প্রচ্ছদ ›› খেলা

লড়াই করেও হারলো বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক
১৯ নভেম্বর ২০২১ ১৭:৫৭:৪৮ | আপডেট: ৩ years আগে
লড়াই করেও হারলো বাংলাদেশ

ঘরের মাঠেও হাসেনি ব্যাটারদের ব্যাট। তাতে মাত্র ১২৭ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। অল্প পুঁজি নিয়েও বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে জয়ের সুবাতাস পাচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ম্যাচের শেষদিকে মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলামের খরুচে বোলিংয়ে ছিটকে যায় স্বাগতিকরা। ১২৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ৪ উইকেট হাতে রেখেই জয় তুলে নিয়েছে পাকিস্তান।

শুক্রবার মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে ১২৭ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। জবাবে চার বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সফরকারীরা। ব্যাট হাতে ১০ বলে ২১ রানে অপরাজিত ছিলেন শাদাব খান এবং ৮ বলে ১৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ নওয়াজ।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতে ব্যাট করতে আসেন বিশ্বের অন্যতম সেরা দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। তাদের এই জুটিতে বেশিদূর যেতে দেয়নি টাইগার পেসাররা। দলীয় ১৬ রানে রিজওয়ান ও ২২ রানে ফেরেন বাবর আজম। ১১ বলে ১১ রান করা রিজওয়ানকে নিজের শিকার বানান মুস্তাফিজুর রহমান। আর ১০ বলে আট রান করা বাবরকে বোল্ড করে ফেরান তাসকিন আহমেদ।

তিনে আসা হায়দার আলী কিংবা চারে আসা শোয়েব মালিক কেউই দলের প্রয়োজন মেটাতে পারেনি। দুইজনের ফেরেন শূন্যরানে। তিন বলে কোনো রান না করা হায়দারকে লেগ বিফোরে ফেরান মেহেদী। আর মালিককে দারুণ রান আউটে ফেরান সোহান।

পঞ্চম উইকেটের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন ফখর জামান ও খুশদিল শাহ। দুই জনের জুটিতে পথ ফিরে পায় পাকিস্তান। এই জুটির বিপরীতে বেশ কয়েকজন বোলারকে ব্যবহার করেও ফল পাচ্ছিলেন না মাহমুদউল্লাহ। ১৫তম ওভারে বল হাতে এসে দ্বিতীয় বলেই ৫৬ রানের এই জুটি ভাঙেন তাসকিন। ৩৬ বলে চার বাউন্ডারিতে ৩৪ রান করা ফখরকে কট বিহাইন্ডে ফেরান তিনি।

শেষ চার ওভারে ৩৮ রান প্রয়োজন ছিল সফরকারীদের। ক্রিজে ছিলেন সেট ব্যাটসম্যান খুশদিল ও নতুন ব্যাটসম্যান শাদাব খান। ১৭তম ওভারে বল করতে এসেই থিতু হয়ে বসা খুশদিলকে সাজঘরে ফেরান শরিফুল ইসলাম। কিছুটা ওয়াইড লেন্সের বল খুশদিলের ব্যাটে লেগে সোহানের গ্লাভসে জমা পড়ে। তাতেই ৩৫ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ৩৪ করে ফেরেন বাঁ হাতি এই ব্যাটার।

১৮তম ওভারে বল করতে এসে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথম দুই ওভারে তিন রান দেওয়া এই বোলার পরের দুই ওভারে দেন ২৩ রান। তার মধ্যে শেষ ওভারেই দেন ১৫ রান। তাতেই ম্যাচ পাকিস্তানের দিকে হেলে যায়। শেষ দুই ওভারে ১৬ রান প্রয়োজন ছিল পাকিস্তানের।

শরিফুলের ওভার থেকেও ১৫ রান আদায় করে নেয় পাকিস্তান। আর শেষ ওভারে প্রথম বল করতে আসা আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে দ্বিতীয় বলে ছয় হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করে সফরকারীরা। ক্রিজে থাকা শাদাব ও মোহাম্মন নওয়াজের ১৫ বলের ৩৬ রানের জুটিতে জয় নিশ্চিত করে পাকিস্তান।

এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে এসে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই সাজঘরে ফেরেন ওপেনার নাঈম শেখ। তিন বলে মাত্র এক রান করেন তিনি। কিছু সময় ক্রিজে থাকলেও বেশ অস্বস্তিতে ভুগছিলেন অভিষিক্ত সাইফ হাসান। যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন ততক্ষণ ব্যাটে বলে ঠিকমতো করতে পারেননি। ফিরে যান আট বলে মাত্র এক রান করে। পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেকটা রাঙাতে পারেননি তিনি।

দলীয় ১৫ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দলের বিপর্যয়ে সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। ১৪ বলে মাত্র সাত রান করে মোহাম্মদ ওয়াসিমের কট অ্যান্ড বোল্ড হন তিনি। চতুর্থ উইকেটের জুটিতে আফিফ হোসেনকে নিয়ে ২৫ রানের জুটি গড়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ১১ বলে মাত্র ৬ রান করে মোহাম্মদ নওয়াজের শিকার হন তিনি।

প্রথম দশ ওভারে চার উইকেট হারিয়ে মাত্র ৪০ রান তোলার পর প্রতিরোধ গড়েন আফিফ। ১১তম ওভারে নাওয়াজের কাছ থেকে দুটি ছক্কায় ১৫ রান আদায় করেন তিনি। এরপর রানের চাকা কিছু সচল থাকলেও খানিক পরই সাজঘরে ফেরেন আফিফ। ১৩তম ওভারের পঞ্চম বলে রিজওয়ানের স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হন তিনি। ৩৪ বলে দুটি করে চার ও ছক্কায় ৩৬ রান করেন তিনি।

ষষ্ঠ উইকেটের জুটিতে ২২ বলে ৩৪ রানের জুটি গড়েন নুরুল হাসান সোহান ও শেখ মেহেদী। এই যুগলের ঝড়ো রানের জুটি ভাঙেন হাসান আলী। ২২ বলে দুটি ছক্কায় ২৮ করে সাজঘরে কট বিহাইন্ডের শিকার হন সোহান। শেষের দিকে শেখ মেহেদীর ২০ বলে ৩০ রানের ইনিংসে ১২৭ রানের পুঁজি পেয়েছিল বাংলাদেশ।