আরও একবার তীরে এসে তরী ডুবল বাংলাদেশের। আরও একবার শেষ সময়ে স্বপ্ন ভাঙলো লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। নেপালের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে বিদায় নিয়েছে অস্কার ব্রুজনের দলের। অন্যদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে ড্র করে ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেছে নেপাল।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার সুযোগ হাতছানি দিচ্ছিলো বাংলাদেশের সামনে। নেপালকে হারাতে পারলেই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত হয়ে যেতো।
এমন সমীকরণের ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে অঘোষিত সেমিফাইনালের শুরুতেই গোল করে বাংলাদেশ দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন সুমন রেজা। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি বাংলাদেশের। শেষ বাঁশি বাজার মাত্র ২ মিনিট আগে ডিফেন্ডারদের ভুলে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল পরিশোধ করে নেপাল। তাতেই স্বপ্নভঙ্গের বেদনা নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
এই ড্রয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলে আগেই বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে যাওয়া নেপাল সবার আগে পৌঁছে গেল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের আসরের ফাইনালে। কারণ এই জয়ের ফলে তিন ম্যাচ থেকে নেপালের সংগ্রহ ৭ পয়েন্ট। আর সমান সংখ্যক ম্যাচ থেকে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ পয়েন্ট।
বুধবার মালদ্বীপের রাজধানী মালের জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের নবম মিনিটে বক্সের কিছুটা বাইরে থেকে অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার নেওয়া ফ্রি কিকের ক্রসের বলটি গোল বক্সের কিছুটা সামনে থাকা সুমন রেজা লাফিয়ে উঠে দর্শনীয় হেডে নেপালি জালে জড়িয়ে দিলে উৎসব শুরু হয় লাল সবুজ শিবিরে।
এরপর গোল পরিশোধের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে নেপাল। ১৪ মিনিটে চমৎকার সুযোগও পেয়ে যায় তারা। গৌতম শ্রেষ্টার পাসের বলটি দারুন পজিশনে থাকা রোহিত চাঁদ জালে জড়াতে ব্যর্থ হলে রক্ষা পায় বাংলাদেশ।
প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে ফের গোল পরিশোধের সুযোগ হাতছাড়া করে নেপাল। রোহিতের ক্রসের বলে আয়ুশ হেড করলেও সেটি মাঠের বাইরে চলে যায়। বিরতির পর প্রতিআক্রমন থেকে লিড বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল বেঙ্গল টাইগাররা। বল নিয়ে নেপালি গোলবক্সের ভেতর ঢুকে যাওয়ার পর সুমন রেজার ডান পায়ের দুর্বল শট দক্ষতার সঙ্গে প্রতিহত করেন নেপালী গোল রক্ষক।
গোল পরিশোধে মরিয়া নেপাল ফের আক্রমনে মনযোগ দেয়। ৬০ মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে দারুণ এক ভলি করেন অঞ্জন বিস্তা। তবে সেটি গোলপোস্টকে পাশ কাটিয়ে বাইরে চলে যায়। ৩ মিনিট পর গোলের সুযোগ পেয়ে যায় বাংলাদেশ। সাদের ফ্রি কিকের ক্রসে পোস্টের সামনে থাকা ইব্রাহিম হেড নিলেও সেটি ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়।
কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার মাত্র দুই মিনিট আগে পেনাল্টি থেকে গোলটি পরিশোধ করে দেয় নেপাল। ৮৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে লক্ষ্য ভেদ করেন অঞ্জন বিস্তা।
এর আগে ৭৮ মিনিটে অবশ্য লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশ দলের নির্ভরযোগ্য গোলরক্ষক জিকো। বক্সের বাইরে এসে প্রতিপক্ষের আক্রমন হাত দিয়ে রুখে দেয়ার অপরাধে বাংলাদেশ গোল রক্ষককে সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেন দায়িত্বরত উজবেকিস্তানের রেফারি আর আখরোল।