ফুটবল বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে আফ্রিকার প্রথম কোনো দেশ হিসেবে মরক্কো সেমিফাইনালে উঠে গেছে। পর্তুগালকে ১-০ গোলে হারিয়ে এ ইতিহাস অর্জন করেছে ওয়ালিদ রেগ্রাগুইয়ের শিষ্যরা। এর আগে ১৯৮৬ বিশ্বকাপে আফ্রিকার প্রথম দল হিসাবে নকআউটে (দ্বিতীয় রাউন্ড) উঠেছিল মরক্কো।
একই দিন রাতে কাতার বিশ্বকাপের শেষ কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচে দোহার আল বাইত স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় ফ্রান্স-ইংল্যান্ড। এই ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে গত বারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স।
শনিবার রাতে দোহার আল থুমামা স্টেডিয়ামে ফিফা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে পর্তুগালকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারায় মরক্কো। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন ইউসুফ এন-নেসিরি।
খেলার শুরুর একাদশে মাঠে নামনো হয়নি পর্তুগালের সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোকে। খেলার ৫২ মিনিটে রুবেন নেভাসের জায়গায় মাঠে নামানো হয় রোনালদোকে।
৬৫ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পায় পর্তুগাল। কিন্তু ব্রুনো ফার্নান্দেজের দুর্দান্ত শট গোলবারের সামান্য উপর দিয়ে চলে যায়। হতাশায় মুষড়ে পড়েন ব্রুনো। ৮৩ মিনিটে মরক্কোকে নিশ্চিত গোল খাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করেন মরক্কোর গোলরক্ষক আগের ম্যাচের নাত্যক বুনু। ডি বক্সের সামান্য ভেতরে থেকে হোয়াও ফেলিক্স বা পায়ের দুর্দান্ত বাকানো শট নিলে ডান দিকে ঝাপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন বুনু।
আরও পড়ুন- টাইব্রেকারে ব্রাজিলের বিদায়, ঘণ্টা বাজিয়ে সেমিতে আর্জেন্টিনা
৯০ মিনিটে ডিবক্সের ভেতর থেকে রোনালদোর ডান পায়ের জোড়ালো শট রুখে দেন বুনু। ৯২ মিনিটে মরক্কোর চেদিরা দ্বিতীয় হলুদ কার্ড পেলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় আফ্রিকান দলটি। ৯৫ মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ মিস করেন মরক্কোর আবুখলিল। পর্তুগিজ গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল দিতে পারেননি তিনি। ৯৭ মিনিটে পেপের দুর্দান্ত হেড গোলবার ঘেষে চলে গেলে গোলবঞ্চিত হয় পর্তুগাল।
ফ্রান্স গোল করেছিল, এরপর পেনাল্টি থেকে গোল করে ইংল্যান্ডকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন হ্যারি কেইন। ফ্রান্স আবারও গোল করল, ইংল্যান্ড আবারও একটা পেনাল্টি পেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবার কেইন পেনাল্টি মিস করে বসলেন। ফলে জিরুর এগিয়ে দেওয়া গোলে ২-১ ব্যবধান নিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল ফ্রান্স।
শনিবার রাতে স্তাদিও দা লুজে ‘সি’ গ্রুপের ম্যাচে স্বাগতিক পর্তুগাল ও ফ্রান্সের খেলা ছিল অনেকটা উনিশ-বিশে। বল দখলে ৫১ শতাংশ ধরে রেখে খেলেছিল পর্তুগিজরা আর ফরাসিদের দখলে ছিল ৪৯ শতাংশ। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোল শূন্যতে।
ফ্রান্সের অ্যান্থনি মার্শাল তিনটি স্পষ্ট সুযোগ মিস করেছিলেন প্রথমার্ধে। কিন্তু ৫৪ মিনিটে কোনো ভুল করেননি মিডফিল্ডার কান্তে। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক গোল তুলেই ফ্রান্সকে জেতাতে ভূমিকা রেখেছেন। আদ্রিয়ান রাবিওতের শট পর্তুগিজ গোলরক্ষক রুই পাত্রিকো প্রথমবার ঠেকিয়ে দিলেও এগিয়ে আসা কান্তে ফিরতি বলে জালে বল পাঠিয়েছেন। ২০১৮ বিশ্বকাপের পর এটা ছিল পর্তুগালের দ্বিতীয় হার।