তালেবান যখন গত অগাস্টে কাবুলে ক্ষমতা দখল করে, আফগানিস্তান তখন প্রায় পুরোপুরি বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বড় অংশ বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে চলতো, কিন্তু এখন সবকিছুই বদলে গেছে।
বিভিন্ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীরা গত তিন মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। ওষুধপত্র সব শেষ হওয়ার পথে বলেও সতর্ক করা হচ্ছে।
বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
গণমাধ্যমটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জন সিম্পসন কাবুলের দক্ষিণে একটি পাহাড়ি এলাকার এক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে তালেবানের বিচ্ছিন্নতার প্রভাব সাধারণ আফগানদের ওপর কতটা পড়েছে।
এদিকে, আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ দেশটির জাতীয় রেডিও ও টেলিভিশনে প্রথমবারের মতো শনিবার প্রচারিত এক বক্তব্যে বলেন, তালেবান জাতির ক্ষুধা মেটানোর প্রতিশ্রুতি দেয়নি। এ সময় তিনি জনগণকে ‘সৃষ্টিকর্তার’ কাছে খাবার চাইতে বলেন তিনি।
আফগানিস্তানের স্থানীয় গণমাধ্যম খামা নিউজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। দায়িত্বগ্রহণের পর এই প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে বক্তব্য রাখলেন তিনি।
এ সময় তিনি ক্ষমতাচ্যুত আফগান প্রধানমন্ত্রী আশরাফ গনিকে দুর্নীতি ও তহবিল তছরুপের জন্য দায়ী করেন।
জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, আশরাফ গনি প্রেসিডেন্ট প্যালেসের মধ্যে রীতিমতো একটি ব্যাংকই তৈরি করে ফেলেছিলেন।
সাধারণ তালেবান যোদ্ধারা গনির ফেলে যাওয়া প্রচুর পরিমাণ নগদ অর্থ প্রেসিডেন্ট প্যালেসে খুঁজে পেয়েছেন বলে এ সময় দাবি করেন তিনি।
চলতি বছরের ১৫ আগস্ট তালেবান ক্ষমতা দখলের পর আশরাফ গনি কাবুল থেকে পালিয়ে যান। পালানোর সময় তিনি সঙ্গে প্রচুর অর্থ নিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। অবশ্য আশরাফ গনি সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেছেন, পালানোর সময় তিনি জুতাটাও পরার সময় পাননি। অর্থ নেওয়ার প্রশ্নই উঠে না।
এ সময় তালেবানের নেতৃত্বাধীন সরকার কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন হাসান আখুন্দ।
তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই দেশটিতে মূদ্রাস্ফীতি ও বেকারত্ব বেড়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাত একেবারেই ধসে পড়েছে বলা চলে। ওয়াশিংটন কাবুলের প্রায় ১০ বিলিয়ন সম্পদ জব্দ করার পরে আর্থিক সংকট আরও বেড়ে যায়। এর পর বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আফগানিস্তানের তহবিলে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দিলে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়।