বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রণ। রোগী শনাক্ত হয়েছে বাংলাদেশেও। এর মাঝে প্রতিবেশী ভারতে ওমিক্রণের সংক্রমণ বিপজ্জনক পরিণতি ডেকে আনতে পারে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক বিশ্লেষণে উঠে এসেছে।
গণমাধ্যমটির মেহের পান্ডে এবং সৌরভ গুপ্ত দেশটিতে বর্তমান সংক্রমণের বিশেষ তথ্য বিশ্লেষণের পর বলেছেন, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের দাপটে ভারতে প্রত্যেক দিন গড়ে ৬০ হাজারের মতো মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
ভারতের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভারতে মোট করোনা রোগীর মধ্যে ২ শতাংশেরও কম বর্তমানে ওমিক্রনে আক্রান্ত। কিন্তু এনডিটিভির গবেষণা বলছে, প্রকৃত চিত্র আসলে এরচেয়ে ভয়াবহ। ভারতে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আধিপত্যশীল হয়ে ওঠায় শিগগিরই দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সংকট তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন মেহের পান্ডে এবং সৌরভ গুপ্ত।
দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যে দেশটিতে বর্তমানে ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার বলে ধারণা করা হলেও প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়ে ১০ গুণেরও বেশি। অর্থাৎ এই মুহূর্তে ভারতে ১৮ হাজার মানুষ ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রত্যেক দিন সেই সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
অনেক দেশে বর্তমানে যারা নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের প্রায় ৯০ শতাংশই ওমিক্রনে সংক্রমিত। ওমিক্রন শনাক্তের জন্য অপরিহার্য জিনোম সিকোয়েন্সিং ব্যবস্থা, পরীক্ষাগার ও ল্যাবরেটরির সংখ্যা কম হওয়ায় ভারতে ওমিক্রন রোগীর সরকারি চিত্র এখনও অনেক কম।
তবে ওমিক্রন শনাক্ত করতে সক্ষম এমন দুটি ল্যাবের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছে এনডিটিভি। সেই তথ্য বিশ্লেষণে পাওয়া ওমিক্রন রোগীর সংখ্যা সরকারিভাবে ঘোষিত সংখ্যার ভিন্ন গল্প বলছে।
এনডিটিভি বলছে, বিশেষ উদ্বেগজনক সত্য হলো ওমিক্রন সংক্রমণ ডেল্টার তুলনায় অনেক দ্রুত বাড়ছে। দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে মোট কোভিড রোগীর প্রায় ২ শতাংশের ওমিক্রন ছিল; তারপর কয়েক দিন আগে সেটি ৩০ শতাংশ হলেও এখন তা ৬০ শতাংশের কাছাকাছি। এই সময়ের মধ্যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত কমেছে এবং ওমিক্রন ভারতে আধিপত্য বিস্তারকারী ভ্যারিয়েন্টে পরিণত হয়েছে।
তবে এ সংবাদ ভারতের জন্য একদিক থেকে ভালো মনে হলেও অন্যদিক থেকে খারাপ। সুসংবাদ হলো ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রন কম গুরুতর অসুস্থতা তৈরি করে। কারণ ডেল্টায় আক্রান্ত উচ্চসংখ্যক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় এবং ওমিক্রনের তুলনায় ডেল্টায় মৃত্যুর হারও বেশি।
কিন্তু ভারতের জন্য উদ্বেগজনক খবর হলো, ওমিক্রন ডেল্টার চেয়ে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ে। নতুন এই ধরন ডেল্টার চেয়ে ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি সংক্রামক বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: এনডিটিভি।