প্রচ্ছদ ›› খেলা

সিরাজের ৬ উইকেটের পর চ্যাম্পিয়ন ভারত

স্পোর্টস ডেস্ক
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:৪৫:১৯ | আপডেট: ৭ মাস আগে
সিরাজের ৬ উইকেটের পর চ্যাম্পিয়ন ভারত

এশিয়া কাপে ফাইনালে সিরাজ তাণ্ডবে বিধ্বস্ত হল শ্রীলঙ্কা। কাপের ইতিহাসে সর্বনিম্ন সংগ্রহের রেকর্ড গড়ে ৫০ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিক দল। ৫১ রানের লক্ষ্য ভারত তাড়া করেছে ১০ উইকেট ও ২৬৩ বল হাতে রেখে। ৬.১ ওভারে জিতে বল অক্ষত রাখার দিক থেকে বড় জয়ে অষ্টমবার এশিয়া সেরার শিরোপা ঘরে তুলেছে ভারত।

কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ফাইনাল মহারণেও হানা দিয়েছিল বৃষ্টি। সময়মতো টস হলেও বৃষ্টির কারণে লড়াই শুরু হতে বিলম্ব হয়েছে। খেলা গড়ালে টস জিতে ব্যাটের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখা শ্রীলঙ্কা মহাবিপদে পড়ে। ১৫.২ ওভারে ৫০ রানে থেমে যায় তাদের ইনিংস। জবাবে নেমে ঈশান কিষাণ ও শুভমন গিলের ওপেনিং জুটিতে জয়ে নোঙর ফেলে ভারত।

ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি বল হাতে রেখে জয়ের রেকর্ডে এটি ষষ্ঠ। রেকর্ডের শীর্ষস্থান ইংল্যান্ডের। ১৯৭৯ সালে ৬০ ওভারের ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে ২৭৭ বল হাতে রেখে জিতেছিল ইংল্যান্ড। ৫০ ওভারের ম্যাচে বেশি বল হাতে রেখে বড় জয়টা শ্রীলঙ্কার। ২০০১ সালে জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছিল ২৭৪ বল হাতে রেখে। রানতাড়া করতে নেমে ভারতের সবচেয়ে বড় জয় এটি। ২০০১ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ২৩১ বল ও ১০ উইকেট হাতে রেখে জিতেছিল ভারত।

শ্রীলঙ্কার দেয়া স্বল্প রান তাড়ায় এদিন ওপেনিংয়ে আসেননি রোহিত শর্মা। শুভমন ও ঈশান কিষাণ আসেন ব্যাটে। লঙ্কান বোলারদের দেখেশুনেই খেলেন দুজনে। ৬.১ ওভারে পৌঁছান জয়ের বন্দরে। গিল অপরাজিত থাকেন ১৯ বলে ২৭ রান করে, কিষাণ অপরাজিত থাকেন ১৮ বলে ২৩ রানে।

তার আগে লঙ্কানদের ইনিংসে তাণ্ডব চালিয়েছেন পেসার মোহাম্মদ সিরাজ। ক্যারিয়ারসেরা ৬ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়েছেন একাধিক। তোপদাগা বোলিংয়ে বিধ্বস্ত হয়ে থামে লঙ্কানদের ৫০ রানের ইনিংস। ওয়ানডেতে এটি দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাওয়া ইনিংস শ্রীলঙ্কার। সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে একবার ৪৩ রানে থেমেছিল লঙ্কানরা, সেটি আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে তাদের সর্বনিম্ন।

একদিনের ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানে অলআউটের ইনিংসটি অবশ্য জিম্বাবুয়ের। হারারেতে লঙ্কানদের বিপক্ষে ৩৫ রানে অলআউট হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। অন্যদিকে, এশিয়া কাপের ইতিহাসে সর্বনিম্ন সংগ্রহের রেকর্ড গড়েছে লঙ্কানদের এই ইনিংসটি। আগের সর্বনিম্ন রান ছিল বাংলাদেশের। ২০০০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮৭ রান করে থেমেছিল টিম টাইগার্স।

প্রথম ওভারে ভারতকে সফলতা এনে দেন জাসপ্রীত বুমরাহ। ওভারের তৃতীয় বলে লোকেশ রাহুলের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান কুশল পেরেরাকে। দ্বিতীয় ওভারে বলে আসেন সিরাজ। দুর্দান্ত বোলিংয়ে মেডেন আদায় করে নেন। তৃতীয় ওভারে বুমরাহ খরচ করেন মাত্র এক রান।

চতুর্থ ওভারে লঙ্কান ব্যাটাদের উপর তাণ্ডব চালান সিরাজ। ফেরান ৪ জনকে। ওভারের প্রথম বলে জাদেজার ক্যাচ বানিয়ে ফেরান পাথুম নিশাঙ্কাকে। দ্বিতীয় বলে সিরাজকে রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। পরের বলে লেগ বিফোর হন সাদিরা। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। চতুর্থ বলে ঈশান কিষাণের ক্যাচ বানিয়ে সিরাজ ফেরান চারিথ আশালাঙ্কাকে। ৮ রানে চতুর্থ ব্যাটারকে হারায় শ্রীলঙ্কা।

পঞ্চম বলে বাউন্ডারি হাঁকান ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। শেষ বলে শিকার হন সিরাজ তাণ্ডবের। লোকেশ রাহুলকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। ১২ রানে পঞ্চম উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে লঙ্কানবাহিনী।

পঞ্চম ওভার মেডেন আদায় করে নেন বুমরাহ। চাপ কাটিয়ে তোলার আগেই ষষ্ঠ ওভারে বলে এসে নিজের পঞ্চম আঘাত হানেন সিরাজ। ওভারের চতুর্থ বলে দাসুন শানাকাকে ফেরান বোল্ড করে।

সপ্তম উইকেট জুটিতে ২১ রান তোলেন কুশল মেন্ডিস ও দুনিথ ওয়েল্লাগে। ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ষষ্ঠ শিকারের দেখা পান সিরাজ। মেন্ডিস বোল্ড হয়ে ফেরেন সাজঘরে। ৩৩ রানে সপ্তম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ৩৪ বলে ১৭ রান করেন লঙ্কান উইকেটরক্ষক ব্যাটার।

পরের ওভারে ৪০ রানে অষ্টম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ১২তম ওভারের তৃতীয় বলে লোকেশ রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে হার্দিক পান্ডিয়ার শিকার হন ওয়েল্লাগে। ১৬তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ৫০ রানে লঙ্কানদের নবম ব্যাটারকে ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া। প্রমোধ মাধুশানকে ফেরান কোহলির ক্যাচ বানিয়ে। পরের বলে মাথিশা পাথিরানাকে ফিরিয়ে লঙ্কানদের ইনিংস গুটিয়ে দেন হার্দিক।

৭ ওভার বল করে ২১ রান খরচায় ৬ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ। ২.২ ওভার বল করে ৩ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া। বুমরাহ নিয়েছেন একটি উইকেট।