।ইমনের বলে জিসান আলমের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান আম্মার বাদামি।
আম্মার বাদামির বিদায়ের পর সাজঘরে ফিরে যান হার্দিক পাই ও আয়মান আহমেদ। হার্দিক পাই ২০ বলে ৪ রান ও আয়মান আহমেদ ২ বলে শূন্য রান করে পথ ধরেন সাজঘরের।
৭২ রান ৯ উইকেট যাওয়ার পর দশম উইকেট জুটিতে ওমিদ রেহমানকে নিয়ে ১০ রানের জুটি গড়েন ধ্রুব পরশার।এই ১০ রানে ভর করে ২৪ ওভারে মাত্র ৮৭ রানে অলআউট হয় আরব আমিরাত। যার ফলে বাংলাদেশ তুলে নেয় ১৯৫ রানের বিশাল জয়। বাংলাদেশের হয়ে মারুফ মৃধা ও রোহানাত দৌলা বর্ষণ ৩ টি এবং শেখ পারভেজ জীবন ও ইকবাল হোসাইন ইমন নেন ২ টি করে উইকেট।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দলীয় মাত্র ১৬ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৫ বলে ৭ রান করা জিসান আলম ওমিদ রেহমানের বলে ধ্রুব পরশার হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরে যান সাজঘরে।
১৬ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর জুটি গড়েন আশিকুর রহমান শিবলী ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। এই দুই ব্যাটারের ১২৫ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। অর্ধশতক তুলে নিয়ে ৭১ বলে ৬০ রান করে রিজওয়ান সাজঘরে ফিরে গেলে ভেঙে যায় এই জুটি।
রিজওয়ানের বিদায়ের পর আরিফুল ইসলামকে নিয়ে জুটি গড়েন শিবলী। এই জুটিতে বড় সংগ্রহের পথে এগোতে থাকে বাংলাদেশ। এর মাঝেই ফাইনালে ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি তুলে নেন আশিকুর রহমান শিবলী। ১২৯ বলে ১০০ রান করেন তিনি। আসরে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এর আগে গ্রুপপর্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচেও সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।
শিবলীর পর অর্ধমতক তুলে নেন আরিফুল।৩৯ বলে ৫০ রান করেন তিনি। তবে অর্ধশতক তুলে নেওয়ার পর নিজের ইনিংসকে আর বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। ৫০ রান করেই পথ ধরেছেন সাজঘরের।
আরিফুলের পর আহরার আমিন এবং মোহাম্মদ শিহাব দুজনেই আউট হয়েছেন দ্রুত। তবে শেষদিকে দ্রুতগতির এক কার্যকরী ইনিংস উপহার দিয়েছেন অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি। ১০ বলে ২১ রান করে দলের ইনিংসে রেখেছেন কার্যকরী ভূমিকা। তবে অবিচল ছিলেন শিবলী। নিজের ইনিংসটা টেনে নিয়েছেন ১২৯ পর্যন্ত। বাংলাদেশও তাতে পেয়েছে ২৮২ রানের পুঁজি।