জর্ডানের সাবেক যুবরাজ হামজা বিন হুসেইনকে কথিত অভ্যুত্থানচেষ্টার অভিযোগে ‘গৃহবন্দি’ করে রেখেছে দেশটির সরকার। নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় হামজা দাবি করেন, সরকারের সমালোচকদের ওপর দমনপীড়নের অংশ হিসেবে তাকে ‘গৃহবন্দী’ করে রাখা হয়েছে।
আজ রোববার প্রকাশিত ভিডিওবার্তায় প্রিন্স হামজা জানান, সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধাজ্ঞা এবং কারও সঙ্গে যোগাযোগ না করার নির্দেশ দিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বিন আল-হুসাইনের সমালোচনা করায় দেশটির প্রশাসনে নিয়োজিত বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে হয়রানি করা হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে সাবেক প্রিন্স হামজাকেও গৃহবন্দি করার অভিযোগ উঠেছে। প্রিন্স হামজা বিন আল-হুসাইন বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বিন আল-হুসাইনের সৎ ভাই।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে অবশ্য প্রিন্স হামজাকে গৃহবন্দী রাখার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রিন্স হামজাসহ উচ্চপদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তা সামরিক ‘অভ্যুত্থানচেষ্টার’ সঙ্গে জড়িত। এ ঘটনায় তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংস্থা জানিয়েছে, সেনাবাহিনী জর্ডান ও রাজপরিবারের সুরক্ষার জন্য প্রিন্স হামজাকে সতর্ক করেছে। আর তদন্তের স্বার্থে একজন সাবেক মন্ত্রী, রাজপরিবারের জুনিয়র সদস্য এবং অজ্ঞাত বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি দেশের উপজাতি নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত করে তাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন প্রিন্স হামজা। এ ঘটনায় দেশটির সরকারের মধ্যে অভ্যুত্থানচেষ্টার আশঙ্কা জোরালো হয়। প্রতীয়মান হয় যে, বর্তমান বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই উপজাতি নেতাদের সঙ্গে ওই বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন তিনি। তবে কোনো ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার খবর অস্বীকার করেছেন প্রিন্স হামজা।
জর্জানের মিত্র ও আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে পরিচিত সৌদি আরব এ ঘটনায় বাদশা আবদুল্লাহর প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের পক্ষ থেকেও বর্তমান সরকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করা হয়েছে।
সৌদি রয়েল কোর্ট জানিয়েছে, দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য বাদশা দ্বিতীয় আবদুল্লাহর গৃহীত সব পদক্ষেপের প্রতি রিয়াদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, বাদশাহ আবদুল্লাহ যুক্তরাষ্ট্রের একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তার প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে এবং বিষয়টি নিয়ে জর্ডানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অব্যাহত যোগাযোগ রাখছে বলেও জানান নেড প্রাইস। সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি।